বাংলাদেশের দিবাচর শিকারী পাখিদের পরিবারে শাহীন বাদে চিল, বাজ, ঈগল, শকুন, কাপাসী, মেছো-ঈগল, শিকরে ও তিশাবাজ মিলিয়ে মোট ৪৫ প্রজাতির পাখির দেখা মিলেছে।
মাছমুরাল
Osprey
Pandion haliaetus
আমাদের দেশের শীতের পরিযায়ী
বাংলাদেশের সুলভ পরিযায়ী পরিযায়ী শিকারী পাখি। আকারে বেশ বড় এবং সাদা-কালো রঙ এর এই শিকারী পাখিটি মূলত মাছ শিকার করে। সারাবিশ্বে এই পাখিটির একটিমাত্র প্রজাতিই পাওয়া যায়। আমাদের দেশের সকল এলাকায় বড় জলাশয়ের আশেপাশে শীতে এদের দেখা যায়। মাছ ধরায় এদের জুড়ি মেলা ভার। এদের প্রথম ছবি তুলেছিলাম কক্সবাজার থেকে।
বিশ্বে ন্যুনতম বিপদগ্রস্থ
এদেশে মাঝেমাঝে দেখা মেলে
কাটুয়া চিল
Black-winged Kite
Elanus caeruleus
আমাদের দেশের আবাসিক পাখি
বাংলাদেশের তিনধরনের চিলের মধ্যে এটি সবচেয়ে ছোট। ডানার উপরিভাগ কালো, চোখ টকটকে লাল। এছাড়া সারাদেহ ধবধবে সাদা এই আবাসিক পাখিটিকে আমাদের দেশের সকল এলাকায় উন্মুক্ত প্রান্তরে পাওয়া যায়। এরা সাধারনত ছোট ইদুর ও ছুঁচো জাতীয় স্তন্যপায়ী, সরিসৃপ বা ছোট পাখি ইত্যাদি শিকার করে খেয়ে থাকে। শিকার টার্গেট করলে সেটা লক্ষ্য করে একস্থানে এরা ভেসে থেকে উড়তে থাকে, এরপর সুবিধামত হলে ঝাপ দিয়ে পড়ে শিকার ধরে ফেলে। এরপরে সাধারনত মাটিতে বসে বা কোন গাছ/কান্ডের উপরে বসে খেয়ে ফেলে। এদের প্রথম ছবি তুলেছিলাম ঢাকার সাভার থেকে।
বিশ্বে ন্যুনতম বিপদগ্রস্থ
এদেশে সহজে দেখা মেলে
পাখিটির ডাক শুনুন
মিশরীয় শকুন
Egyptian Vulture
Neophron percnopterus
আমাদের দেশের শীতের পরিযায়ী
বাংলাদেশের অত্যন্ত বিরল পরিযায়ী এই প্রজাতির শকুন। দেহ সাধারনত সাদা এবং ঠোট ও মাথা হলদে। আকারে বেশ ছোট অন্য সকল শকুনের চেয়ে, লেজ ত্রিকোনা আকৃতির। বাংলাদেশে গত একদশকের মধ্যে দুইবার এদের দেখা মিলেছে, একবার রাঙামাটির কাপ্তাই বনে, আর আরেকবার করোনাকালীন সময়ে রাজশাহী থেকে আরেকবার একটি অপ্রাপ্তবয়স্ক পাখি।
বিশ্বে বিপন্ন
এদেশে খুব কম দেখা মেলে
উদয়ী মধুবাজ
Oriental Honey-buzzard
Pernis ptilorhynchus
আমাদের দেশের শীতের পরিযায়ী
আমাদের দেশের বেশ সুলভ শিকারী পাখি, প্রায় সারাবছরই পাওয়া যায় এদের। এদের অনেকগুলো রূপ রয়েছে, প্রায় ১৮টি, আবার পুরুষ ও স্ত্রী পাখির রূপও আলাদা। আর এগুলো বিভিন্ন ঈগল ও বাজদের মত হয় ফলে মধুবাজ দেখে অনেকেই অন্য শিকারী পাখি ভেবে বসেন। সহজে এদের চেনার উপায় হল এদের চিকন ঘাড়, কবুতরের মত মাথা ও ঠোট, দুর্বল ডানা ও লেজ ইত্যাদি। এরা মৌমাছির চাক এ বসে সোজা চাকে কামড় বসায় এবং খায়। এদের এই অভ্যাসের কারনে এদের এমন নাম হয়েছে। প্রথম ছবি তুলেছিলাম ঢাকার সাভার এলাকা থেকে।
বিশ্বে ন্যুনতম বিপদগ্রস্থ
এদেশে মাঝেমাঝে দেখা মেলে
জার্ডনের বাজ
Jerdon's Baza
Aviceda jerdoni
আমাদের দেশের আবাসিক পাখি
আমাদের দেশের পাহাড়ি বনাঞ্চলের অত্যন্ত সুন্দর আবাসিক শিকারী পাখি এই জার্ডনের বাজ, মাথায় ঝুঁটি রয়েছে। সাধারনত আমাদের দেশের সিলেট ও চট্বগ্রাম বিভাগের পাহাড়ি বনে। তবে এদের একটি উপপ্রজাতি সম্ভবত পরিযায়ী, তাই ঢাকার কেরানীগঞ্জ ও সাভার থেকেই এই পাখিটিকে শীতে কয়েকবার পাওয়া গিয়েছে। আমি প্রথম ছবি তুলেছিলাম ঢাকার সাভার থেকে।
বিশ্বে ন্যুনতম বিপদগ্রস্থ
এদেশে কমই দেখা মেলে
কালো বাজ
Black Baza
Aviceda leuphotes
আমাদের দেশের আবাসিক/শীতের পরিযায়ী
এটিও আমাদের দেশের আরেক অনিন্দ্য সুন্দর শিকারী পাখি। এরা মূলত আমাদের দেশে পরিযায়ন করে আসে, তবে অল্প কিছু সংখ্যায় এদেশে প্রজননও করে বলে জানা গেছে। দেহ মূলত কালো, বুকের কাছে সাদা ডোরা আর ডানার উপরিভাগে কিছু লালচে পালক থাকে, মাথায় কালো ঝুঁটি রয়েছে। আমাদের দেশের সিলেট ও চট্বগ্রাম বিভাগ এর পাহাড়ি বনে সহ গারো পাহাড়ে এদের দেখা মেলে। এছাড়া ঢাকা ও বগুড়ায় এদের দেখা পাবার দাবী রয়েছে। প্রথম দেখা পেয়েছিলাম গারো পাহাড় থেকে।
বিশ্বে ন্যুনতম বিপদগ্রস্থ
এদেশে মাঝেমাঝে দেখা মেলে
সরু-ঠোট শকুন
Slender‑billed Vulture
Gyps tenuirostris
আমাদের দেশের শীতের পরিযায়ী
আমাদের দেশের অত্যন্ত বিরল পরিযায়ী পাখি। এদের ঠোট সরু ও লম্বা। বাংলাদেশে প্রায় দুই দশক এই প্রজাতির শকুনের দেখা পাওয়া যায়নি।
বিশ্বে মহাবিপন্ন
এদেশে খুব কম দেখা মেলে
সাদা-কোমর শকুন/বাংলা শকুন
White-rumped Vulture
Gyps bengalensis
আমাদের দেশের আবাসিক পাখি
বাংলাদেশের আবাসিক শকুন প্রজাতি এটি। কয়েক দশক আগেও সারাদেশের সর্বত্র পাওয়া যেত। তবে গবাদীপশুর চিকিৎসায় কিটোপ্রোফেন সহ কিছু ওষুধের ব্যবহার করার পরে সেই ওষুধ প্রয়োগ করা গরু মারা গেলে সেই গরু খেয়ে এই শকুন মারা পড়ে। গত কয়েক দশকে এই শকুনের সংখ্যা কমতে কমতে আজ মাত্র আড়াইশোতে ঠেকেছে আমাদের সারা দেশে। সুন্দরবন অঞ্চলে কিছু আর মৌলভিবাজারের রেমা-কালেঙ্গার জঙ্গলে বাস করে ও প্রজনন করে। এছাড়া দেশের গাইবান্ধা ও পাবনায় খুব ছোট সংখ্যক পাখি টিকে রয়েছে। এখনো এদের ছবি বা দেখা পাইনি।
বিশ্বে মহাবিপন্ন
এদেশে খুব কম দেখা মেলে
ইউরেশীয় গৃধিনী
Eurasian Griffon Vulture
Gyps fulvus
আমাদের দেশের শীতের পরিযায়ী
এটিও আমাদের দেশের অত্যন্ত বিরল পরিযায়ী শকুন। কয়েক দশকের মধ্যে সম্ভবত এদের আমাদের দেশে দেখা মেলেনি।
বিশ্বে ন্যুনতম বিপদগ্রস্থ
এদেশে খুব কম দেখা মেলে
হিমালয়ী গৃধিনী
Himalayan Griffon
Gyps himalayensis
আমাদের দেশের শীতের পরিযায়ী
বাংলাদেশের উপর দিয়ে পরিযায়ন করে শীতে হিমালয় অঞ্চল থেকে উড়ে দক্ষিণ দিকে উড়ে যায়। এসময় আমাদের দেশের অনেক স্থানেই এই প্রজাতির শকুনকে উড়ে যেতে বা কোথায় বসে বিশ্রাম নিতে দেখা যায়। এছাড়া কিছু শকুন দীর্ঘ পরিযায়নের পথে ক্লান্ত হয়ে অবতরন করতে বাধ্য হয় এবং মানুষের হাতে ধরা পড়ে। তখন খবর পেলে দেশের বন বিভাগ ও আইইউসিএন নামক সংস্থা তাদের উদ্ধার করে পুনর্বাসন করে থাকে। আমাদের দেশের দিনাজপুরের শালবনে এরকম একটি পুনর্বাসন কেন্দ্র রয়েছে। সেখানে পরিচর্যা ও খাবার খাইয়ে আবারও স্বাস্থ্যবান হলে তখন শকুনগুলোকে আবারও প্রকৃতিতে ফিরিয়ে দেয়া হয়। প্রথম দেখা পেয়েছিলাম ঢাকায় বাসার ছাদ থেকে।
বিশ্বে প্রায়-বিপদগ্রস্থ
এদেশে কমই দেখা মেলে
লাল-মাথা শকুন/রাজ শকুন
Red-headed Vulture
Sarcogyps calvus
আমাদের দেশের শীতের পরিযায়ী
অত্যন্ত বিরল প্রজাতির এই শকুন আমাদের দেশে একদা পাওয়া যেত তবে সকল ধরনের শকুনের সংখ্যা কমায় এই বিরল শকুনকে আর দেখাই যায়না বর্তমানে। সর্বশেষ দেখা গিয়েছিল প্রায় দুই দশক আগে।
বিশ্বে মহাবিপন্ন
এদেশে খুব কম দেখা মেলে
কালো শকুন
Cinereous Vulture
Aegypius monachus
আমাদের দেশের শীতের পরিযায়ী
গাড় কালো পালকবিশিষ্ট বেশ বড় আকৃতির এই শকুন আমাদের দেশের আরেক বিরল পরিযায়ী। প্রতিবছর একদুটি শকুনের খবর পাওয়া যায় এদেশে। ক্লান্ত আহত অবস্থায় ধরা পড়ে সাধারনত, এমন একটি শকুনকে গতবছর দিনাজপুরে পুনর্বাসন শেষে অবমুক্ত করা হয়েছে। এছাড়া গত মৌসুমে সুন্দরবন থেকে একটি শকুনকে দেখা পাওয়ার দাবি রয়েছে।
বিশ্বে প্রায়-বিপদগ্রস্থ
এদেশে খুব কম দেখা মেলে
তিলা নাগ-ঈগল
Crested Serpent-Eagle
Spilornis cheela
আমাদের দেশের আবাসিক পাখি
আমাদের দেশের সুলভ আবাসিক ঈগল এটি। এর অন্যান্য প্রচলিত নাম হচ্ছে খোঁপা ঈগল, তিলাজ বাজ ইত্যাদি। এরা মূলত সাপ শিকার করে খায়, এছাড়া ছোট সরিসৃপ, স্তন্যপায়ীও খেতে পারে সুবিধামত পেলে। বাংলাদেশের সকল ধরনের বনাঞ্চলে সহ উদ্যানমত যায়গায় সারাদেশেই এদের দেখা পাওয়া যায়। বড় উচু গাছে বাসা করে। গাছের ডালে বসা অবস্থায় মাঝেমধ্যে মাথার পেছনের পালক ফুলিয়ে তোলে যা দেখতে বেশ সুন্দর। এদের ডাক শুনে সহজেই এলাকায় এর উপস্থিতি টের পাওয়া যায়। এর প্রথম ছবি পেয়েছিলাম ঢাকার সাভার থেকে।
বিশ্বে ন্যুনতম বিপদগ্রস্থ
এদেশে মাঝেমাঝে দেখা মেলে
পাখিটির ডাক শুনুন
খাটো-হাটু সাপ ঈগল
Short-toed Snake-Eagle
Circaetus gallicus
আমাদের দেশের শীতের পরিযায়ী
এটি আমাদের দেশের বেশ বিরল পরিযায়ী শিকারী পাখি। চওড়া মাথা ও ভৌতিক চোখবিশিষ্ট বড় আকারের এই ছাইরঙা শিকারী পাখিটিকে আমাদের দেশের রাজশাহী ও খুলনা বিভাগে কদাচিৎ দেখা মেলে, নিয়মিত নয় মোটেও। এদেরও প্রধান খাবার সাপ। এখনো এর দেখা পাইনি।
বিশ্বে ন্যুনতম বিপদগ্রস্থ
এদেশে খুব কম দেখা মেলে
পাহাড়ী শিকরে ঈগল
Mountain Hawk-Eagle
Nisaetus nipalensis
আমাদের দেশের আবাসিক পাখি
বড় আকারের এই শিকারী ঈগল আমাদের দেশের শুধুমাত্র চট্বগ্রাম বিভাগের উচু পাহাড়ি বনে পাওয়া যায়। এখনো এর দেখা পাইনি।
বিশ্বে ন্যুনতম বিপদগ্রস্থ
এদেশে কমই দেখা মেলে
বহুরূপি শিকরে ঈগল
Changeable Hawk-Eagle
Nisaetus cirrhatus
আমাদের দেশের আবাসিক পাখি
এই প্রজাতির শিকরে ঈগলটি আমাদের দেশের আবাসিক শিকারী পাখি, প্রায় সারাদেশেই এদের দেখা মেলে। খুলনা ও বরিশাল বিভাগের বনাঞ্চলে ও গ্রামীণ বনে এদের বেশী পাওয়া যায়। এদের ডাক শুনে সহজেই এদের উপস্থিতি টের পাওয়া যায়। প্রধানত দুইটি রূপ এর দেখা মেলে আমাদের দেশে, সাদা এবং কালো। প্রথম দেখা পেয়েছিলাম ভোলার এক উপকূলীয় বনে।
বিশ্বে ন্যুনতম বিপদগ্রস্থ
এদেশে মাঝেমাঝে দেখা মেলে
পাখিটির ডাক শুনুন
লালচে-পেট শিকরে ঈগল
Rufous-bellied Hawk Eagle
Lophotriorchis kienerii
আমাদের দেশের আবাসিক পাখি
এটিও আমাদের দেশের বেশ বিরল প্রজাতির আবাসিক শিকারী ঈগল। সম্ভবত প্রথম দেখা গিয়েছিলো রাঙামাটির উচু পাহাড়ি বনে প্রায় একদশক আগে। বান্দরবন জেলায় উচু পাহাড়ি বনে বেশ নিয়মিতই দেখা মেলে। সম্প্রতি সিলেট বিভাগের সাতছড়ি বনে একটি অপ্রাপ্তবয়স্ক পাখিকে দেখা গিয়েছিলো। এখনো এর দেখা পাইনি।
বিশ্বে প্রায়-বিপদগ্রস্থ
এদেশে খুব কম দেখা মেলে
কালা ঈগল
Black Eagle
Ictinaetus malaiensis
আমাদের দেশের আবাসিক পাখি
বাংলাদেশের বেশ বড় আকারের শিকারী পাখি, আমাদের দেশের চট্বগ্রাম বিভাগের উচু পাহাড়ি বনে বেশ কম সংখ্যায় পাওয়া যায়। গোড়ালী থেকে ঠোটের গোড়া পর্যন্ত গাড় কালো রঙ, পা ও ঠোট হলুদ। লেজ ও ডানার পালকে ডোরাকাটা রয়েছে।
বিশ্বে ন্যুনতম বিপদগ্রস্থ
এদেশে খুব কম দেখা মেলে
দেশী চিত্রা ঈগল
Indian Spotted Eagle
Clanga hastata
আমাদের দেশের আবাসিক পাখি
ভারতীয় উপমহাদেশের একটি আবাসিক ঈগল হচ্ছে এটি। আমাদের দেশের প্রায় সব অঞ্চলেই মাঝেমধ্যে এদের দেখা মেলে। গাড় খয়েরী দেহের রঙ, পায়ের গোড়ালী পর্যন্ত পালকে আবৃত, দুই ঠোটের মাঝের চোয়াল প্রায় চোখের মাঝামাঝি পর্যন্ত বিস্তৃত যা গাড় হলুদ রঙ এর। ডানায় সাধারনত ৫ টি প্রাইমারি পালক বা আঙুল থাকে, ডানার পালকে ডোরাকাটা দাগ রয়েছে। এদের সংখ্যা দ্রুত কমে আসছে। সাধারনত উচু গাছের উপরে বাসা করে বাচ্চা তোলে। খোলা প্রান্তর এবং একটু পরপর মাঝারি আকারের গাছ রয়েছে এমন যায়গা এদের শিকার ধরার জন্য পছন্দ, ছোট স্তন্যপায়ী যেমন ইদুর, ছুঁচো ইত্যাদি শিকার করে খায় সাধারনত। এর প্রথম ছবি তুলেছিলাম ঢাকার উত্তরা থেকে। সারাদেশের অনেক যায়গাতেই এর দেখা পেয়েছি।
বিশ্বে সংকটাপন্ন
এদেশে কমই দেখা মেলে
বড় চিত্রা ঈগল
Greater Spotted Eagle
Clanga clanga
আমাদের দেশের শীতের পরিযায়ী
আমাদের দেশের বড় আকৃতির পরিযায়ী ঈগল এটি। দেহের রঙ কালচে খয়েরী, ঠোট ও পায়ের পাতা হলুদ। ওড়ার সময় ডানা অনেক চওড়া দেখা যায়, সাধারনত ছয়টি আঙুল থাকে, লেজ খাটো। বয়স কম থাকা অবস্থায় পালকের উপরিভাগে সাদা সাদা ছোপ থাকে, দেখতে বেশ সুন্দর লাগে। এরাও সাধারনত শুস্ক প্রান্তরের আশেপাশে শিকার করতে পছন্দ করে। উচু বা নিচু গাছে বসে লম্বা সময় নিয়ে বিশ্রাম করতে পছন্দ করে, শিকার দেখলে উড়ে গিয়ে ধরে আনে। প্রজননকালে উত্তরের দিকে চলে যায়, শীতে নিচে নেমে আসে। এর প্রথম ছবি পেয়েছিলাম ঢাকার সাভার থেকে। দেশের অনেক স্থানেই এর ছবিও পেয়েছি।
বিশ্বে সংকটাপন্ন
এদেশে কমই দেখা মেলে
পাখিটির ডাক শুনুন
তামাটে ঈগল
Tawny Eagle
Aquila rapax
আমাদের দেশের শীতের পরিযায়ী
তামাটে খয়েরী রঙ এর এই ঈগলটি আকারে দেশী চিত্রা ঈগল এর মতই, বড় চিত্রা ঈগলের মত ভারী নয়। বাংলাদেশে বহুবছর দেখা মেলেনি, তবে অনেক পুরাতন রেকর্ড রয়েছে বলে জানা যায়। এদের নাসিকার ফুটো ডিম্বাকৃতির/চ্যাপ্টা। বাংলাদেশে এরা পরিযায়ী হয়ে আসে, শীতে দেশের পশ্চিমাঞ্চলে খোলা প্রান্তরে দেখা যাবার সম্ভাবনা রয়েছে।
বিশ্বে সংকটাপন্ন
এদেশে খুব কম দেখা মেলে
বনেলির ঈগল
Bonelli's Eagle
Aquila fasciata
আমাদের দেশের শীতের পরিযায়ী
বেশ ক্ষীপ্র ও দুরন্ত এক শিকারী ঈগল হচ্ছে এই বনেলির ঈগল। এরা ছোট স্তন্যপায়ী প্রানীর সাথে সুযোগ বুঝে অন্য পাখি শিকার করে খায়, এমনকি অন্য শিকারী পাখিদেরও শিকার করে খায়। আকাশে উড়ন্ত অবস্থায় এদের ডানার আকৃতি দেখে সহজেই চেনা যায়। বাংলাদেশে বহুবছর এই পরিযায়ী ঈগলের দেখা মেলেনি।
বিশ্বে ন্যুনতম বিপদগ্রস্থ
এদেশে খুব কম দেখা মেলে
বুটপা ঈগল
Booted Eagle
Hieraaetus pennatus
আমাদের দেশের শীতের পরিযায়ী
বাংলাদেশের বেশ সুলভ পরিযায়ী ছোট আকৃতির ঈগল হচ্ছে এই বুট-পা ঈগল। আকারে ভূবন চিলের সমান বলা যায়। উড়ন্ত অবস্থায় এদের সুঠাম গঠিত ডানা এবং নিখুত লেজের আকৃতি দেখে সহজেই চেনা যায়। গাড় খয়েরী আর সাদা দুই রূপ এর বুটপা ঈগল দেখা যায় সাধারনত তবে দুই এর মাঝামাঝি আরেকটি রূপ রয়েছে এদের। এদের মাথা বেশ চওড়া, ঠোট খাটো আর ঘাড়ের দুইপাশে সাদা দুটো ছিটে রয়েছে। প্রথম এই ঈগলের দেখা পেয়েছিলাম ঢাকার কেরানীগঞ্জ এলাকা থেকে।
বিশ্বে ন্যুনতম বিপদগ্রস্থ
এদেশে মাঝেমাঝে দেখা মেলে
নেপালী ঈগল
Steppe Eagle
Aquila nipalensis
আমাদের দেশের শীতের পরিযায়ী
বড় আকারের সরু মাথা বিশিষ্ট পরিযায়ী ঈগল পাখি হচ্ছে এই নেপালী ঈগল। নেপালের হিমালয় অঞ্চলে প্রজনন করে এই পাখিটি তাই এরকম নাম। তবে শীতের সময় নিচে নেমে আসে ও চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। তখন একে বড় জলাশয়/নদীর আশেপাশে খোলা প্রান্তর ও চরাঞ্চলে দেখা পাওয়া যায়, তবে সংখ্যায় বেশি নয়। এর প্রথম দেখা পেয়েছিলাম চাঁপাইনবাবগঞ্জের পদ্মা নদীর চরে সীমান্তবর্তী এক এলাকায়।
বিশ্বে বিপন্ন
এদেশে কমই দেখা মেলে
পূবের শাহী ঈগল
Imperial Eagle
Aquila heliaca
আমাদের দেশের শীতের পরিযায়ী
বাংলাদেশে শীতের পরিযায়ী আরেকটি অনিন্দ্য সুন্দর ঈগল হচ্ছে এটি। আকারে বেশ বড়, কমবয়সে এদের গলা ও বুক জুড়ে ডোরাকাটা ধুসর পালক দেখা যায়, যা প্রাপ্তবয়স্ক হবার সাথে সাথে আস্তে আস্তে গাড় কালো আকার ধারন করে। তখন ঘাড়ের উপরিভাগ সোনালী হয়ে ওঠে। এদেরও সাধারনত বড় নদী ও জলাশয়ের ধারে ফাকা প্রান্তরে শিকার করতে দেখা যায়। চাঁপাইনবাবগঞ্জের পদ্মা নদীর চরে এক সীমান্তবর্তী এলাকায় একটি প্রাপ্তবয়স্ক পাখির দেখা পেয়েছিলাম। এই পাখিটিকে দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রতি শীতেই দেখা মেলে।
বিশ্বে সংকটাপন্ন
এদেশে খুব কম দেখা মেলে
সাদা-চোখ তিশাবাজ
White-eyed Buzzard
Butastur teesa
আমাদের দেশের আবাসিক পাখি
ছোট আকারের এই শিকারী তিশাবাজ আমাদের দেশের আবাসিক পাখি। প্রাপ্তবয়স্ক অবস্থায় এদের চোখ সাদা রঙ এর হয় বলে এদের এমন নাম। সাধারনত খোলা প্রান্তর এবং নদীর চরাঞ্চলে এদের দেখা মেলে তবে পত্রঝরা বনের আশেপাশেও রয়েছে বলে খেয়াল করেছি। প্রথম দেখা পেয়েছিলাম চাঁপাইনবাবগঞ্জের পদ্মার চরে, রাজশাহীর পদ্মার চরেও এর দেখা পেয়েছি। শেরপুরের গারো পাহাড়ে এরা নিয়মিত প্রজনন করে বলে শুনেছি।
বিশ্বে ন্যুনতম বিপদগ্রস্থ
এদেশে কমই দেখা মেলে
পাখিটির ডাক শুনুন
পশ্চিমের পানকাপাসী
Western Marsh-Harrier
Circus aeruginosus
আমাদের দেশের শীতের পরিযায়ী
সরু দেহ ও লম্বা পা বিশিষ্ঠ পেঁচার মত চওড়া মুখ এই পরিযায়ী শিকারী পাখির। নাম দেখেই বুঝতে পারছেন এরা জলমগ্ন বিল এলাকায় বিচরন করে। এরা বিল এলাকার বিভিন্ন ধরণের জলচর পাখি ও প্রাণী-সরিসৃপ শিকার করে খায়। এদের সাথে আমার একবারই মাত্র দেখা হয়েছে সেটা ভোলার তেতুলিয়া নদীর এক কুয়াশামগ্ন চরাঞ্চল থেকে। স্ত্রী ও পুরুষ পাখি দেখতে আলাদা।
বিশ্বে ন্যুনতম বিপদগ্রস্থ
এদেশে মাঝেমাঝে দেখা মেলে
পূবের পানকাপাসী
Eastern Marsh-Harrier
Circus spilonotus
আমাদের দেশের শীতের পরিযায়ী
এটি আমাদের দেশের আরেকটি শীতের পরিযায়ী শিকারী পাখি। এরাও জলমগ্ন বিল এলাকায় এবং বড় নদীর আশেপাশে বিচরন করে। ছোট আকারের পাখি, স্তন্যপায়ী ইত্যাদি শিকার করে খায়। এর দেখা প্রথম পেয়েছিলাম মৌলভিবাজারের বাইক্কা বিল থেকে। স্ত্রী পাখি ও পুরুষ পাখি দেখতে আলাদা।
বিশ্বে ন্যুনতম বিপদগ্রস্থ
এদেশে মাঝেমাঝে দেখা মেলে
মুরগী কাপাসী
Hen Harrier
Circus cyaneus
আমাদের দেশের শীতের পরিযায়ী
আমাদের দেশের এই পরিযায়ী শিকারী পাখিটি বেশ বিরল। একে সাধারনত বড় জলাশয় সংলগ্ন ঘাস ও শুকনো ঝোপঝাড় এলাকায় দেখা যায় শীতে। পদ্মা ও ব্রহ্মপুত্র নদীর অববাহিকায় সাধারনত এদের কদাচিৎ দেখা মেলে। রাজশাহী থেকে একটি স্ত্রী পাখির ছবি পেয়েছিলাম একবারই মাত্র। পুরুষ পাখিগুলোর ডানার অগ্রভাগ কালো আর দেহ ধুসর, মাথা একটু গাড় ছাই রঙা।
বিশ্বে ন্যুনতম বিপদগ্রস্থ
এদেশে কমই দেখা মেলে
ফ্যাকাসে-ধুসর কাপাসী
Pallid Harrier
Circus macrourus
আমাদের দেশের শীতের পরিযায়ী
আমাদের দেশের আরেক বিরল পরিযায়ী কাপাসী হল এই পাখিটি। রাজশাহীর পদ্মা অববাহিকায় সাধারনত খুব কম দেখা মেলে এর। পুরুষ পাখিগুলো ফ্যাকাসে ধুসর রঙ এর হয়ে থাকে, ডানার অগ্রভাগে কালো ছোপ থাকে যা চিকন হয়ে কোনাকুনি ভেতরের দিকে চলে আসে। একটি স্ত্রী পাখির ছবি তুলেছিলাম চাঁপাইনবাবগঞ্জের পদ্মা থেকে।
বিশ্বে প্রায়-বিপদগ্রস্থ
এদেশে খুব কম দেখা মেলে
পাকড়া কাপাসী
Pied Harrier
Circus melanoleucos
আমাদের দেশের শীতের পরিযায়ী
বিশ্বে ন্যুনতম বিপদগ্রস্থ
এদেশে মাঝেমাঝে দেখা মেলে
মন্টেগুর কাপাসী
Montagu's Harrier
Circus pygargus
আমাদের দেশের শীতের পরিযায়ী
আমাদের দেশের বিরলতম পরিযায়ী কাপাসী এটি। কয়েক দশক আগে দেশের মধ্যাঞ্চলের এক চরাঞ্চল থেকে একটি পাখিকে সর্বশেষ দেখা গেছিলো। এরপরে বহুদিন এর দেখা মেলেনি এই দেশে।
বিশ্বে ন্যুনতম বিপদগ্রস্থ
এদেশে খুব কম দেখা মেলে
ঝুটিয়াল গোদাশিকরে
Crested Goshawk
Accipiter trivirgatus
আমাদের দেশের আবাসিক পাখি
বাংলাদেশের উত্তর ও পূর্বের সকল বনের বাসিন্দা সুলভ আবাসিক শিকরেবাজ হচ্ছে এই পাখিটি। শক্তপোক্ত দেহের গড়ন, পা শক্তিশালী এবং কোমরের দুপাশে সাদা পালক রয়েছে যাতে সহজেই একে চেনা যায়। এর প্রথম ছবি পেয়েছিলাম হবিগঞ্জের সাতছড়ি বন থেকে।
বিশ্বে ন্যুনতম বিপদগ্রস্থ
এদেশে মাঝেমাঝে দেখা মেলে
তুর্কিবাজ/শিকরে
Shikra
Accipiter badius
আমাদের দেশের আবাসিক পাখি
আমাদের দেশের অত্যন্ত সুলভ ছোট আকারের আবাসিক শিকারী পাখি হচ্ছে এটি। সারাদেশের সকল অঞ্চলে এর দেখা মেলে, তবে আশেপাশে মাঝারী বা বড় আকারের গাছ থাকা চাই। এর প্রথম ছবি তুলেছিলাম ঢাকার সাভার থেকে।
বিশ্বে ন্যুনতম বিপদগ্রস্থ
এদেশে মাঝেমাঝে দেখা মেলে
পাখিটির ডাক শুনুন
জাপানী চড়ুইশিকরে
Japanese Sparrowhawk
Accipiter gularis
আমাদের দেশের শীতের পরিযায়ী
আমাদের দেশের অতি বিরল পরিযায়ী শিকারী পাখি এটি। কয়েক বছর আগে মৌলভিবাজারের এক বন থেকে প্রথম এর উপস্থিতির কথা জানা গিয়েছিল। পরবর্তীতে সাতছড়ি থেকে বেশ ক্যেকবার এর দেখা মিলেছে। সম্ভবত এই অঞ্চলে প্রতি বছর শীতেই এ আসে। এখনো এর দেখা পাইনি।
বিশ্বে ন্যুনতম বিপদগ্রস্থ
এদেশে খুব কম দেখা মেলে
ইউরেশীয় চড়ুইশিকরে
Eurasian Sparrowhawk
Accipiter nisus
আমাদের দেশের শীতের পরিযায়ী
আমাদের দেশের বেশ বিরল পরিযায়ী শিকরেবাজ এই পাখিটি। সারাদেশেই বিভিন্ন অঞ্চল থেকে এর দেখা মিলেছে এপর্যন্ত। দেহ আকারে বেশ সরু, পা লম্বা। এরা সাধারনত ছোট চড়ুই/প্যাসারিন জাতীয় পাখি শিকার করে খায় তাই এদের এমন নাম। এখনো এর দেখা পাইনি আমি।
বিশ্বে ন্যুনতম বিপদগ্রস্থ
এদেশে খুব কম দেখা মেলে
উত্তরের গোদাশিকরে
Northern Goshawk
Accipiter gentilis
আমাদের দেশের শীতের পরিযায়ী
এই প্রজাতির গোদাশিকরে আমাদের দেশের অত্যন্ত বিরল পরিযায়ী শিকারী পাখি। প্রতি বছর দেখা যায় না। গত কয়েক দশকে হাতেগোনা কয়েকবার এর দেখা মিলেছে। সম্প্রতি সুন্দরবন থেকে একটি সাইটিং রয়েছে। এখনো এর দেখা পাইনি।
বিশ্বে ন্যুনতম বিপদগ্রস্থ
এদেশে খুব কম দেখা মেলে
ভূবন চিল
Black Kite
Milvus migrans
আমাদের দেশের আবাসিক পাখি
ভূবন চিল আমাদের দেশের সুলভ আবাসিক পাখি। এরা মূলত সুযোগসন্ধানী শিকারী পাখি। পষা হাসমুরগীর বা অন্য পাখির বাচ্চা, পানিতে ভেসে থাকা মাছ, ফেলে দেয়া খাবারের উচ্ছিষ্ট, ময়লার ভাগাড়ে ফেলে দেয়া খাবার ইত্যাদি থেকে এরা জীবিকা নির্বাহ করে। সারাদেশেই দেখা মেলে, মানুষের বসতির আশেপাশে বেশি দেখা মেলে। দলে দলে এদেরকে উচু গাছে বা মানবসৃষ্ট স্থাপনার উপরে বসে থাকতে দেখা যায়, এরকম না পেলে ফাকা বালুকাময় স্থানে মাটিতেও বসে। ঢাকা শহরের সোহরাওয়ার্দি উদ্যান এলাকায় এবং আমিনবাজারের ভাগাড়ের আশেপাশে এদের বড় সংখ্যা রয়েছে।
ভূবন চিলের একটি উপ-প্রজাতি রয়েছে, কালো-কান ভূবন চিল, এটি আমাদের দেশে পরিযায়ন করে আসে। আকারে একটু বড়।
বিশ্বে ন্যুনতম বিপদগ্রস্থ
এদেশে সহজে দেখা মেলে
পাখিটির ডাক শুনুন
শঙ্খ চিল
Brahminy Kite
Haliastur indus
আমাদের দেশের আবাসিক পাখি
মূলত মৎস্যভোজী এই শিকারী পাখিটিকেও বেশ সহজেই সারাদেশে দেখা মেলে, এটিও আমাদের দেশের আবাসিক পাখি। প্রাপ্তবয়স্ক পাখিদের দেহ গাড় সোনালী রঙ এর আর গলা মাথা ঠোট সাদা রঙ এর হয়, লেজের আগা গোলাকার ও খাটো। অপ্রাপ্তবইয়স্ক শঙ্খ চিলের সারাদেহই বাদামী হয় তখন একে ভূবন চিলের সাথে মিলিয়ে ফেলেন অনেকে। ডানার ও লেজের আকার দেখে সহজে আলাদা করা যায় তখনো। এদের আকৃতি ভূবন চিল থেকে কিছু ছোট। প্রথম ছবি তুলেছিলাম ঢাকা থেকেই।
বিশ্বে ন্যুনতম বিপদগ্রস্থ
এদেশে সহজে দেখা মেলে
পাখিটির ডাক শুনুন
সাদা-লেজ সিন্ধু ঈগল
White-tailed Eagle
Haliaeetus albicilla
আমাদের দেশের শীতের পরিযায়ী
বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় আকারের ঈগল এটি। অতি বিরল পরিযায়ী পাখি। মূল খাবার হচ্ছে মাছ। এছাড়া ছোট স্তন্যপায়ী ও জলচর পাখিও এরা মেরে খায়। প্রাপ্তবয়স্ক হতে এদের বেশ কয়েক বছর লেগে যায়। তবে বাংলাদেশে সাধারনত অপ্রাপ্তবয়স্ক পাখিগুলোই আসে। নব্বই এর দশকে প্রথম পাওয়া গেছিলো তিস্তার এক চর থেকে, এরপরে প্রায় বিশ বছর এর দেখা মেলেনি এদেশে। ফেনীর মুহুরী প্রজেক্টে একটি পাখি আসে কয়েক বছর আগে তখন এটিকে প্রথম দেখি, সেই পাখিটি সেদিনই অসুস্থ হয়ে পড়ে এবং রেস্কিউ সেন্টারে যাবার পথে মারা পড়ে। এরপরে কয়েকবছর রংপুর এলাকার তিস্তা নদীতে দেখা মিলেছে এর, হয়তো এই এলাকায় এ নিয়মিত শীতে আসে, কারও চোখে পড়েনি এর আগে। আকাশে উড়লে এই পাখিটির বিশালতা সহজে চোখে পড়ে, ডানা খুব চওড়া, আশেপাশের সকল ঈগলকে ছোটভাই বানিয়ে ফেলে আকৃতিতে। দেহের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ন বিশাল হলুদ ঠোট রয়েছে এদের।
বিশ্বে ন্যুনতম বিপদগ্রস্থ
এদেশে খুব কম দেখা মেলে
পালাসী কুড়া ঈগল
Pallas's Fish-Eagle
Haliaeetus leucoryphus
আমাদের দেশের শীতের পরিযায়ী
আমাদের দেশের আরেক বিরল বড় আকারের মেছো ঈগল হচ্ছে এই পাখিটি। এরাও আমাদের দেশে পরিযায়ন করে আসে, তবে দারুন খবর হচ্ছে এরা আমাদের দেশের উত্তর-পূর্বের কিছু হাওড় এলাকায় প্রজনন করে আসছে বহূ বছর ধরে। এদেরও লেজ সাদা তবে লেজের আগায় বাদামী ব্যান্ড রয়েছে। এদের সংখ্যা দ্রুত কমে আসছে সারাবিশ্বে, প্রতিবছর কয়েকটি করে মারা পড়ার খবর পাওয়া যাচ্ছে আমাদের দেশে। এই পাখিটির উপরে আমাদের দেশে খুব দামী গবেষনা চলমান, যা থেকে আমরা অত্যন্ত চমকপ্রদ তথ্য পাচ্ছি নিয়মিত। উত্তর-পূর্বের হাওড় এলাকার বাইরে ফেনীর মুহুরী প্রজেক্টে, রাজশাহী অঞ্চলে এবং সুন্দরবনে এদের দেখা মেলে। সুন্দরবনেও বাসা করার নজির রয়েছে। এর সাথে প্রথম দেখা হয়েছিলো মৌল্ভিবাজারের বাইক্কা বিলে।
বিশ্বে বিপন্ন
এদেশে কমই দেখা মেলে
ধলা-পেট সিন্ধু ঈগল
White-bellied Sea-Eagle
Haliaeetus leucogaster
আমাদের দেশের আবাসিক পাখি
আমাদের দেশের আরেক বড় আকারের মেছো ঈগল হচ্ছে এই পাখিটি। আমাদের দেশের আবাসিক পাখি এরা। সুন্দরবনে সবচেয়ে বেশি দেখা মেলে, শীতে উপকূল ধরে কক্সবাজার পর্যন্ত এরা খাবারের সন্ধানে ছড়িয়ে পড়ে বলে জানা গেছে। এদের বিচরনক্ষেত্রের মধ্যে এরা সাধারনত উপকূল জুড়েই বিচরণ করে। এখনো এই পাখিটির দেখা পাইনি।
বিশ্বে ন্যুনতম বিপদগ্রস্থ
এদেশে কমই দেখা মেলে
মেটে-মাথা কুড়া ঈগল
Grey-headed Fish-Eagle
Haliaeetus ichthyaetus
আমাদের দেশের আবাসিক পাখি
আমাদের দেশের আরেক আবাসিক মেছো ঈগল হচ্ছে এই পাখিটি। আকারে খুব বড় নয়, তবে ডানা বেশ চওড়া। গাছের মাথায় বসে উচ্চস্বরে ডাক দেয় যা শুনতে বেশ লাগে। এরা সারাদেশেই বড় জলাশয়ের আশেপাশে বড় গাছ কে কেন্দ্র করে অল্প যায়গাতেই বাস করতে পারে। খাবারের খুব অভাব না পড়লে যায়গা পরিবর্তন করেনা। তবে এদের সংখ্যাও আস্তে আস্তে কমে আসছে। এদের প্রথম ছবি তুলেছিলাম ঢাকার সাভার থেকে।
বিশ্বে প্রায়-বিপদগ্রস্থ
এদেশে মাঝেমাঝে দেখা মেলে
পাখিটির ডাক শুনুন
জাপানী তিশাবাজ
Eastern Buzzard
Buteo japonicus
আমাদের দেশের শীতের পরিযায়ী
আমাদের দেশের একটি পরিযায়ী শিকারী পাখি এই জাপানি তিশাবাজ। এর সাথে Common Buzzard এর বিস্তৃতির ওভারল্যাপ রয়েছে। বাংলাদেশে পাতি তিশাবাজকেও জাপানী তিশাবাজ হিসেবে ধরা হয় কিনা তা নিয়ে আমার সন্দেহ আছে, দুইটিই আমাদের দেশে আছে কিনা এই ব্যাপারে গবেষনা হওয়া জরুরী বলে আমি মনে করি। চাপাই নবাবগঞ্জ থেকে এর ছবি পেয়েছি।
বিশ্বে ন্যুনতম বিপদগ্রস্থ
এদেশে কমই দেখা মেলে
লম্বা-পা তিশাবাজ
Long-legged Buzzard
Buteo rufinus
আমাদের দেশের শীতের পরিযায়ী
আমাদের দেশের বেশ সুলভ পরিযায়ী তিশাবাজ এই পাখিটি। দূর থেকে এর ডানা ঝাপটানোর গতি ও ভঙ্গি দেখেই সহজে একে চিনতে পারেন অভিজ্ঞ পাখিদর্শক। সাধারনত সারাদেশেই খোলা প্রান্তরে ও বড় নদীর চরাঞ্চলে শীতে এর দেখা মেলে। এরা ছোট সরিসৃপ, স্তন্যপায়ী ও সাপ ইত্যাদি ধরে খায়। ছোটখাট গাছ বা খুটি এদের বসার আদর্শ যায়গা। প্রথম ছবি তুলেছিলাম ঢাকার কেরানীগঞ্জ থেকে।