বাংলাদেশের বক, বগলা ও আইবিস

বাংলাদেশে বক ও কাস্তেচরা মিলিয়ে মোট ২৪ প্রজাতির পাখি পাওয়া গেছে। তার মধ্যে চার প্রজাতির বগলা, তিন প্রজাতির কাস্তেচরা, এক প্রজাতির স্পুনবিল এবং বিভিন্ন প্রজাতির ছোট-বড় বক রয়েছে।

 বাঘা বগলা

Great Bittern

Botaurus stellaris
আমাদের দেশের শীতের পরিযায়ী

বাংলাদেশে চার প্রজাতির বগলার মধ্যে এটি সবচেয়ে বিরল এবং একমাত্র পরিযায়ী। এর অন্য নাম হচ্ছে Eurasian Bittern, Tiger Bittern ইত্যাদি। গায়ের ডোরাকাটা দাগ এর কারনে এমন নাম, আকারেও অন্যগুলোর চেয়ে সবচেয়ে বড়। তবে এদের স্বভাব এতই লাজুক যে এদের খোলা স্থানে দেখা পাওয়া বা ছবি তুলতে পারা অসাধারন সৌভাগ্যের ব্যাপার। বাংলাদেশে অল্প কিছু বড় হাওড় এলাকায় ঘন নলবনের মধ্যে কালেভদ্রে একদুটো আসার কথা জানা যায়, তাও প্রতিবছর নয়। মূলত মৌলভবাজারের হাইল হাওড় এলাকায় গত এক দশকে দুইবার ধরা পড়ার কথা আমার জানা আছে। পরে সেগুলো উদ্ধার ও অবমুক্ত করা হয়েছিলো। এছাড়া ঢাকার নিকটবর্তী পদ্মার চরেও পাওয়া য্যা বলে ধারনা করা হয়। কারন পদ্মা সেতু মিউজিয়ামে একটি শিকারকৃত পাখি মমি করা আছে যা স্থানীয়ভাবে সংগ্রহকৃত। আর মানিকগঞ্জের নদী তীরবর্তী এলাকা থেকে সম্প্রতি একটি পাখির ছবি তুলেছেন একজন ভাগ্যবান বার্ডার।

বিশ্বে নূন্যতম বিপদগ্রস্থ
এদেশে খুব কম দেখা মেলে
এখনো দেখা পাইনি

হলদে বগলা

Yellow Bittern

Ixobrychus sinensis
আমাদের দেশের আবাসিক পাখি

বাংলাদেশের বগলাদের মধ্যে সবচেয়ে ছোট আকৃতির, সারাদেশেই বেশ ভাল সংখ্যায় পাওয়া যায়, আমাদের দেশের আবাসিক পাখি। বড় ও মাঝারি জলাশয় এবং নদীর আশেপাশে লম্বা ঘাস ও নলবন এদের পছন্দ। এদের চোখের আইরিস পরিপূর্ন। প্রথম ছবি তুলেছিলাম ঢাকার অদূরে ধলেশ্বরী নদীর ধারে।

বিশ্বে নূন্যতম বিপদগ্রস্থ
এদেশে সহজে দেখা মেলে
হলুদ বগলা, ঢাকা

লালচে বগলা

Cinnamon Bittern

Ixobrychus cinnamomeus
আমাদের দেশের আবাসিক পাখি

হলুদ বগলার চেয়ে কমই পাওয়া যায় এই আবাসিক পাখিটিকে তবে প্রায় সারাদেশেই আছে। সারাবছরই গায়ে লালচে আভা থাকে তবে প্রজনন মৌসুমে বেশ দৃষ্টিনন্দন লালচে রঙ দেখা যায় এদের শরীরে। চোখের আইরিস ভাঙা, অপ্রাপ্তবয়স্ক পাখির চোখ দেখে সহজেই হলুদ বগলার সাথে আলাদা করা যায়। এর প্রথম ছবি তুলেছিলাম ঢাকার অদূরে কেরানীগঞ্জ থেকে।

বিশ্বে নূন্যতম বিপদগ্রস্থ
এদেশে মাঝেমাঝে দেখা মেলে
লালচে বগলা, মৌলভিবাজার

কালা বগলা

Black Bittern

Ixobrychus flavicollis
আমাদের দেশের আবাসিক পাখি

আমাদের দেশের আবাসিক বগলাদের মধ্যে এটিকে কমই দেখতে পাওয়া যায়। গলা ও বুক জুড়ে হলদেটে ছিটে দাগ রয়েছে, এছাড়া সারাদেহ বেশ গাড় কালচে রঙ এর। বেশ লাজুক স্বভাবের হয়ে থাকে। না উড়ে যাওয়া পর্যন্ত সাধারনত চোখে পড়ে না। এর প্রথম ছবি তুলেছিলাম কেরানীগঞ্জের এক বিল থেকে।

বিশ্বে নূন্যতম বিপদগ্রস্থ
এদেশে মাঝেমাঝে দেখা মেলে
কালো বগলা, ঢাকা

ধুপনী বক

Grey Heron

Ardea cinerea
আমাদের দেশের শীতের পরিযায়ী

ধুপনী বক বা ধুসর বক আমাদের দেশের শীতের পরিযায়ী। বড় জলাশয় ও হাওড়ের আশেপাশে দেখা যায় একদুইটি বা অনেকগুলোকে। আকারে বড় বকের চেয়ে সামান্য ছোট। এর প্রথম ছবি তুলেছিলাম ঢাকার সাভার থেকে।

বিশ্বে নূন্যতম বিপদগ্রস্থ
এদেশে সহজে দেখা মেলে
ধূসর বক, চাঁপাইনবাবগঞ্জ

সাদা-পেট বক

White‑bellied Heron

Ardea insignis
আমাদের দেশের অতিবিরল শীতের পরিযায়ী

আমাদের দেশের অতি বিরল পরিযায়ী বক এটি। এর সাধারন বিস্তৃতি হচ্ছে বাংলাদেশের উত্তর পুর্বের পাহাড়ি খরস্রোতা নদীতে। তবে আমাদের দেশের সম্ভবত হবিগঞ্জের মাধবপুর লেকে কয়েক দশক আগে দুটি পাখিকে দেখা গিয়েছিলো।

বিশ্বে মহাবিপন্ন
এদেশে আর দেখা মেলে না
এখনো দেখা পাইনি

গোদা বক

Goliath Heron

Ardea goliath
আমাদের দেশের শীতের পরিযায়ী

আমাদের দেশের বকেদের মধ্যে এটিই সবচেয়ে বড় আকারের। এটিও অতি বিরল এবং শীতের পরিযায়ী। ঢাকার মিরপুর থেকে একটি পাখিকে উড়ে যেতে দেখা গিয়েছিলো বেশ কয়েক দশক আগে। এরপরে বহুবছর এর দেখা নেই। দেখতে অনেকটা বেগুনি বকের মতই তবে ঠোট ও গলা আরও অনেক শক্ত গড়নের হয় এদের আর আকারেও বড়। বাংলাদেশের নিকটবর্তী ভারতের সুন্দরবন অংশে বিগত কয়েকবছরে একাধিকভার দেখা গেছে। আমাদের সুন্দরবনেও হয়তো পাওয়া যেতে পারে।

বিশ্বে নূন্যতম বিপদগ্রস্থ
এদেশে খুব কম দেখা মেলে
এখনো দেখা পাইনি

বেগুনী বক

Purple Heron

Ardea purpurea
আমাদের দেশের শীতের পরিযায়ী

বেশ বড় আকারের লম্বা গলা ও ঠোটবিশিষ্ট এই পরিযায়ী বক আমাদের দেশের প্রায় সকল অঞ্চলেই বড় জলাশয়ের আশেপাশে এক বা একাধিক সংখ্যায় দেখা মেলে। এদের ডানার ব্যাপ্তি বেশ চওড়া। প্রাপ্তবয়স্ক পাখিগুলোর দেহে অপুর্ব রঙ এর মিশেল চোখে পড়ে। এর প্রথম ছবি তুলেছিলাম ঢাকার অদূরে তুরাগ নদী থেকে।

বিশ্বে নূন্যতম বিপদগ্রস্থ
এদেশে মাঝেমাঝে দেখা মেলে
বেগুনী বক, ফেনী

বড় বক

Great Egret

Ardea alba
আমাদের দেশের আবাসিক পাখি

আমাদের দেশের আবাসিক বকেদের মধ্যে সবচেয়ে বড় এটি। ধবধবে সাদা দেহ, বাহারি বড় হলুদ ঠোট এবং লম্বা কালো পায় এদের বেশ মানায়। প্রজননকালে এদের গলার আশেপাশে আলগা পালক গজায় যা ফুলিয়ে তুললে দারুন লাগে, ঠোটের গোড়া হলুদ থেকে সবুজ হয়ে ওঠে। এদের লম্এবা গলার মাঝামাঝি একটা তীক্ষ্ণ বাক থাকে আর চোয়ালের শেষপ্রান্ত সাধারনত চোখ ছাড়িয়ে পেছনে পর্যন্ত চলে যায়। এর প্রথম ছবি তুলেছিলাম ঢাকার সাভার থেকে।

বিশ্বে নূন্যতম বিপদগ্রস্থ
এদেশে সহজে দেখা মেলে
বড় বক, ঢাকা

মাঝলা বক

Intermediate Egret

Ardea intermedia
আমাদের দেশের আবাসিক পাখি

বড় বকের চেয়ে আকারে প্রায় অর্ধেক এই মাঝলা বক। একে বেশ কমই পাওয়া যায় অন্য বকের তুলনায়। তবে বড় হাওড় এলাকায় উল্লেখযোগ্য হারে চোখে পড়ে এদের। এদের গলা খুব বেশি লম্বা নয়, ঠোটও অপেক্ষাকৃত ছোট আর সাধারনত ঠোটের আগায় কালো হয়ে থাকে। দুই ঠোটের মাঝের চেরা এদের চোখের আগেই শেষ হয়ে থাকে। বকেদের মিশ্র ঝাঁকে এদের সহজেই চোখে পড়ে। প্রথম ছবি তুলেছিলাম জামালপুর থেকে।

বিশ্বে নূন্যতম বিপদগ্রস্থ
এদেশে মাঝেমাঝে দেখা মেলে
মাঝলা বক, ফেনী

ছোট বক

Little Egret

Egretta garzetta
আমাদের দেশের আবাসিক পাখি

মাঝলা বকের চেয়েও সামান্য ছোট এই ছোট বক। এদের ঠোটের রঙ সারাবছর কালো, আর কালো পায়ের সাথে পায়ের পাতাদুটো হলুদ, মাথার পেছনদিকে একটি আলগা পালক দেখা যায় যা টিকলির । যা দেখে সহজেই এদের চেনা যায়। সারাদেশেই সকল ধরণের জলাশয়ে এদের দেখা মেলে, বেশ সুলভ পাখি। প্রথম ছবি তুলেছিলাম সম্ভবত ঢাকার সাভার থেকে।

বিশ্বে নূন্যতম বিপদগ্রস্থ
এদেশে সহজে দেখা মেলে
ছোট বক, ঢাকা

পশ্চিমের শিলাবক

Western Reef Egret

Egretta gularis
আমাদের দেশের শীতের পরিযায়ী

আমাদের দেশের অত্যন্ত বিরল পরিযায়ী বক হচ্ছে এই পাখিটি। দেশের সিলেট অঞ্চল থেকে একটি অনেক পুরাতন দেখা পাবার দাবী ছিলো। সম্প্রতি কক্সবাজার জেলা থেকে একটি পাখির ছবি তোলা হয়েছে, যার ফলে এটি আমাদের দেশের নতুন বক হিসেবে যোগ হলো। এদের গলার কাছে সাদা ছোপ থাকে। এদের নীলচে রূপ বেশি দেখা যায় তবে মাঝেমধ্যে সাদা রূপ হয়ে থাকে।

বিশ্বে নূন্যতম বিপদগ্রস্থ
এদেশে খুব কম দেখা মেলে
এখনো দেখা পাইনি

প্রশান্ত শিলাবক

Pacific Reef-Heron/Egret

Egretta sacra
আমাদের দেশের শীতের পরিযায়ী

দেশের আরেক বিরল পরিযায়ী বক হচ্ছে এটি। আকারে বেশ ছোটই, তবে দেহের তুলনায় পা বেশ খাটো। সাধারনত নীল রঙ এর রূপটিই দেখা যায়। আমাদের দেশের চট্বগ্রামের পতেঙ্গা পর্যন্ত দেখা পাওয়া যাবার দাবী রয়েছে তবে বেশ পুরাতন। তবে এটি শীতে সম্ভবত সেইন্ট মার্টিন দকীপে নিয়মিত আসে। মাঝে বেশ কয়েক বছর পাওইয়া না গেলেও সম্প্রতি সেখান থেকে পরপর কয়েক বছর দেখা মিলেছে।

বিশ্বে নূন্যতম বিপদগ্রস্থ
এদেশে কমই দেখা মেলে
এখনো দেখা পাইনি

গো বক

Cattle Egret

Bubulcus ibis
আমাদের দেশের আবাসিক পাখি

সুলভ আবাসিক একটি ছোট আকারের বক হচ্ছে এই গো বক। গবাদীপশু বিশেষ করে গরু ও মহিষের বিষ্ঠা ও দেহ থেকে পোকা খুজে খেতে পছন্দ করে তাই এদের এমন নাম। এদেরকে গরু-মহিষের আশেপাশে তাই প্রায়শুই ঝাকে ঝাকে দেখা মেলে। সাধারন সময়ে সারাদেহ সারা ও ঠোট হলুদ। প্রজনন মৌসুমে শুধুমাত্র গলা-বুক হলদেটে হয়ে যায়। এদের প্রথম ছবি তুলেছিলাম ঢাকার সাভার থেকে।

বিশ্বে নূন্যতম বিপদগ্রস্থ
এদেশে সহজে দেখা মেলে
গো বক, ঢাকা

দেশী কানিবক

Indian Pond-Heron

Ardeola grayii
আমাদের দেশের আবাসিক পাখি

আমাদের দেশের সবচেয়ে সুলভ আবাসিক বক হচ্ছে এই কানিবক। দেশের সকলস্থানে ছোট পুকুর-ডোবা হলেই এরা সেখানে অবস্থান করতে পারে। প্রজনন কালে পুরুষ বকগুল দেখতে বেশ চমৎকার হয়। স্ত্রী বক দেখতে একটু আলাদা। প্রথম ছবি তুলেছিলাম ঢাকা থেকে।

বিশ্বে নূন্যতম বিপদগ্রস্থ
এদেশে সহজে দেখা মেলে
কানিবক, ঢাকা

চীনা কানিবক

Chinese Pond-Heron

Ardeola bacchus
আমাদের দেশের শীতের পরিযায়ী

আমাদের দেশের একটি বিরল গ্রীষ্মের পরিযায়ী হচ্ছে এই কানি বক। প্রজনন কালে এদের গলা গাড় লালচে রঙ ধারন করে। এই রঙ দৃশ্যমান হওয়া ছাড়া এদেরকে দেশী কানিবকের সাথে আলাদা করা প্রায় অসম্ভব। আমাদের দেশের সিলেট ও চট্বগ্রাম অঞ্চলের কিছু যায়গা থেকে অনিয়মিত ভাবে এর দেখা মিলেছে গত এক দশকে।

বিশ্বে নূন্যতম বিপদগ্রস্থ
এদেশে খুব কম দেখা মেলে
এখনো দেখা পাইনি

সবুজ বক

Striated Heron

Butorides striata
আমাদের দেশের আবাসিক পাখি

ছোট আকারের এই বকটি বেশ সুলভ ও সারাদেশেই দেখা মেলে সারা বছর। এদের ডানায় লম্বা লম্বা ছোপ ছোপ দাগ দেখা যায় যা থেকে এদের এমন ইংরেজি নাম। এছাড়া এরা Mangrove Heron নামেও পরিচিত কারন বাদাবনে এদের বেশ ভাল সংখ্যায় দেখা যায়। তবে এরা একত্রে একদুইটি পাখি থাকে, ঝাঁক বাধতে দেখিনি কখনো।

বিশ্বে নূন্যতম বিপদগ্রস্থ
এদেশে সহজে দেখা মেলে
সবুজ বক, সুন্দরবন

নিশিবক

Black-crowned Night-Heron

Nycticorax nycticorax
আমাদের দেশের আবাসিক পাখি

কানি বকের চেয়ে আকারে প্রায় দ্বিগুন এই কালো-মাথা নিশিবক। এদের চোখ লালচে আর বেশ বড়বড়। এরা রাতে খাবারের সন্ধানে বের হয় ফলে বড় বড় চোখ সুবিধাজনক, এদের নাম নিশিবক হয়েছেও একই কারনে। তবে দিনের বেলায়ও এরা খাবার খোজে। সাধারনত ঝাঁকে ঝাঁকে থাকে, ওড়ার সময় ধীরে ধীরে ডানা ঝাপটায়। এদের প্রথম ছবি তুলেছিলাম ঢাকার সাভার এলাকা থেকে।

বিশ্বে নূন্যতম বিপদগ্রস্থ
এদেশে মাঝেমাঝে দেখা মেলে
নিশিবক, ঢাকা

সাদা-কান নিশিবক

White-eared Night-Heron

Gorsachius magnificus
আমাদের দেশের শীতের পরিযায়ী!!!

বাংলাদেশের পাখির তালিকায় নতুন যোগ হওয়া বক হচ্ছে এই পাখিটি। এদের ঠোট বেশ মোটা, গলা লম্বা ও বাঁকানো, আর চোখের ঠিক পেছনে সাদাটে ছোপ রয়েছে যা থেকে এদের এমন নাম। চোখ বড় বড় যা রাতে শিকার করতে সুবিধাজনক। এই পাখিটিকে বাংলাদেশের উত্তর পুর্বে চীনের দিকে সাধারনত পাওয়া যায় তবে সেদিকেও এটি বিরল। স্বভাবে অত্যন্ত লাজুক এবং দিনের বেলা খুব কম বেরয়। ফলে এর সম্পর্কে খুব বেশি কিছু জানাও যায়না। এর স্বাভাবিক বিস্তৃতি থেকে অনেকটাই দূরে আমাদের দেশের সুন্দরবনের দুইটি স্থান থেকে দুইটি পাখিকে পাওয়া গেছে সম্প্রতি। যা থেকে অনেকগুলো প্রশ্নের উত্থান হয়েছে। এ নিয়ে পরে কথা হবে।

বিশ্বে বিপন্ন
এদেশে খুব কম দেখা মেলে
এখনো দেখা পাইনি

মালয়ী নিশিবক

Malayan Night-Heron

Gorsachius melanolophus
আমাদের দেশের গ্রীষ্মের পরিযায়ী

আমাদের দেশের আরেকটি পরিযায়ী নিশিবক হচ্ছে এই পাখিটি। এরা প্রজনন করতে আমাদের দেশের কিছু এলাকায় এসে থাকে। বিশেষ করে সিলেট ও চট্বগ্রাম বিভাগের বিভিন্ন পাহাড়ি বনের ছড়া ও জলাশয়ের ধারে এদের দেখতে পাওয়া যায়। স্বভাবে খুব লাজুক। এছাড়া সুন্দরবনেও এদের দেখা মেলে। আমি এখনো এই পাখিটির দেখা পাইনি।

বিশ্বে নূন্যতম বিপদগ্রস্থ
এদেশে কমই দেখা মেলে
এখনো দেখা পাইনি

খয়েরী কাস্তেচরা

Glossy Ibis

Plegadis falcinellus
আমাদের দেশের শীতের পরিযায়ী

আমাদের দেশের তিন প্রজাতির কাস্তেচরার মধ্যে সবচেয়ে আকারে ছোট হচ্ছে এই পাখিটি। বেশ বিরল হলেও সাম্প্রতিক কয়েক বছরে সম্ভবত এদের সংখ্যা বাড়ছে। প্রতি বছরই দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে এদের বড় বড় ঝাকের দেখা মিলছে। গাড় খয়েরী রঙ এর শরীর এদের, রোদ পড়লে চকচক করে বলে এদের এমন নাম। আমাদের দেশে এদের প্রজনন করার খবর আমার কাছে এখনো নেই। এদের ছবি তুলেছিলাম ভোলার কাছে একটি চর থেকে।

বিশ্বে নূন্যতম বিপদগ্রস্থ
এদেশে মাঝেমাঝে দেখা মেলে
খয়েরী কাস্তেচরা, ভোলা

কালো-মাথা কাস্তেচরা

Black-headed Ibis

Threskiornis melanocephalus
আমাদের দেশের আবাসিক পাখি

আমাদের দেশের সবচেয়ে সুলভ ও আবাসিক কাস্তেচরা হচ্ছে এটি। সাধারনত বড় জলাশয়, নদী ও হাওড়ের আশেপাশে এদেরকে পাওয়া যায়। সারাদেহ সাদা, আর গলা-মাথা ঘন কালো। ওড়ার সময় ডানার নিচের অংশে গাড় লাল ছোপ দেখা যায়। বকেদের সাথে মিলে একই কলোনিতে থাকে ও বাসা করে। এর প্রথম ছবি তুলেছিলাম মৌলভীবাজারের বাইক্কা বিল থেকে।

বিশ্বে প্রায়-বিপদগ্রস্থ
এদেশে মাঝেমাঝে দেখা মেলে
কালো-মাথা কাস্তেচরা, রাজশাহী

লাল-ঘাড় কাস্তেচরা

Red-naped Ibis

Pseudibis papillosa
আমাদের দেশের শীতের পরিযায়ী!!

বাংলাদেশের বেশ বিরল ও সবচেয়ে কম পাওয়া যাওয়া কাস্তেচরা এটি। এদের দেহ বেশ শক্ত গড়নের, ডানা প্রশস্থ, ডানার উপরিভাগে সাদা ছোপ রয়েছে আর মাথার পেছনে ঘাড়ের কাছে লাল রঙ দেখা যায় যা থেকে এদের এমন নাম। এরা নতুন চাষ করা ক্ষেত বেশ পছন্দ করে খাবার খোজার জন্য। আমাদের দেশের রাজশাহী ও রংপুর বিভাগে এদের কদাচিৎ দেখা মেলে কিছু স্থানে। সম্ভবত অল্প সংখ্যায় প্রজননও করে থাকে এরা। এর বাইরে ময়মনসিংহ এবং সিলেট জেলা থেকে এদের দেখা পাবার খবর শুনেছি সম্প্রতি। আমি এদের প্রথম ছবি তুলেছিলাম চাঁপাইনবাবগঞ্জের পদ্মার এক চর থেকে।

বিশ্বে নূন্যতম বিপদগ্রস্থ
এদেশে কমই দেখা মেলে
লাল-ঘাড় কাস্তেচরা, চাঁপাইনবাবগঞ্জ

ইউরেশীয় চামুচঠুটি

Eurasian Spoonbill

Platalea leucorodia
আমাদের দেশের শীতের পরিযায়ী

আমাদের দেশের আরেকটি বিরল ও অনিয়মিত বকজাতীয় পাখি হচ্ছে এই ইউরেশীয় স্পুনবিল। আগে বেশ নিয়মিত হলেও ইদানিং কম দেখা মিলছে এর। একে মূলত ভোলার চরাঞ্চলে আর রাজশাহী অঞ্চলে শীতে কদাচিত দেখা মেলে। ইদানিং প্রতি বছর দেখা মিলছে না। এখনো এই পাখিটির ছবি এই দেশে তুলতে পারিনি।

বিশ্বে নূন্যতম বিপদগ্রস্থ
এদেশে কমই দেখা মেলে
এখনো দেখা পাইনি

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top