বাংলাদেশে চার প্রজাতির সুইচোরা ও তিন প্রজাতির নীলকন্ঠ পাওয়া যায়
নীল-দাড়ি সুইচোরা
Blue-bearded Bee-eater
Nyctyornis athertoni
আমাদের দেশের আবাসিক পাখি
বড় আকারের এই প্রজাতির সুইচোরা বাংলাদেশের আবাসিক পাখি। পাওয়া যায় সিলেট ও চট্বগ্রাম বিভাগের পাহাড়ি বনে। গারো পাহাড়েও অল্প বিস্তর দেখা যায়, এছাড়া কুমিল্লা জেলার কিছু এলাকায় মানুষের বসতির আশেপাশে দেখা মিলেছে। ঠোটের গোড়া থেকে বুকের নিম্নভাগ পর্যন্ত নামা উজ্জ্বল নীল রঙ এর পালকের কারনে এর এমন নাম। এরা পোকার বাইরে ফুলের মধুও খেয়ে থাকে। এর প্রথম ছবি তুলেছিলাম সাতছড়ি থেকে।
বিশ্বে ন্যুনতম বিপদগ্রস্থ
এদেশে কমই দেখা মেলে
সবুজ সুইচোরা
Asian Green Bee-eater
Merops orientalis
আমাদের দেশের শীতের পরিযায়ী
বাংলাদেশের সুলভ সুইচোরা, শীতে সারাদেশে সকল পরিবেশে পাওয়া যায়। এদের অন্য নাম সবুজ বাঁশপাতি। লেজের মধ্যভাগ থেকে চিকন সুই এর মত দুটি পালক থাকে যার কারনে সুইচোরা নাম। ডালের আগায় বা বিদ্যুতের তারে বসে থাকে এবং উড়ে গিয়ে পোকা ধরে আনে। একত্রে অনেকগুলো পাখি গা ঘেষে বসে উষ্ণতা উপভোগ করে। প্রথম ছবি তুলেছিলাম ঢাকার সাভার থেকে।
বিশ্বে ন্যুনতম বিপদগ্রস্থ
এদেশে সহজে দেখা মেলে
পাখিটির ডাক শুনুন
নীল-লেজ সুইচোরা
Blue-tailed Bee-eater
Merops philippinus
আমাদের দেশের গ্রীষ্মের পরিযায়ী
বাংলাদেশে সাধারনত পাহাড়ি এলাকায় সারাবছর পাওয়া যায়, গ্রীষ্মকালে সমতলে নেমে আসে এবং নদী ও বালুময় স্থানে খাড়া দেয়ালে গর্ত করে বাসা করে ও বাচ্চা তোলে। সাধারনত তাই এদেরকে নদী বা জলাশয়ের আশেপাশে দেখা যায়। লেজের উপরিভাগ সারাবছর নীলচে থাকে তবে প্রজনন মৌসুমে নীলের ঘনত্ব ও ব্যপ্তি বেড়ে যায়, লেজের আগায় মধ্যভাগে সুই রয়েছে। আকাশে উড়ে উড়ে ফড়িং, মৌমাছি ইত্যাদি পোকা ধরে খায়। প্রথম ছবি তুলেছিলাম ঢাকার কেরানিগঞ্জ থেকে।
বিশ্বে ন্যুনতম বিপদগ্রস্থ
এদেশে সহজে দেখা মেলে
পাখিটির ডাক শুনুন
খয়েরী-মাথা সুইচোরা
Chestnut-headed Bee-eater
Merops leschenaulti
আমাদের দেশের আবাসিক পাখি
আমাদের দেশের আবাসিক সুইচোরা পাখি, বেশ খাটো আকারের এবং লেজের আগা চৌকোনাকার, সুই নেই। সাধারনত আমাদের দেশের সকল বনাঞ্চলে পাওয়া যায় তবে বন ছাড়াও গাছপালা আছে এমন স্থানে সারাদেশের অনেক যায়গাতেই পাওয়া যায়, বিশেষ করে খুলনা ও রংপুর বিভাগের। অন্য এলাকায়ও কালেভদ্রে দেখা মেলে। এদের মাথার উপরিভাগ গাড় খয়েরী রঙ এর, গাছের উচু স্থানে বা বিদ্যুতের তারে বসে থাকে এবং উড়ে উড়ে গিয়ে পোকা ধরে খায়। প্রথম ছবি তুলেছিলাম জামালপুরের গারো পাহাড় এলাকা থেকে।
বিশ্বে ন্যুনতম বিপদগ্রস্থ
এদেশে মাঝেমাঝে দেখা মেলে
পাখিটির ডাক শুনুন
দেশী নীলকন্ঠ
Indian Roller
Coracias benghalensis
আমাদের দেশের আবাসিক পাখি
বাংলাদেশের সাধারনত পশ্চিমাঞ্চলে সাধারনত দেখা যায়। চোখের চারপাশে বাদামী চামড়া দেখা যায়, দেহ ও ডানা উজ্জ্বল নীল এবং গলার কাছটায় বাদামী লম্বালম্বি ডোরা দাগ রয়েছে । ইন্দোচাইনিজ নীলকন্ঠের সাথে মিলে হাইব্রিড হতে দেখা যায়। প্রথম ছবি তুলেছিলাম মেহেরপুর জেলা থেকে।
বিশ্বে ন্যুনতম বিপদগ্রস্থ
এদেশে কমই দেখা মেলে
ইন্দো-চাইনিজ নীলকন্ঠ
Indochinese Roller
Coracias affinis
আমাদের দেশের আবাসিক পাখি
এদের গায়ের নীল রঙ একটু কালচে, গলার কাছটায় ডোরা দাগ এর বদলে নীল ছোপ রয়েছে। সাধারনত আমাদের দেশের পূর্বাঞ্চলে সিলেট ও চট্বগ্রাম বিভাগে দেখা মেলে, পাহাড়ি এলাকা পছন্দ করে। তবে এরা সমতল এলাকায় শীতে চলে আসে এবং মাঝেমধ্যে দেশী নীলকণ্ঠের সাথে মিলে হাইব্রিড হতে দেখা যায়। সারাদেশেই এই হাইব্রিড জাতীয় নীলকণ্ঠের দেখা মিলছে বর্তমানে। ঢাকার হাইব্রিড পাখির ছবি অনেকবার তুলে থাকলেও খাটি ইন্দো-চাইনিজ নীলকন্ঠের ছবি তুলেছি রাঙামাটির সাজেক ভ্যালি থেকে।
বিশ্বে ন্যুনতম বিপদগ্রস্থ
এদেশে কমই দেখা মেলে
পাহাড়ী নীলকন্ঠ
Dollarbird
Eurystomus orientalis
আমাদের দেশের আবাসিক পাখি শীতের পরিযায়ী গ্রীষ্মের পরিযায়ী অনিয়মিত পাখি
আমাদের দেশের সিলেট ও চট্বগ্রাম বিভাগের বনাঞ্চলে সাধারনত পাওয়া যায় তবে শীতে এরা সমতলের দিকে বা বিভিন্ন এলাকায় পরিযায়ন করে আসে। খুব একটা দেখা যায় না। এদের ওড়ার সময় ডানায় সাদা ছোপ দেখা যায় যা ডলার সাইনের মত দেখতে এজন্য এদের এমন নাম। প্রথম ছবি তুলেছিলাম ঢাকার বাসার ছাদ থেকে একটি উড়ন্ত পাখির।