Brown-cheeked Fulvetta (Alcippe poioicephala) বাদা্মী-গাল ফালভেটাঃ
ফালভেটা একধরনের ব্যাবলার জাতীয় পাখি। দেশের উত্তর-পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্বের মিশ্র চিরসবুজ বনে পাওয়া যায়। সাধারনত কয়েকটি একসাথে থাকে, অন্য কাছাকাছি প্রজাতির পাখিদের সাথে মিশেও ঝাঁক তৈরী করে। এর প্রথম ছবি তুলেছিলাম কুলাউড়ার সাগরনাল চা বাগানের কোলঘেষে এক বনে।
Nepal Fulvetta (Alcippe nipalensis) নেপালী ফালভেটাঃ
নামের মধ্যে নেপাল রয়েছে এমন কয়েকটি পাখি আমাদের দেশে পাওয়া যায়, এই পাখিটি তার একটি। আকারে ছোট, এর চোখের চারপাশের রিং এবং মাথার চুড়া, সাথে মোটা ঠোট দেখে সহজেই একে চেনা যায়। এও অন্যান্য ব্যাবলার, ফালভেটাদের সাথে ঝাঁক বেঁধে চলতে পছন্দ করে। কুলাউড়ায় প্রথম এর ছবি তুলি।
Long-tailed Sibia (Heterophasia picaoides) ল্যাঞ্জা সিবিয়াঃ
দেশে পাওয়া যাওয়া একমাত্র সিবিয়া হচ্ছে এটি। কয়েক দশক আগে মৌলভিবাজারের লাউয়াছড়া বনে একটিকে দেখা গেছিলো, সম্প্রতি আর পাওয়া যায়নি।
Jungle Babbler (Argya striata) বন ছাতারেঃ
মানুষের বসতবাড়ির আশেপাশে পাওয়া যাওয়া সবচেয়ে সুলভ ছাতারে এই পাখিটি। ৭-৮ টি পাখি একসাথে থাকে আর ক্যাচক্যাচ করে ডাকে বলে এর নাম সাত ভাই ছাতারে, ক্যাচকেচিয়া ইত্যাদিও। দেশের মধ্যাঞ্চল থেকে পশ্চিমাঞ্চলে একে খুব সহজেই পাওয়া যায়। আশ্চর্যজনকভাবে সিলেট ও চট্বগ্রাম বিভাগে এই পাখিটি বিরল। আপনি যদি দেখতে পান তাহলে আমাকে অবশ্যই জানাবেন।
Common Babbler (Argya caudata) পাতি ছাতারেঃ
নামে সুলভ হলেও আসলে এই পাখিটি আমাদের দেশে বেশ দুর্লভ। প্রথম পাওয়া গিয়েছিল কুষ্টিয়ার পদ্মার এক চরে। এরপরে মাগুরা, রাজশাহী, চাপাইনবাবগঞ্জ এবং মেহেরপুরে একে পাওয়া গেছে। ধারণা করা হয় এটি আমাদের দেশের বিরল আবাসিক একটি পাখি। এর দেখা এখনো পাইনি। এদের গলার কাছটা সাদা আর চোখ কালো।
Striated Babbler (Argya earlei) ডোরা ছাতারেঃ
সারাদেশে ঘাসবন প্রতিবেশে পাওয়া যাওয়া সুলভ ছাতারে হচ্ছে এই পাখিটি। এদের মাথা, ঘাড় ও পিঠ জুড়ে লম্বা লম্বা দাগ রয়েছে বলে এদের এমন নাম। অন্য ছাতারেদের মত এরাও সাধারনত দল বেঁধে বিচরন করে। এদের চোখের আইরিস হলুদ, তবে বাচ্চা বয়সে কালচে। ফলে কমবয়সী পাখিগুলোকে অনেকে কমন ব্যাবলার বলে ভুল করেন। এদের ডাক শুনে সহজেই ঘাসবনে এদের উপস্থিতি টের পাওয়া যায়। প্রথম ছবি তুলেছিলাম ঢাকা শহরের কাছেই একটি হাউজিং প্রজেক্টের কাশবনে।
Lesser Necklaced Laughingthrush (Garrulax monileger) ছোট মালাপেঙ্গাঃ
বাংলাদেশে পাওয়া যাওয়া দুরকম মালাপেঙ্গার মধ্যে এটি ছোট। সাধারনত একসাথেই ঝাঁক বেঁধে বিচরন করে। তবে একে সহজে চেনার উপায় হল এর সামান্য ছোট আকৃতি ও এর হলুদ চোখের রিং। বাংলাদেশে ময়মনসিংহ বিভাগের গারো পাহাড় এলাকায় সুলভ, এছাড়া এর মূল বিস্তৃতি সিলেট ও চট্বগ্রাম বিভাগের বনাঞ্চল সমুহে। গারো পাহাড় থেকে এর প্রথম ছবি তুলেছিলাম।
White-crested Laughingthrush (Garrulax leucolophus) সাদা-ঝুটি পেঙ্গাঃ
অত্যন্ত সুন্দর দেখতে এই প্রজাতির পেঙ্গাটিকে বেশ কমই দেখতে পাওয়া যায়। চট্বগ্রাম বিভাগের বনাঞ্চলে মাঝেমধ্যে দেখা যায়। বান্দরবনের উচু পাহাড়ি বনে এর মূল বাসস্থান। এর ডাকও খুব সুন্দর। এখনো এর দেখা পাইনি।
Rufous-necked Laughingthrush (Pterorhinus ruficollis) লাল-ঘাড় পেঙ্গাঃ
বাংলাদেশের সবচেয়ে বিস্তৃত এলাকা জূরে পাওয়া যাওয়া পেঙ্গা সম্ভবত এটি। একে বনের বাইরে বিভিন্ন এলাকাতেই দেখা যায় এমনকি ঢাকা জেলাতেও কয়েক যায়গায় একে দেখা গেছে। ঢাকা ও ময়মনসিংহ বিভাগের পত্রঝরা বন ও বনের অংশে একে দেখা যায়, বেশি দেখা যায় শেরপুর জেলায়। এছাড়া উত্তরে লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম থেকে শুরু করে উত্তর ও উত্তর পুর্বের জেলাগুলোতে এবং চট্বগ্রাম বিভাগের সীমান্তঘেষা জেলাগুলো এবং সকল বনে একে পাওয়া যায়। এরা সাধারনত বনের কিনারে থাকতে পছন্দ করে বলে আমার অভিজ্ঞতা। এরাও ঝাঁক বেঁধে থাকে এবং সকল পেঙ্গাদের মতই খুব ডাকাডাকি করে। এর প্রথম ছবি তুলি আমি জামালপুর জেলার গারো পাহাড় অংশে।
Greater Necklaced Laughingthrush (Pterorhinus pectoralis) বড় মালাপেঙ্গাঃ
বাংলাদেশে পাওয়া যাওয়া সবচেয়ে বড় আকৃতির পেঙ্গা এটি। ময়মনসিংহ বিভাগের গারো পাহাড় অঞ্চলে পাওয়া যায়, এছাড়া এর মূল বাসস্থান সিলেট ও চট্বগ্রাম বিভাগের মিশ্র চিরসবুজ বনাঞ্চলে। আমার অভিজ্ঞতা অনুযায়ী এটিই সবচেয়ে সুলভ পেঙ্গা বাংলাদেশের। যে বনে এর বাস সেখানে গেলেই এর সাথে দেখা হয়, ডাক শোনা যায়। গারো পাহাড় থেকেই এর প্রথম ছবি তুলেছিলাম।
Yellow‑throated Laughingthrush (Garrulax galbanus) হলদে-গলা পেঙ্গাঃ
বাংলাদেশে দেখা যাওয়া এই পেঙ্গাটিকে বহুদিন আর এদেশে দেখা পাওয়া যায়নি।
Rusty-fronted Barwing (Actinodura egertoni) মরচে-কপাল ডোরাপাখঃ
ছাতারে ও পেঙ্গাদের আত্বীয় এই পাখিটিকেও বাংলাদেশে কয়েক দশকের মধ্যে দেখা যায়নি। তবে আগে পাওয়া যেত বলে অভিজ্ঞজনেরা উল্লেখ করেছেন।