Satchari National Park – a Bird Heaven in Habiganj

বাংলাদেশে সংরক্ষিত বনাঞ্চল গুলো বেশ কয়েক ভাগে বিভক্ত। শুরুতেই আছে কয়েকটি ইকো পার্ক, এরপরে রয়েছে জাতীয় উদ্যান, এছাড়া আছে বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য আর সংরক্ষিত বনাঞ্চল। সিলেট বিভাগের হবিগঞ্জ জেলার চুনারুঘাট এ অবস্থিত সাতছড়ি বন তেমনই একটি জাতীয় উদ্যান। রঘুনন্দন পাহাড় এর সংরক্ষিত বনাঞ্চলের একটি অংশ এটি। আয়তনে মাত্র ২৪৫ হেক্টর। অথচ প্রাণীবৈচিত্রে অনন্য। ঢাকা থেকে খুব কাছে অবস্থিত হওয়ায় পাখিপ্রেমীদের কাছেও এটি দারুন পছন্দের যায়গা। মাত্র ৪-৫ ঘন্টায়ই ঢাকা থেকে রওনা দিয়ে এখানে পৌছনো যায়। এই ছোট্ট বনে এপর্যন্ত প্রায় ২৫০+ প্রজাতির পাখির দেখা পাওয়া গেছে। এই বনে প্রাণীবৈচিত্র ভালো হবার কারন হচ্ছে এখানে প্রচুর ফলদ ও বনজ গাছ পাওয়া যায়। এছাড়া বেশ কিছু জলাশয় রয়েছে ফলে স্তন্যপায়ী প্রাণী ও পাখিদের খাবার ও পানীয়ের অভাব হয় না। বেশ কিছু বিরল ও বিপন্ন স্তন্যপায়ী, সরিসৃপ ও অন্যান্য প্রাণীকূলের আবাস এই বন।

এই জাতীয় উদ্যানে বন বিভাগের তৈরী করে দেয়া ওয়াচটাওয়ারের পাশেই অবস্থিত মান্দার গাছে বসন্তে পাখিদের মেলা বসে। শুধু এক মান্দার গাছেই প্রায় ৪০+ প্রজাতির পাখিকে খেতে আসতে দেখা গেছে। এছাড়া রয়েছে শিমুলসহ বেশ কিছু পাখিবান্ধব গাছ।

সাতছড়ির টাওয়ারের পাশে অবস্থিত মান্দার গাছে ফুল ফুটেছে

এই বনে পাওয়া যাওয়া উল্লেখযোগ্য পাখিদের মধ্যে আছে-

বেশ অনেক রকমের বুলবুলি, সাহেলী, মৌটুসী ও ফুলঝুরী, বিভিন্ন ধরনের দোয়েল ও দামা, বিভিন্ন ধরনের ছাতারে, কাস্তে-ছাতারে ও পেঙ্গা, বিভিন্ন ধরনের পেঁচা, হরবোলা, নীলমনি ও চুটকির দল। এছাড়াও রয়েছে শিকারী পাখি ও বিভিন্ন ধরনের বনমোরগ।

ঢাকা থেকে সহজেই নিজস্ব গাড়িতে, বাসে বা ট্রেনে পৌছতে পারবেন সাতছড়ি জাতীয় উদ্যান। বাসে বা ট্রেনে গেলে শায়েস্তাগঞ্জ নেমে সহজেই সিএনজিতে উদ্যানে আসা যাবে। উদ্যানের গেটের পাশেই রয়েছে স্টুডেন্ট ডর্মিটরি, এছাড়া আছে বন বিভাগের বাংলো। দুই যায়গাতেই থাকার জন্য আগে থেকে বুকিং দিয়ে আসতে হবে। উদ্যানের গেটের পাশেই গাড়ি পার্কিং, খাবার হোটেল, মসজিদ রয়েছে। ফোনের নেটওয়ার্ক তেমন একটা পাওয়া যায় না ঘন বন হওয়ায়। বনের ভেতর রয়েছে দক্ষ ইকো গাইড ও টুরিস্ট পুলিশ, চাইলে যাদের নিয়ে বনে প্রবেশ করতে পারবেন। উদ্যানের সীমানার বাইরে রয়েছে তেলিয়াপাড়া চা বাগান, সেখানেও বেড়ানোর ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগের সুযোগ রয়েছে।

ভ্রমণে অবশ্যই প্রকৃতির প্রতি সহানুভূতিশীল হোন, যেখানে সেখানে প্লাস্টিক ও আবর্জনা ফেলবেন না। উদ্যানের মধ্যে হইচই ও আগুন জ্বালাবেন না, বন্যপ্রাণীদের উত্ত্যক্ত করবেন না, সীমান্ত এলাকা তাই সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top