Asian Glossy Starling (Aplonis panayensis) এশীয় তেলশালিকঃ
কালো কুচকুচে ও লাল চোখ বিশিষ্ঠ এই শালিকটিকে চট্বগ্রাম বিভাগের পার্বত্য জেলাগুলোতে পাওয়া যায়। সাধারনত ফলের মৌসুমে বিভিন্ন বুনো ফলগাছে একে দেখা যায়। এখনো এই পাখিটির দেখা পাইনি।
Golden-crested Myna (Ampeliceps coronatus) সোনালী-ঝুটি ময়নাঃ
সম্প্রতি দেশের তালিকায় যুক্ত হওয়া এই প্রজাতির ময়না পাখিটিকে রাঙামাটির এক সংরক্ষিত বনে প্রথমবার এবং পরে মৌলভিবাজারের লাউয়াছড়া বনে পাওয়া গেছে। ধারনা করা হয় এটি আমাদের দেশের অতিবিরল আবাসিক বা ভেগরেন্ট পাখি।
Common Hill Myna (Gracula religiosa) পাহাড়ি ময়নাঃ
বন্যপ্রাণী অপরাধের অন্যতম বড় শিকার এই পাহাড়ি ময়না। আমরা সকলেই কমবেশি ছোট বেলায় খাঁচাবন্দী অবস্থায় এদের দেখেছি, অস্বীকার করার উপায় নেই। এদের উচু আওয়াজের শীস ও শব্দ নকল করার প্রতিভার কারনে এদের এই পরিনতি। তবে ইদানিং বন্যপ্রাণী আইন কিছুটা হলেও কার্যকর হওয়ায় ও সচেতনতা বৃদ্ধি পাওয়ায় এদের খাঁচায় পোষার প্রবণতা কিছুটা কমেছে। এদেরকে বাংলাদেশের সিলেট ও চট্বগ্রাম বিভাগের পাহাড়ি বনে এবং অল্প পরিমানে ময়মনসিংহ বিভাগের বনে পাওয়া যায়। এর প্রথম ছবি তুলি রাঙামাটির সাজেক ভ্যালি থেকে।
European Starling/Common Starling (Sturnus vulgaris) ইউরোপিয় শালিকঃ
বাংলাদেশের এই বিরল পরিযায়ী শালিকটিকে দেশের এখানে ওখানে একটি বা কয়েকটি করে দেখা যায় শীতকালে। দেশের উপকূলীয় অঞ্চলে, ঢাকা জেলায় একে বেশ কয়েকবার পাওয়া গেছে। তবে সম্প্রতি নারায়নগঞ্জের অদূরে মেঘনা নদীর এক চরে প্রতিবছর একে দেখা যাচ্ছে, এছাড়া বগুড়ায় ও রাজশাহীতেও দেখা মিলেছে। এর প্রথম ছবি তুলি মেঘনা নদীর সেই চরে, পরে রাজশাহীতেও দেখা পেয়েছি।
Rosy Starling (Pastor roseus) গোলাপী শালিকঃ
এই প্রজাতির শালিকটি বাংলাদেশের আরেক পরিযায়ী অনিয়মিত পাখি, পান্থ পরিযায়ীও হতে পারে। দেশের উপকূলীয় অঞ্চলে বিশেষ করে সুন্দরবনের উপকূলে, ভোলার উপকূলে, সেইন্ট মার্টিন দ্বীপে একে প্রায় শীতেই পাওয়া যায়। এছাড়া সম্প্রতি ঢাকায় ও বান্দরবনেও দেখা মিলেছে। এখনো এর দেখা পাইনি।
Daurian Starling (Agropsar sturninus) বেগুনী-পিঠ শালিকঃ
এই পাখিটিকে বাংলাদেশের উপর দিয়ে পরিযায়ন করার সময় মাঝেমধ্যে হুটহাট দেখা যায়। শীতের শেষে গরমের শুরুতে এদের দেখা মেলে। কক্সবাজার, ঢাকা ও হবিগঞ্জে এদের দেখা মিলেছে। এখনো এটি চোখে পড়েনি।
Chestnut-cheeked Starling (Agropsar philippensis) খয়েরী-গাল শালিকঃ
২০১৯ সালের বসন্তে হবিগঞ্জের সাতছড়ি বনের মান্দার গাছে এই বিরল শালিকটির দেখা পাওয়া গেছিলো। সেইবারই প্রথম ও শেষ, এরপরে আর পাখিটিকে দেখা যায়নি এদেশে। সেবার সাতছড়ি যেতে পারিনি।
Indian Pied Starling (Gracupica contra) গো শালিকঃ
খুব পরিচিত এবং সুলভ এই শালিকটি আমাদের আবাসিক পাখি। সারাদেশেই প্রচুর পরিমানে পাওয়া যায়, গবাদীপশুর আশেপাশে থাকতে পছন্দ করে তাই এর এমন নাম। এর গান অদ্ভুত সুন্দর।
Brahminy Starling (Sturnia pagodarum) বামুনি কাঠশালিকঃ
বাংলাদেশের এই বিরল শালিকটিকে শুধুমাত্র রাজশাহী জেলাতেই নিয়মিত পাওয়া যায়। এছাড়া আশেপাশের কিছু জেলায় ও ঢাকায় কয়েকবার একে দেখা গেছে। রাজশাহীতেই প্রথম এর ছবি তুলি।
Chestnut-tailed Starling (Sturnia malabarica) খয়েরীলেজ কাঠশালিকঃ
আকারে কিছুটা ছোট এই প্রজাতির শালিকও বাংলাদেশে বেশ সুলভ। গাছের গুড়িতে বাসা করে তাই গাছপালা আছে এমন যায়গাতেই বেশি দেখা যায়।
বনাঞ্চলের আশেপাশে ঝাঁকে ঝাঁকে দেখা মেলে।
Common Myna (Acridotheres tristis) ভাত শালিকঃ
বাংলাদেশের অত্যন্ত এই সুলভ আবাসিক শালিক পাখিটিকে আমরা সবাই দেখেছি। বাসাবাড়ির আশেপাশে ভাত ছড়ালেই একে দেখা যায়, এজন্যই হয়তো এর এমন নাম।
Bank Myna (Acridotheres ginginianus) গাং শালিকঃ
নদীর খাড়া পাড়ে গর্ত করে বাসা করে বলে এর এমন নাম। সাধারনত নদীর আশেপাশে পাওয়া যায় বলে এটিকে প্রতিদিন দেখা যায় না। তবে বৃহত্তর কুষ্টিয়া অঞ্চলে এর ভালো পপুলেশান রয়েছে, সেখানে হরহামেশা এর দেখা পাওয়া যায়। প্রথম ছবি তুলেছিলাম ঢাকার কেরানিগঞ্জ থেকে।
Jungle Myna (Acridotheres fuscus) ঝুটি শালিকঃ
ঠোটের গোড়ায় সামান্য কিছু খাড়া পালক থাকায় এর এমন নাম হয়েছে। আকারে ভাত শালিকের চেয়ে সামান্য ছোট। চোখ হলুদ আর ঠোটের গড়ায় নীলচে ছোপ রয়েছে। ভাত শালিক ও গো শালিকের তুলনায় একে একটু কমই পাওয়া যায়।
Great Myna (Acridotheres grandis) ধলা-তলা শালিকঃ
ভাত শালিকের চেয়ে সামান্য আকারে বড় এই শালিকটির ঠোট সম্পুর্ন হলুদ, ঠোটের গোড়ায় বেশ উচু ঝুটি রয়েছে, আর চোখ কালো। বাংলাদেশে বেশ বিরল একটি পাখি। ২০১৭ সালে সুনামগঞ্জের সীমান্ত এলাকায় প্রথম এর দেখা পাওয়া গেছিলো, এরপরে কক্সবাজার ও লালমনিরহাটে। করোনাকালীন সময়ে সিলেটের একটি অঞ্চলে প্রায় ছয়মাস ধরে একটানা এদের দেখা যায়, তখন ধারনা করা হয় যে এরা সম্ভবত আমাদের দেশের অতিবিরল আবাসিক পাখি। পরে সম্প্রতি শেরপুরের কিছু বিল এলাকায় এদেরকে বেশ ভালো সংখ্যায় দেখা গেছে ঝুটি শালিক, ভাত শালিকের ঝাঁকে মিশে গরুর পালের সাথে সাথে চলতে। সেখানেই এর প্রথম ছবি তুলি। সেখানে অপ্রাপ্তবয়স্ক পাখিও দেখা গেছে সুতরাং প্রায় নিঃসন্দেহেই বলা যায় যে এরা আমাদের দেশে অল্প সংখ্যায় হলেও প্রজনন করে।
Spot-winged Starling (Saroglossa spilopterus) চিতিপাখ শালিকঃ
এটি বাংলাদেশের আরেক বিরল পরিযায়ী শালিক। শীতকালে বিশেষ করে শীতের শেষে ফুল ফুটা শুরু হলে একে সিলেট বিভাগের বেশ কিছু বনে এবং চট্বগ্রাম বিভাগে অনিয়মিতভাবে পাওয়া যায়। শালিকদের মধ্যে এই শালিকটির পুরুষ পাখিগুলো অন্যতম সুন্দর। স্ত্রী পাখি দেখতে আলাদা হয়। এখন পর্যন্ত কয়েকবার চেষ্টা করেও এর দেখা পাইনি।