বাংলাদেশে জলমুরগী, ঝিল্লি, গুড়গুড়ি ইত্যাদি মিলিয়ে মোট ১৩ প্রজাতির পাখি পাওয়া গেছে
পান্তা ঝিল্লি
Brown-cheeked Rail
Rallus indicus
আমাদের দেশের শীতের পরিযায়ী
বাংলাদেশের বিরল পরিযায়ী এই ঝিল্লি। সারাদেশেই শীতে পাওয়া যায় তবে বড় হাওড় ও নদীর চরাঞ্চল জাতীয় স্থানে নলবনের ধারের জলাশয় পছন্দ করে। এর আরেক নাম Eastern Water Rail। ঠোট বেশ লম্বা এবং আকারে অন্য ঝিল্লি ও গুড়গুড়ির চেয়ে বড়। প্রথম দেখা পেয়েছিলাম মুন্সিগঞ্জের পদ্মার চরে।
বিশ্বে নূন্যতম বিপদগ্রস্থ
এদেশে মাঝেমাঝে দেখা মেলে

মেটে-বুক ঝিল্লি
Slaty-breasted Rail
Lewinia striata
আমাদের দেশের শীতের পরিযায়ী
এই পাখিটিও আমাদের দেশে দুর্লভই বলতে হবে, পান্তা ঝিল্লির চেয়ে একে কমই দেখা যায়। বুকের কাছটা ছাইরঙা এবং পেটে ডোরাকাটা দাগ রয়েছে। এখনো এর দেখা পাইনি।
বিশ্বে নূন্যতম বিপদগ্রস্থ
এদেশে কমই দেখা মেলে

পানমুরগী
Eurasian Moorhen
Gallinula chloropus
আমাদের দেশের শীতের পরিযায়ী
এটি বাংলাদেশের বেশ সুলভ পরিযায়ী পাখি। সারাদেশেই ছোট-বড় জলাশয়ে দেখা মেলে। উপরের ঠোটের গোড়ার কাছটা লাল রঙ এর হয় পুরুষ পাখিগুলোর। লেজের নিচে সাদা পালক রয়েছে যা পেছন থেকে দেখলে সহজেই চোখে পড়ে। এর প্রথম ছবি তুলেছিলাম ঢাকার সাভার থেকে।
বিশ্বে নূন্যতম বিপদগ্রস্থ
এদেশে সহজে দেখা মেলে

পাতি কুক্কুট
Eurasian Coot
Fulica atra
আমাদের দেশের শীতের পরিযায়ী
এটিও আমাদের দেশের বেশ সুলভ পরিযায়ী পাখি তবে ছোট জলাশয়ে কমই দেখা যায়। বড় নদী ও হাওড় পছন্দ করে এবং সংখ্যায় একসাথে অনেকগুলো থাকতে পারে। এদের সারাদেহ প্রধানত কালো, চোখ লাল রঙ এর এবং ঠোট সাদা রঙ এর হয়। ভয় পেলে পানির উপরে বেশ কিছুদূর দৌড়ে গিয়ে আকাশে উড়াল দেয়। এদের প্রথম ছবি তুলেছিলাম ঢাকার সাভার থেকে।
বিশ্বে নূন্যতম বিপদগ্রস্থ
এদেশে সহজে দেখা মেলে

বেগুনী কালিম
Grey-headed/Purple Swamphen
Porphyrio poliocephalus
আমাদের দেশের আবাসিক পাখি
বাংলাদেশের একটি আবাসিক পাখি তবে শীতে এরা দেশের বিভিন্ন স্থানে জলাশ্যে ছড়িয়ে পড়ে। হাওড় ও অগভীর পানির বিলে এদেরকে দলে দলে দেখা মেলে। প্রচুর শিকার করার কারনে এদের সংখ্যা বেশ কমে গিয়েছিলো তবে শিকার কমায় এখন আবার সহজেই দেখা মেলে। এছাড়া দেশের বিভিন্ন স্থানে আটক অবস্থায় এদের প্রজনন ও বংশবিস্তার করা হচ্ছে, যা অবৈধ তবে পাখিটির টিকে থাকায় সহায়ক। এসব পাখির কিছু উদ্ধার হলে তা বিভিন্ন জলাশয়ে অবমুক্ত করা হয় ও সহজেই বেঁচে থাকতে পারে সেখানে। এর প্রথম ছবি তুলেছিলাম মৌলভিবাজারের হাইল হাওড় থেকে।
বিশ্বে নূন্যতম বিপদগ্রস্থ
এদেশে সহজে দেখা মেলে

কোড়া
Watercock
Gallicrex cinerea
আমাদের দেশের আবাসিক পাখি
আমাদের দেশের অত্যন্ত সুন্দর আবাসিক জলজ পাখি এটি। সারাবছর বাদামী রঙ এর হলেও প্রজনন ঋতুতে পুরুষ পাখিগুলোর দেহ কালো পালকে ছেয়ে যায় আর মাথায় গাড় লাল রঙ এর ঝুঁটি গজায়। পুরুষ পাখিগুলো নিজের সীমানা রক্ষায় খুব সচেষ্ট থাকে তাই সহজেই অবৈধ পাখি শিকারীরা পুরুষ পাখির ডাক বাজিয়ে কোড়া ধরে ফেলে। এটি আমাদের দেশে এই সুন্দর পাখিটির সংখ্যা দ্রুত কমে আসার পেছনে দায়ী। প্রায় সারাদেশেই বিল ও হাওড় অঞ্চলে এদের দেখা মেলে, তবে ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগে বেশী বলে আমার ধারনা। প্রথম ছবি তুলেছিলাম রাজশাহী থেকে।
বিশ্বে নূন্যতম বিপদগ্রস্থ
এদেশে মাঝেমাঝে দেখা মেলে

ডাহুক
White-breasted Waterhen
Amaurornis phoenicurus
আমাদের দেশের আবাসিক পাখি
আমাদের দেশের অতি পরিচিত ও সুলভ আবাসিক পাখি এটি। সারাদেশেই সকল জলাশয়ে এবং বসতবাড়ির আশেপাশে পুকুর ও ডোবাতেই এরা টিকে থাকতে সক্ষম। গাছে উঠে বাসা করে, রাতে ডাহুকের ডাকার অভ্যেস রয়েছে যা বাংলা সাহিত্যে বহু স্থানে উল্লেখিত। প্রথম ছবি তুলেছিলাম ঢাকার সাভার থেকে।
বিশ্বে নূন্যতম বিপদগ্রস্থ
এদেশে সহজে দেখা মেলে

মেটে-পা গুড়গুড়ি
Slaty-legged Crake
Rallina eurizonoides
আমাদের দেশের আবাসিক পাখি
বাংলাদেশের অতি বিরল আবাসিক পাখি এই মেটে-পা ঝিল্লি। এরা রাতেও বেশ বিচরন করে তাই চোখ বড় বড়, প্রজনন ঋতুতে পছন্দসই গাছের ডালে বসে গান গায়। এরা সাধারনত পত্রঝরা ও গ্রামীণ বন তল পছন্দ করে এবং শুকনো যায়গায় বিচরন করে, তবে আশেপাশে জলাশয় ও থাকা চাই। বাংলাদেশের খুলনা ও বাগেরহাট জেলায় এদের বেশ জনসংখ্যা টিকে রয়েছে এখনো, তবে দুঃখজনকভাবে সেখানে এদেরকে প্রায়ই শিকার করা হয় রেকর্ড করা গান বাজিয়ে আকৃষ্ট করে। খুলনা থেকে এর ডাক ও গান শুনেছি রাতের বেলা তবে এখনো দেখা পাইনি। এই অঞ্চলের বাইরে টাংগাইলের মধুপুর বনে দেখা মিলেছে, সম্প্রতি খাগড়াছড়ি থেকেও বাচ্চাসহ উপস্থিতির কথা জানা গেছে।
বিশ্বে নূন্যতম বিপদগ্রস্থ
এদেশে খুব কম দেখা মেলে

তিলা গুড়গুড়ি
Spotted Crake
Porzana porzana
আমাদের দেশের শীতের পরিযায়ী
বাংলাদেশের অতি বিরল পরিযায়ী গুড়গুড়ি এই পাখিটি। সুনামগঞ্জের টাঙ্গুয়ার হাওড় থেকে কয়েক বছর আগে একবারই এর দেখা মিলেছিলো।
বিশ্বে নূন্যতম বিপদগ্রস্থ
এদেশে খুব কম দেখা মেলে

লাল-বুক গুড়গুড়ি
Ruddy-breasted Crake
Zapornia fusca
আমাদের দেশের শীতের পরিযায়ী
বাংলাদেশের বেশ সুলভ পরিযায়ী গুড়গুড়ি এই পাখিটি। প্রায় সারাদেশেই জলাশয় ও নলবন বিশিষ্ট স্থানে এদের দেখা মেলে। পিঠের উপর সবুজাভ-বাদামী রঙ এর এবং বুক ও পা লাল রঙ এর। এর প্রথম ছবি তুলেছিলাম ঢাকার অদূরে কেরাণীগঞ্জ থেকে।
বিশ্বে নূন্যতম বিপদগ্রস্থ
এদেশে মাঝেমাঝে দেখা মেলে

বাদামী গুড়গুড়ি
Brown Crake
Zapornia akool
আমাদের দেশের শীতের পরিযায়ী
বাংলাদেশের অত্যন্ত বিরল পরিযায়ী গুড়গুড়ি এটি। বহু দশক পর একে চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে পুনরায় পাওয়া গিয়েছিলো এবং সেখানে প্রতিবছর পাওয়া যাচ্ছে শীতে। সম্প্রতি শেরপুর জেলার গারো পাহাড় এলাকায় বেশ কয়েক স্পটে আরও বেশী সংখ্যায় এই গুড়গুড়ির দেখা মিলেছে। এখনো আমি এই পাখি দেখিনি।
বিশ্বে নূন্যতম বিপদগ্রস্থ
এদেশে কমই দেখা মেলে

ছোট গুড়গুড়ি
Little Crake
Zapornia parva
আমাদের দেশের শীতের পরিযায়ী
আকারে বেইলনের গুড়গুড়ির চেয়ে সামান্য ছোট এই পাখিটি, আমাদের দেশের অতিবিরল পরিযায়ী পাখি। বেশ কয়েক দশক আগে সিলেট অঞ্চলের এক হাওড়ে একবারই এর দেখা মিলেছিলো। দেখতে বেইলনের গুড়গুড়ির সাতেহ বেশ সাদৃশ্যপূর্ন তবে পেটে ডোরাকাটা দাগ অত বেশী নেই আর ঠোটের গোড়ায় লাল ছোপ দেখা যায়।
বিশ্বে নূন্যতম বিপদগ্রস্থ
এদেশে খুব কম দেখা মেলে

বেইলনের গুড়গুড়ি
Baillon's Crake
Zapornia pusilla
আমাদের দেশের শীতের পরিযায়ী
বাংলাদেশের বেশ সুলভ পরিযায়ী এই গুড়গুড়ি। প্রায় সারাদেশেই বিল ও হাওড় জাতীয় স্থানে এদের দেখা মেলে তবে সংখ্যায় খুব বেশী নয়। আকারে লাল-বুক গুড়গুড়ির চেয়েও ছোট। প্রথম দেখা পেয়েছিলাম ঢাকার অদূরে কেরানীগঞ্জের এক বিল থেকে।
বিশ্বে নূন্যতম বিপদগ্রস্থ
এদেশে মাঝেমাঝে দেখা মেলে
