বাংলাদেশে হাঁস, রাজহাঁস ও মার্গেঞ্জার মিলিয়ে এপর্যন্ত মোট ৩৩ প্রজাতির পাখির দেখা মিলেছে।
রাজ সরালি
Fulvous Whistling-Duck
Dendrocygna bicolor
আমাদের দেশের শীতের পরিযায়ী পাখি
বাংলাদেশে দুরকমের সরালি পাওয়া যায়, এটি আকারে অপেক্ষাকৃত বড়, পরিযায়ী এবং বেশ কমই দেখা যায় এখন। আমাদের দেশে শ্রীমঙ্গলের বাইক্কা বিল ও হাইল হাওড়ে এর সবচেয়ে বড় সংখ্যাটি শীতে দেখা যায়। সিলেট বিভাগের হাওড়ে ছাড়া ঢাকার আশেপাশে অল্প সংখায় দেখা যায় ছোট সরালির ঝাঁকে। এর কোমর সাদা রঙের হয় আর গায়ের রঙ গাড় কমলাটে। এর ছবি প্রথম তুলেছিলাম জাহাঙ্গীরনগর ক্যাম্পাসে।
বিশ্বে নূন্যতম বিপদগ্রস্থ
এদেশে মাঝেমাঝে দেখা মেলে
ছোট সরালি
Lesser Whistling-Duck
Dendrocygna javanica
আমাদের দেশের আবাসিক পাখি
আমাদের দেশে শীতে বিভিন্ন বড় জলাশয়ে এই প্রজাতির শত-শত বা হাজার হাজার হাঁস একসাথে দেখা পাওয়া যায়। দেশের মানুষ শীতের পরিযায়ী হাঁস বলতে একেই বুঝে থাকে, ডাকে অতিথি পাখি নামে। অথচ এটি আমাদের দেশের সম্পুর্ণ আবাসিক হাঁস। বর্ষা মৌসুমে যখন দেশের জলাশয়গুলোতে পানি বেড়ে যায় তখন এরা ছোট ছোট দলে ও সংখ্যায় সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ে ও প্রজনন করে। এরা খেজুর জাতীয় গাছের মাথায় বাসা করে বলে এদেরকে গেছো হাঁসও বলা হয়।
বিশ্বে নূন্যতম বিপদগ্রস্থ
এদেশে সহজে দেখা মেলে
পাখিটির ডাক শুনুন
দাগি-মাথা রাজহাঁস
Bar-headed Goose
Anser indicus
আমাদের দেশের শীতের পরিযায়ী পাখি
বাংলাদেশে পাওয়া যাওয়া রাজহাসগুলোর মধ্যে এটি অনিন্দ্য সুন্দর। চোখের পেছনে দুটো দাগ রয়েছে বলে এর এমন নাম। বাংলাদেশে মোটামুটি ভালো সংখ্যায় পাওয়া যায় বড় নদীর চর ও মোহনা অঞ্চলে। রাজশাহীতে এর প্রথম ছবি তুলেছিলাম, পরে মেঘনা নদীর উপকূলীয় মোহনায় এর বড় বড় ঝাঁক দেখেছি। এরা সাইবেরীয় অঞ্চল থেকে বাংলাদেশ সহ দক্ষীণ এশিয়ায় পরিযায়ী হয়ে আসে। এভারেস্টের উপর দিয়ে এদের উড়ে আসার রেকর্ড আছে অর্থাৎ প্রায় ৩০,০০০ ফুটের বেশি উচু দিয়ে। যা এক অসাধারন ব্যাপার।
বিশ্বে নূন্যতম বিপদগ্রস্থ
এদেশে মাঝেমাঝে দেখা মেলে
মেটে রাজহাঁস
Greylag Goose
Anser anser
আমাদের দেশের শীতের পরিযায়ী পাখি
মেটে রঙ এর গোলাপি পা বিশিষ্ট এই পরিযায়ী রাজহাঁস আমাদের দেশে সবচেয়ে বড় আকৃতির। একেও সাধারনত বড় নদীর চর ও মোহনা অঞ্চলে এবং দেশের কিছু হাওড়ে পরিযায়ন করে আসতে দেখা যায়। এর প্রথম ছবি তুলি মেঘনা নদীর উপকূলীয় মহনায়। সেখানে বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে নতুন চর জাগে, তাতে গজিয়ে ওঠা কচি ঘাস এই রাজহাঁসদের পছন্দের খাবার।
বিশ্বে নূন্যতম বিপদগ্রস্থ
এদেশে কমই দেখা মেলে
বড় ধলা-কপাল রাজহাঁস
Greater White-fronted Goose
Anser albifrons
আমাদের দেশের শীতের পরিযায়ী পাখি
কমলা-পা বিশিষ্ট এই রাজহাঁস দেখতে খুব সুন্দর। এদের আকৃতি মেটে রাজহাঁসের চেয়ে সামান্য ছোট। ১৯৮০ এর দশকে ঢাকার অদূরে পদ্মা নদীর চরে এদের প্রথম দেখা যাবার খবর রেকর্ড রয়েছে। সম্প্রতি রাজশাহী বিভাগের একটি বিলে ও একটি চরে এক জোড়া পাখি দেখা গিয়েছিলো। আমি যেতে পারিনি তাই ছবিও তুলতে পারিনি।
বিশ্বে নূন্যতম বিপদগ্রস্থ
এদেশে কমই দেখা মেলে
ছোট ধলা-কপাল রাজহাঁস
Lesser White-fronted Goose
Anser erythropus
আমাদের দেশের শীতের পরিযায়ী পাখি
আকারে আরেকটু ছোট আকৃতির এই রাজহাঁসটিরও পা কমলা। বাংলাদেশে একে নিকট অতীতে একে মাত্র একবার দেখা যাবার কথা জানি। ২০১৭ সালে হাকালুকি হাওড়ে একটি পাখিকে দেখা গিয়েছিলো এবং ছবি তোলা হয়েছিলো জলচর পাখিশুমারীর সময়।
বিশ্বে সংকটাপন্ন
এদেশে খুব কম দেখা মেলে
পাতি সোনাক্ষীহাঁস
Common Goldeneye
Bucephala clangula
আমাদের দেশের শীতের পরিযায়ী পাখি
ইউরোপ থেকে পরিযায়ন করে আসা এই হাঁস অত্যন্ত সুন্দর। বাংলাদেশে বিগত কয়েক দশকে একে দেখা যাবার কথা জানা যায়না।
বিশ্বে নূন্যতম বিপদগ্রস্থ
এদেশে খুব কম দেখা মেলে
মিউ হাঁস
Smew
Mergellus albellus
আমাদের দেশের শীতের পরিযায়ী পাখি
এর বাংলা নাম জানা যায়নি। বাংলাদেশের পাখির তালিকায় এর নাম উল্লেখ করা হয়েছে।
বিশ্বে নূন্যতম বিপদগ্রস্থ
এদেশে খুব কম দেখা মেলে
নকতা হাঁস
Knob-billed Duck
Sarkidiornis melanotos
আমাদের দেশের শীতের পরিযায়ী পাখি
আফ্রিকায় প্রজনন করা এই হাঁস ছোট সংখায় আমাদের দেশে শীতে পরিযায়ন করে আসে। বড় হাওড় ও বিল এলাকায় অনিয়মিতভাবে কয়েকটিকে দেখা যায়।
বিশ্বে নূন্যতম বিপদগ্রস্থ
এদেশে কমই দেখা মেলে
খয়েরি চখাচখি
Ruddy Shelduck
Tadorna ferruginea
আমাদের দেশের শীতের পরিযায়ী পাখি
বাংলাদেশের নদীগুলোতে বড় সংখায় এই হাঁস পরিযায়ন করে আসে। সারাদেশের সকল বড় নদীতেই শীতকালে এদেরকে অল্প বেশি সংখ্যায় পরিযায়ন করে আসতে দেখা যায়, এছাড়া উপকূলীয় অঞ্চল ও হাওড় এলাকায়ও দেখা মেলে। সাধারনত জোড়ায় জোড়ায় বাঁ একসাথে অনেকগুলো পাখি থাকে। এদের প্রথম ছবি তুলেছিলাম ফেনীর মুহুরী প্রজেক্টে।
বিশ্বে নূন্যতম বিপদগ্রস্থ
এদেশে সহজে দেখা মেলে
পাখিটির ডাক শুনুন
শাহ চখা, রাজমনি হাঁস
Common Shelduck
Tadorna tadorna
আমাদের দেশের শীতের পরিযায়ী পাখি
অত্যন্ত সুন্দর দেখতে এই প্রজাতির চখাচখি আমাদের দেশের উপকূলীয় অঞ্চলের চরাঞ্চলে ও নদীর মোহনায় বেশি দেখা যায়। সেখানে এদের বড় সংখ্যা পরিযায়ন করে আসে। এছাড়া দেশের অন্যান্য অঞ্চলে বড় নদী ও হাওড়েও অল্প সংখ্যককে দেখা যায়। এদের আরেক নাম রাজমনি হাঁস, পাতি চখাচখি ইত্যাদি। এদের প্রথম ছবি তুলেছিলাম ভোলার দক্ষিণে মেঘনা নদীর মোহনায়।
বিশ্বে নূন্যতম বিপদগ্রস্থ
এদেশে মাঝেমাঝে দেখা মেলে
বালি হাঁস
Cotton Pygmy-Goose
Nettapus coromandelianus
আমাদের দেশের আবাসিক পাখি
ছোট আকারের অনিন্দ্য সুন্দর এই হাসগুলো আমাদের দেশের আবাসিক পাখি। সাধারনত বড় বিল ও হাওড় অঞ্চলে বাস করে, গাছের কোটরে বাসা করে বাচ্চা তোলে। এদের প্রায় সারাদেশেই পাওয়া যায়, শীতে এক এলাকা থেকে অন্য এলাকায় যেতে পারে। প্রথম ছবি তুলেছিলাম শ্রীমঙ্গলের বাইক্কা বিল থেকে।
বিশ্বে নূন্যতম বিপদগ্রস্থ
এদেশে মাঝেমাঝে দেখা মেলে
মান্দারিন হাঁস
Mandarin Duck
Aix galericulata
আমাদের দেশের শীতের পরিযায়ী পাখি
অত্যন্ত বিরল এই হাঁস মূলত উত্তর-পূর্ব এশিয়া বিশেষ করে চীনের দিক থেকে পরিযায়ন করে আসে দক্ষিণ ও পূর্ব এশিয়ায়। আমাদের দেশে অত্যন্ত বিরল। কয়েক দশক আগে সিলেট বিভাগের কোন এক হাওড়ে এদের দেখা গেছিলো।
বিশ্বে নূন্যতম বিপদগ্রস্থ
এদেশে খুব কম দেখা মেলে
সাদা-ডানা বাদি হাঁস
White-winged Duck
Asarcornis scutulata
আমাদের দেশের আবাসিক পাখি ছিল
এই হাসটিও বাংলাদেশে অত্যন্ত বিরল এবং কয়েক দশক ধরে এর দেখা পাওয়া যায়নি। এর আবাসস্থল একটু আলাদা, চিরসবুজ বনের মধ্যের জলাশয়ে একে পাওয়া যায়। ধারনা করা হয় বাংলাদেশের রাঙামাটির জেলার উত্তরাংশে গহীন বনে এদের এখনো থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।
বিশ্বে বিপন্ন
এদেশে আর দেখা মেলে না
বৈকাল তিলিহাঁস
Baikal Teal
Sibirionetta formosa
আমাদের দেশের শীতের পরিযায়ী পাখি
রাশিয়ার বৈকাল হ্রদ এলাকা থেকে আসে বলে এই হাসের এমন নাম, পুরুষ হাসগুলো অত্যন্ত সুন্দর দেখতে। বিরল ও বেশ ছোট আকৃতির এই পরিযায়ী হাসটিকে প্রতি বছর আমাদের দেশে হাতেগোনা কয়েকবার করে দেখা যায় মাত্র, সাধারনত বড় নদী বাঁ হাওড় অঞ্চলে। ভোলার দক্ষিণে সাগর এলাকায় একটি স্ত্রী পাখির ছবি তুলেছিলাম আমি।
বিশ্বে নূন্যতম বিপদগ্রস্থ
এদেশে খুব কম দেখা মেলে
জিরিয়া হাঁস
Garganey
Spatula querquedula
আমাদের দেশের শীতের পরিযায়ী পাখি
বেশ সুলভ এই পরিযায়ী ছোট আকৃতির হাসটিকে সারাদেশেই শীতকালীন সময়ে দেখা যায়, সাধারনত দেশী পাতি সরালি হাসের ঝাঁকে এরা থাকে। বড় নদীর বদলে এরা অগভীর পানির জলাশয় বেশি পছন্দ করে। প্রথম ছবি তুলেছিলাম শ্রীমঙ্গলের বাইক্কা বিল থেকে।
বিশ্বে নূন্যতম বিপদগ্রস্থ
এদেশে সহজে দেখা মেলে
উত্তুরে খুন্তেহাঁস
Northern Shoveler
Spatula clypeata
আমাদের দেশের শীতের পরিযায়ী পাখি
লম্বা ঠোট এবং আগার কাছটায় কোদাল এর মত আকৃতির কারনে এই হাঁসের এমন নাম। আমাদের দেশে মোটামুটি সংখ্যায় সারাদেশেই এদের পাওয়া যায় বড় নদী, জলাশয় ও হাওড়ে। প্রথম ছবি তুলেছিলাম রাজশাহীর পদ্মার চরের এক খাড়ি থেকে।
বিশ্বে নূন্যতম বিপদগ্রস্থ
এদেশে মাঝেমাঝে দেখা মেলে
পিয়াং হাঁস
Gadwall
Mareca strepera
আমাদের দেশের শীতের পরিযায়ী পাখি
বাংলাদেশে এই প্রজাতির হাঁস বেশ ভালো সংখ্যায় পরিযায়ন করে আসে। বড় নদী, হাওড় ও উপকূলীয় মোহনা সকল যায়গায়ই এদের বড় সংখ্যায় দেখা মেলে। এদের প্রথম ছবি তুলেছিলাম শ্রীমঙ্গলের বাইক্কা বিল থেকে।
বিশ্বে নূন্যতম বিপদগ্রস্থ
এদেশে সহজে দেখা মেলে
ফুলুরি হাঁস
Falcated Duck
Mareca falcata
আমাদের দেশের শীতের পরিযায়ী পাখি
বেশ দুর্লভ এই হাসটি দেখতে চমৎকার। একেও দেশের বড় নদী ও হাওড় অঞ্চলে পাওয়া যায় তবে সংখ্যায় খুব কম, সাধারনত একটি-দুটি। এর প্রথম ছবি তুলেছিলাম বাইক্কা বিল থেকে।
বিশ্বে প্রায়-বিপদগ্রস্থ
এদেশে কমই দেখা মেলে
ইউরেশীয় সিঁথিহাঁস
Eurasian Wigeon
Mareca penelope
আমাদের দেশের শীতের পরিযায়ী পাখি
খুব সুন্দর দেখতে এই হাঁসএর মাথার উপরে হলদেতে সিথির মত দাগ রয়েছে এজন্য এর এমন নাম। এদেরকে আমাদের দেশের হাওড় অঞ্চলে মোটামুটি সংখ্যায় আর উপকূলীয় অঞ্চলের চরাঞ্চলে বড় সংখ্যায় পরিযায়ন করে আসতে দেখা যায়। প্রথম ছবি তুলেছিলাম ফেনীর মুহুরী প্রজেক্ট থেকে।
বিশ্বে নূন্যতম বিপদগ্রস্থ
এদেশে মাঝেমাঝে দেখা মেলে
দেশী মেটে হাঁস
Indian Spot-billed Duck
Anas poecilorhyncha
আমাদের দেশের আবাসিক পাখি
আমাদের দেশের আরেকটি আবাসিক হাঁস হচ্ছে এই দেশী মেটে হাঁস। আকারে বেশ বড় এই হাঁস সাধারনত জোড়ায় জোড়ায় পাওয়া যায়। ঘাসবনের মধ্যে সাধারনত বাসা করে। এদের ঠোটের গোড়ায় লাল একটি স্পট এবং ঠোটের আগায় কালচে ফোটা রয়েছে। এদেরকে দেহসের উত্তরাঞ্চলের বড় নদীর চরে এবং সিলেট বিভাগের হাওড় এলাকায় ভালো পাওয়া যায়, তবে সংখ্যায় খুব বেশি নয়। প্রথম ছবি তুলেছিলাম রাজশাহীর পদ্মা নদী থেকে।
বিশ্বে নূন্যতম বিপদগ্রস্থ
এদেশে মাঝেমাঝে দেখা মেলে
নীল-শীর হাঁস
Mallard
Anas platyrhynchos
আমাদের দেশের শীতের পরিযায়ী পাখি
আমাদের গৃহপালিত পাতিহাসের মত দেখতে এই পরিযায়ী বুন হাঁস অত্যন্ত সুন্দর দেখতে। আমাদের দেশে এখন খুব বেশি সংখ্যায় পরিযায়ন করে আসেনা তবে বড় ন্দীতে অল্প বিস্তর এবং সিলেট বিভাগের হাওড় এলাকায় প্রতিবছর বেশ কয়েকটি করে দেখা যায়। এখনো এর ছবি তুলতে পারিনি।
বিশ্বে নূন্যতম বিপদগ্রস্থ
এদেশে কমই দেখা মেলে
উত্তু্রে ল্যাঞ্জাহাঁস
Northern Pintail
Anas acuta
আমাদের দেশের শীতের পরিযায়ী পাখি
বেশ সুলভ এবং বড় সংখ্যায় পরিযায়ন করে আসা আমাদের হাঁসেদের মধ্যে এটি অন্যতম। প্রথম দেখেছিলাম বাইক্কা বিলে। দেশের সকল অঞ্চলের হাওড়, বড় নদী এবং উপকূলীয় অঞ্চলে এদের বেশ ভাল সংখ্যায় দেখা যায় শীতকালে।
বিশ্বে নূন্যতম বিপদগ্রস্থ
এদেশে মাঝেমাঝে দেখা মেলে
তিলি হাঁস/পাতাড়ি হাঁস
Green-winged/Common Teal
Anas crecca
আমাদের দেশের শীতের পরিযায়ী পাখি
ছোট আকারের এই হাঁসদের ডানায় উড়লে একটি সবুজ ছোপ দেখা যায় সেই থেকে এর এমন নাম। বড় নদীর তুলনায় এরা অগভীর হাওড় এবং জলাশয়কে বেশি পছন্দ করে। সাধারনত দেশী সরালি হাঁসের ঝাকের মধ্যে এদের দেখা যায়। প্রথম দেখেছিলাম বাইক্কা বিলে। এদের অপর বাংলা নাম হচ্ছে পাতাড়ি হাঁস।
বিশ্বে নূন্যতম বিপদগ্রস্থ
এদেশে মাঝেমাঝে দেখা মেলে
লাল-ঝুটি ভুতিহাঁস
Red-crested Pochard
Netta rufina
আমাদের দেশের শীতের পরিযায়ী পাখি
এই প্রজাতির হাসটিকে আমাদের দেশের সিলেট বিভাগের হাওড়গুলিতে বড় সংখ্যায় দেখা যায়। পুরুষ হাসগুলোর মাথায় লাল ঝুঁটি রয়েছে, মাঝে মধ্যে ফুলিয়ে তোলে এজন্য এদের এমন নাম। এছাড়া মৌলভি হাঁস নামেও এদের ডাকা হয়। সিলেট বিভাগের বাইরে সারাদেশের বড় নদীগুলোতে অল্প সংখ্যায় এরা পরিযায়ন করে।
বিশ্বে নূন্যতম বিপদগ্রস্থ
এদেশে মাঝেমাঝে দেখা মেলে
পাতি ভুতিহাস
Common Pochard
Aythya ferina
আমাদের দেশের শীতের পরিযায়ী পাখি
এই প্রজাতির হাঁসগুলো সিলেট বিভাগের হাওড়গুলোতে বেশিরভাগ পাওয়া যায়, তবে অন্যান্য অঞ্চলের বিশেষ করে রাজশাহী বিভাগের বড় নদী ও জলাশয়গুলোতে মোটামুটি সংখ্যায় দেখা যায়।
বিশ্বে সংকটাপন্ন
এদেশে মাঝেমাঝে দেখা মেলে
মরচেরং ভুতিহাস
Ferruginous Duck
Aythya nyroca
আমাদের দেশের শীতের পরিযায়ী পাখি
এই প্রজাতির হাঁসগুলোর দেহ মরিচা রঙ এর তাই এমন নাম, এছাড়া পুরুষ হাঁসগুলোর চোখের রঙ সাদা হয় তাই এদের আরেক নাম White-eyed pochard। আমাদের দেশের বড় নদী ও হাওড়ে এদের পরিযায়ন করে আসতে দেখা যায়। প্রথম ছবি তুলেছিলাম ফেনীর মুহুরী প্রজেক্ট থেকে।
বিশ্বে প্রায়-বিপদগ্রস্থ
এদেশে মাঝেমাঝে দেখা মেলে
বেয়ারের ভুতিহাঁস
Baer's Pochard
Aythya baeri
আমাদের দেশের শীতের পরিযায়ী পাখি
আমাদের দেশে ও সারাবিশ্বে বর্তমানে এই হাঁস মহাবিপন্ন হিসেবে ধৃত। এদের সংখ্যা সারাবিশ্বে একহাজারের আশেপাশে চলে এসেছে। সিলেট অঞ্চলের হাওড় ও বিলগুলোতে প্রতিবছর একদুটো করে দেখা যায় এবং সম্প্রতি রাজশাহীতে দেখা গেছে। এদের মাথা কালচে নীল এবং দেহের দুই পাশে বাদামী রঙ দেখা যায়, চোখ কালো।
বিশ্বে মহাবিপন্ন
এদেশে খুব কম দেখা মেলে
টিকি হাঁস
Tufted Duck
Aythya fuligula
আমাদের দেশের শীতের পরিযায়ী পাখি
মাথার পেছনে টিকির মত ঝুলন্ত একটি পালক রয়েছে তাই এই হাঁসের এমন নাম। আমাদের দেশের বড় নদী ও বিল-জলাশয়ে মাঝারি আকারের দলে এদেরকে দেখা যায়। দেশের উত্তরাংশের নদী ও হাওড়ে বেশি দেখা যায়। প্রথম ছবি তুলেছিলাম ফেনীর মুহুরী প্রজেক্ট থেকে।
বিশ্বে নূন্যতম বিপদগ্রস্থ
এদেশে মাঝেমাঝে দেখা মেলে
বড় ভুতিহাঁস
Greater Scaup
Aythya marila
আমাদের দেশের শীতের পরিযায়ী পাখি
বাংলাদেশের অত্যন্ত বিরল এই হাঁস, মাঝে কয়েকদশক দেখা যায়নি তবে সম্প্রতি ঢাকার সাভার থেকে একটি কমবয়স্ক পাখি দেখা গেছিলো এবং বেশ কয়েকদিন ছিলো। সেখানেই এর প্রথম ছবি তুলি। প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষ পাখিগুলো খুব সুন্দর, ঠোট চওড়া, মাথা সবুজাভ এবং পিঠের কাছটা বাদামী।
বিশ্বে নূন্যতম বিপদগ্রস্থ
এদেশে খুব কম দেখা মেলে
গোলাপী-মাথা হাঁস
Pink-headed Duck
Rhodonessa caryophyllacea
আমাদের দেশের আবাসিক পাখি ছিল!!
এই প্রজাতির হাস বাংলাদেশ সহ সারাবিশ্ব থেকেই আজ বিলুপ্ত হয়ে গেছে। ভারতের বিহার অঞ্চল থেকে দক্ষীন-পুর্বে মায়ানমার থাইল্যান্ড পর্যন্ত এদেরকে পাওয়া যেত। সর্বশেষ হাসটিকে শিকার করা হয় ১৯৪০ সালের দিকে বাংলাদেশের বাইরে। বাংলাদেশের পাখির তালিকায় এই হাসটি রয়েছে, সর্বশেষ দেখা গেছিলো কবে ও কোথায় তা জানা যায়না।
বিশ্বে নূন্যতম বিপদগ্রস্থ
সারাবিশ্বে বিলুপ্ত
পাতি মার্গেঞ্জার
Common Merganser
Mergus merganser
আমাদের দেশের শীতের পরিযায়ী পাখি
সরু ঠোটবিশিষ্ঠ হাসপ্রজাতির এই পাখিটি স্রোতশীল নদী পছন্দ করে। বাংলাদেশে বেশ বিরল। পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁও, রাজশাহীতে কয়েকবার পাওয়া গেছে, সম্প্রতি সুনামগঞ্জের টাংগুয়া হাওড়ে। এদের শীতে ভারতের জলপাইগুড়ির তিস্তা ব্যারেজে বড় সংখ্যায় দেখা যায়, সেই অববাহিকায় বাংলাদেশের লালমনিরহাট অঞ্চলে তিস্তা নদীতেও মাঝেমধ্যে চলে আশে। সেখানে গিয়ে কয়েকবার বেশ কয়েকটি পাখিকে দেখা গেছে। সম্ভবত প্রতি শীতেই আসে। এখনো এর দেখা পাইনি।
বিশ্বে নূন্যতম বিপদগ্রস্থ
এদেশে কমই দেখা মেলে
লাল-বুক মার্গেঞ্জার
Red-breasted Merganser
Mergus serrator
আমাদের দেশের শীতের পরিযায়ী পাখি
বাংলাদেশে এই পাখিটিকে এপর্যন্ত মাত্র একবারই দেখা গেছে। সেটি হচ্ছে কক্সবাজারের সোনাদিয়া দ্বীপের পাশে কয়েক বছর আগে।