বাংলাদেশে মোট ১২ প্রজাতির মাছরাঙা পাওয়া গেছে
পাতি মাছরাঙা
Common Kingfisher
Alcedo atthis
আমাদের দেশের আবাসিক পাখি
ছোট আকৃতির নীল রঙ এর এই মাছরাঙাটিকে সারাদেশের সকল ধরনের পরিবেশে দেখা যায়, জলাশয়ের আশেপাশে। মাটির খাঁড়া দেয়ালে গর্ত করে বাসা করে এবং বাচ্চা তোলে। এদের কানের কাছে একটি কমলা অংশ রয়েছে, যেটা খেয়াল করা জরুরী। তীক্ষ্ণ ডাক শুনে সহজেই এদের উপস্থিতি টের পাওয়া যায়। প্রথম ছবি তুলেছিলাম ঢাকার সাভার থেকে।
বিশ্বে ন্যুনতম বিপদগ্রস্থ
এদেশে সহজে দেখা মেলে
পাখিটির ডাক শুনুন
নীল-কান মাছরাঙা
Blue-eared Kingfisher
Alcedo meninting
আমাদের দেশের আবাসিক পাখি
এই প্রজাতির মাছরাঙ্গাটি দেখতে পাতি মাছরাঙার বেশ কাছাকাছি তবে এদের কানের কাছে নীল, কমলা ছোপটি অনুপস্থিত। আকারে আরেকটু ছোট এবং দেশের দক্ষিণাঞ্চলে সাধারনত দেখা মেলে। এছাড়া সিলেট ও চট্বগ্রাম বিভাগের বনেও এর উপস্থিতি রয়েছে বিভিন্ন ছড়ার ধারে। এরা একটু অন্ধকার যায়গা পছন্দ করে। প্রথম দেখা পেয়েছিলাম খুলনা জেলার এক গ্রামীন বন থেকে।
বিশ্বে ন্যুনতম বিপদগ্রস্থ
এদেশে মাঝেমাঝে দেখা মেলে
ব্লাইদের মাছরাঙা
Blyth's Kingfisher
Alcedo hercules
আমাদের দেশের শীতের পরিযায়ী
আকারে পাতি মাছরাঙার চেয়ে বড়, তবে কানের কাছটা নীলকান মাছড়াঙ্গার মত নীল। অতি বিরল এবং সম্ভবত আবাসিক এই মাছরাঙাটি আমাদের দেশের পাখির তালিকায় রয়েছে, সর্বশেষ সিলেট এর হাওড় অঞ্চলে দেখা গেছিলো একদুই দশক আগে।
বিশ্বে প্রায়-বিপদগ্রস্থ
এদেশে খুব কম দেখা মেলে
ঝুুটিয়াল মাছরাঙা
Crested Kingfisher
Megaceryle lugubris
আমাদের দেশের আবাসিক পাখি
সারাগায়ে সাদাকালো ডোরাকাটা এবং মাথায় ঝুঁটি বিশিষ্ট এই মাছরাঙ্গাটি আমাদের দেশের অত্যন্ত বিরল প্রজাতির মাছরাঙা। এরা পাহাড়ি বনের স্রোতশীল নদী বা ছড়া পছন্দ করে। বাংলাদেশের বান্দরবন জেলার সাংগু নদী থেকে প্রায় একদশক আগের কয়েকটি সাইটিং রয়েছে এই পাখিটির, সম্প্রতি সিলেট বিভাগের এক বন থেকেও পাওয়া গিয়েছে বলে শুনেছি।
বিশ্বে ন্যুনতম বিপদগ্রস্থ
এদেশে খুব কম দেখা মেলে
উদয়ী বামন মাছরাঙা
Black-backed/Oriental Dwarf-Kingfisher
Ceyx erithaca
আমাদের দেশের গ্রীষ্মের পরিযায়ী
বাংলাদেশের বিরল এই মাছরাঙাটি আমাদের দেশের গ্রীষ্মের পরিযায়ী। সিলেট ও চট্বগ্রাম বিভাগের প্রায় সব পাহাড়ি বনে এরা বাসা করে এবং বাচ্চা তোলে। ছোট টিকটিকি/গিরগিটি বা কাকড়া/ব্যাং এদের প্রিয় খাবার। আকারে বাংলাদেশের সকল মাছরাঙার মধ্যে ক্ষুদ্রতম। এদের দেহে বাহারী বিভিন্ন রঙ এর মিশেল দেখা যায়। এখনো এর দেখা পাইনি।
বিশ্বে ন্যুনতম বিপদগ্রস্থ
এদেশে কমই দেখা মেলে
বাদামী-ডানা মাছরাঙা
Brown-winged Kingfisher
Pelargopsis amauroptera
আমাদের দেশের আবাসিক পাখি
এই প্রজাতির মাছরাঙাটি বাংলাদেশের সকল মাছরাঙার মধ্যে বৃহত্তম। আমাদের দেশে শুধুমাত্র দক্ষিণাঞ্চলে উপকূলীয় এলাকায় এর দেখা মেলে। সুন্দরবনে সুলভ, এছাড়া বরিশাল ও চাঁদপুর অঞ্চলেও দেখা যায়। আশ্চর্যজনকভাবে ঢাকার সাভারে একবার দেখা গিয়েছিলো। সুন্দরবন থেকেই দেখা পেয়েছি এর।
বিশ্বে প্রায়-বিপদগ্রস্থ
এদেশে কমই দেখা মেলে
মেঘহও মাছরাঙা
Stork-billed Kingfisher
Pelargopsis capensis
আমাদের দেশের আবাসিক পাখি
বড় আকারের এই অনিন্দ্য সুন্দর মাছরাঙাটির দেহের উপরিভাগ মেঘের মত নীল, বুকের দিকে কমলাটে এবং ঠোট শক্তিশালী এবং লাল। এর ডাক শুনে সহজেই এর উপস্থিতি জানা যায়। ঢাকার বিভিন্ন উদ্যানমত যায়গায় একে সহজেই দেখা যায়, দেশের অন্যান্য অঞ্চলেও এর দেখা মেলে প্রায়ই। সুন্দরবনের গভীরে তেমন দেখা যায়না। এর প্রথম ছবি তুলেছিলাম ঢাকার সাভার থেকে।
বিশ্বে ন্যুনতম বিপদগ্রস্থ
এদেশে মাঝেমাঝে দেখা মেলে
পাখিটির ডাক শুনুন
লাল মাছরাঙা
Ruddy Kingfisher
Halcyon coromanda
আমাদের দেশের আবাসিক পাখি
সারাদেহ গাড় লালচে-খয়েরী রঙ এর এই মাছরাঙাটিকে আমাদের দেশের শুধুমাত্র সুন্দরবনে পাওয়া যায়। বরগুনার সুন্দরবনেও এর উপস্থিতি রয়েছে। একটু লাজুক প্রকৃতির এবং অন্ধকার যায়গা পছন্দ করে। সিলেট অঞ্চলের পাহাড়ি বনে এর দেখা পাওয়া যাবার সম্ভাবনা রয়েছে কারন কাছেই আসামের বনে অল্পসংখ্যক বাস করে। প্রথম এর দেখা পেয়েছিলাম সুন্দরবনের করমজল থেকে।
বিশ্বে ন্যুনতম বিপদগ্রস্থ
এদেশে কমই দেখা মেলে
পাখিটির ডাক শুনুন
ধলা-বুক মাছরাঙা
White-throated Kingfisher
Halcyon smyrnensis
আমাদের দেশের আবাসিক পাখি
বাংলাদেশের সবচেয়ে সুলভ প্রজাতির মাছরাঙা সম্ভবত এটি। এর গলা থেকে বুক পর্যন্ত উজ্জ্বল সাদা যা দূর থেকেও দেখা যায়। মাছ ছাড়াও এরা সুবিধামত ছোট সাপ, সরীসৃপ, ছোট পাখি এমনকি ছোট স্তন্যপায়ীও খেয়ে থাকে। ফলে এরা দেশের সকল ধরণের পরিবেশে ভালো সংখ্যায় টিকে থাকতে পারে। প্রথম দেখা পেয়েছিলাম সম্ভবত যশোর থেকে।
বিশ্বে ন্যুনতম বিপদগ্রস্থ
এদেশে সহজে দেখা মেলে
পাখিটির ডাক শুনুন
কালো-টুপি মাছরাঙা
Black-capped Kingfisher
Halcyon pileata
আমাদের দেশের শীতের পরিযায়ী
এটি বাংলাদেশের একটি শীতকালীন পরিযায়ী মাছরাঙা। তবে এদের সংখ্যা বেশ কমেছে। এদের সাধারনত বাংলাদেশের সকল উপকূলীয় অঞ্চলে ম্যানগ্রোভ বনের আশেপাশে দেখা যায়। ঢাকা এবং রাঙামাটিতে দুবার দেখা গিয়েছে বেশ কিছুদিন আগে। এদের মাথার উপরে কাল রঙ এর পালকের কারনে এদের এমন নাম, দেখতে বেশ সুন্দর। প্রথম দেখা পেয়েছিলাম কক্সবাজার জেলায়।
বিশ্বে সংকটাপন্ন
এদেশে কমই দেখা মেলে
সাদা-ঘাড় মাছরাঙা
Collared Kingfisher
Todiramphus chloris
আমাদের দেশের আবাসিক পাখি
বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলের সুলভ মাছরাঙ্গা এই পাখিটি। এদের অপর নাম Mangrove Kingfisher. এদের দেহের উপরিভাগ হালকা নীল এবং গলা ও বুক ধবধবে সাদা। প্রথম দেখা পেয়েছিলাম সাতক্ষীরায় সুন্দরবন থেকে।
বিশ্বে ন্যুনতম বিপদগ্রস্থ
এদেশে সহজে দেখা মেলে
পাখিটির ডাক শুনুন
পাকড়া মাছরাঙা
Pied Kingfisher
Ceryle rudis
আমাদের দেশের আবাসিক পাখি
এই প্রজাতির মাছরাঙাটিকেও সারাদেশেই দেখা যায়, বেশ সুলভ আবাসিক পাখি, সাধারনত জোড়ায় জোড়ায় এদের দেখা মেলে। সারাদেহে সাদা কালো রঙ এর বাহার, দেখতে খুব সুন্দর। প্রায়ই পানির উপরে এক যায়গায় ভেসে থাকতে দেখা যায় শিকার লক্ষ্য করে, এরপর সুবিধাজনক হলে ঝাঁপ দিয়ে পড়ে পানির মধ্যে এবং ধরে ফেলে। প্রথম ছবি তুলেছিলাম ঢাকার সাভার থেকে।