বাংলাদেশে মোট ছয় প্রজাতির মুনিয়া পাওয়া যায়
চাঁদি-ঠোট মুনিয়া
Indian Silverbill
Euodice malabarica
আমাদের দেশের আবাসিক পাখি
মুনিয়াদের মধ্যে এই সদস্যকে সারাদেশেই পাওয়া যায়। এর আরেক নাম হচ্ছে White-throated Munia। এর লেজের আগায় একটু চেরা থাকে। ঝোপঝাড় বিশিষ্ট খোলা প্রান্তর ও ঘাসবনে সারাদেশেই পাওয়া যায়। বাবুই এর বাসা থেকে প্রায়ই বাসা বানানোর উপকরন চুরি করে থাকে। এর প্রথম ছবি তুলি ঢাকার অদূরে কেরানীগঞ্জ থেকে। ঢাকার আশেপাশের হাউজিং প্রজেক্টগুলোতে এদের সংখ্যা বেশ।
বিশ্বে ন্যুনতম বিপদগ্রস্থ
এদেশে সহজে দেখা মেলে
পাখিটির ডাক শুনুন
তিলা মুনিয়া
Scaly-breasted Munia
Lonchura punctulata
আমাদের দেশের আবাসিক পাখি
এই মুনিয়াটিও সারাদেশে প্রচুর পাওয়া যায়, বন্য পাখি শিকারীদের অন্যতম বড় শিকার এই তিলা মুনিয়া। একে ধরে বিভিন্ন রঙ লাগিয়ে বিদেশী পাখি বলে বিক্রি করে দেয়ার প্রবনতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে তাই উদ্ধার হওয়া মুনিয়াদের মাঝে এর সংখ্যাই মনেহয় বেশী। এর বুক-পেটে তিলের মত অসংখ্য ছিটে রয়েছে বলে এর এমন নাম। এই মুনিয়ার আরেক নাম হচ্ছে Spotted Munia. ঢাকায় কেরানীগঞ্জে এর প্রথম ছবি তুলি। এক ঝাঁকে কয়েকশো মুনিয়া দেখেছিলাম সেবার। ওরকম বড় ঝাঁক কেরানিগঞ্জে আর দেখিনি।
বিশ্বে ন্যুনতম বিপদগ্রস্থ
এদেশে সহজে দেখা মেলে
পাখিটির ডাক শুনুন
সাদা-কোমর মুনিয়া
White-rumped Munia
Lonchura striata
আমাদের দেশের আবাসিক পাখি
এই প্রজাতির মুনিয়াটি একটু আলাদা প্রতিবেশে বাস করে। এদেরকে গ্রামীণ বন এবং দেশের বিভিন্ন বনাঞ্চলেও দেখা যায়। তবে অন্যান্য মুনিয়ার মতই এরা বনের ধারের ঘাসের বীজ ও শস্যের ক্ষেতে খাবারের সন্ধানে আসে। আমি এর প্রথম ছবি তুলি ঢাকায় জাবি ক্যাম্পাসে, তবে প্রথম দেখেছিলাম সম্ভবত সাতক্ষীরায়। সেখানে এটি খুবই সুলভ। ডানা একটু উচু করলেই এর সাদা কোমরটা দেখা যায়।
বিশ্বে ন্যুনতম বিপদগ্রস্থ
এদেশে সহজে দেখা মেলে
পাখিটির ডাক শুনুন
তিন-রঙা মুনিয়া
Tricolored Munia
Lonchura malacca
আমাদের দেশের আবাসিক পাখি
এই প্রজাতির মুনিয়াকে আগে কালো-মাথা মুনিয়া ডাকা হত। পরে আলাদা নাম হয়েছে তিনরঙা মুনিয়া। কারন এর দেহে মূলত তিনটি রঙ রয়েছে। চেস্টনাট মুনিয়ার ঝাঁকে বা আলাদা সাধারনত একে দেখা যায় তবে সংখ্যায় বেশি নয়। সারাদেশে এদের বিস্তৃতি রয়েছে কমবেশি তবে বড় নদীর ধারের ঘাসবনে বেশী দেখা মেলে। অপ্রাপ্তবয়স্ক পাখিগুলো চেস্টনাট মুনিয়ার মতই লাগে। আমি ঢাকার কেরানীগঞ্জে এর প্রথম ছবি তুলি।
বিশ্বে ন্যুনতম বিপদগ্রস্থ
এদেশে মাঝেমাঝে দেখা মেলে
খয়েরী মুনিয়া
Chestnut Munia
Lonchura atricapilla
আমাদের দেশের আবাসিক পাখি
এরও পূর্বের নাম হচ্ছে কালো-মাথা মুনিয়া বা Black-headed Munia. পরে ভাগ হয়ে দুটি প্রজাতি হয়েছে। এই মুনিয়াটিকে দেশের সর্বত্রই ভালো সংখ্যায় দেখা যায়। সাধারনত তিলা মুনিয়ার সাথে এরা ঝাঁক বাঁধে। বাসা করে উচু সবুজ ঘাসের মধ্যে। বন্য পাখি যারা ধরে বিক্রি করে তারা এই মুনিয়া ধরে প্রায়ই ফলে এদের সংখ্যা কমছে, আমার ব্যক্তিগত অভিমত। কারন পাঁচ বছর আগে যেমন দেখতাম এখন তেমন দেখিনা ঢাকারই কোথাও এর প্রথম ছবি তুলেছিলাম।
বিশ্বে ন্যুনতম বিপদগ্রস্থ
এদেশে সহজে দেখা মেলে
পাখিটির ডাক শুনুন
লাল মুনিয়া
Red Avadavat
Amandava amandava
আমাদের দেশের আবাসিক পাখি
বাংলাদেশের মুনিয়াদের মধ্যে এটিই সম্ভবত সবচেয়ে কম পাওয়া যায়। ঢাকার আশেপাশের বিভিন্ন হাউজিং প্রজেক্টের ফাঁকা জমিতে গজিয়ে ওঠা লম্বা ঘাসের ঝোপে এরা বাসা করে। তবে মূল আবাস হচ্ছে বড় নদীর চর, পদ্মার অববাহিকা জুড়ে কয়েকটি স্থানে নিয়মিত দেখা যায়, এছাড়া মৌলভিবাজারে একটি সংখ্যা রয়েছে, এর বাইরে একে তেমন দেখা যায় না। বন্যপাখি শিকারী সিন্ডিকেটের অন্যতম ভিকটিম এই খুব সুন্দর পাখিটি। গায়ের রঙ টকটকে লাল ও তাতে সাদা সাদা ফোটা থাকায় দেখতে স্ট্রবেরী ফলের কথা মনে পড়ে। এজন্য এর আরেক নাম Strawberry Finch. প্রজনন মৌসুমে পুরুষ পাখিগুলো টসটসে লাল রঙ ধারন করে, শীতে রঙ এর গাড়ত্ব একটু হ্রাস পায়। স্ত্রী পাখি দেখতে আলাদা, খয়েরী রঙ এর হয়, ডানায় দুটো দাগ রয়েছে আর ঠোট কালচে। ঢাকার এক ঘাসবন থেকেই এর প্রথম ছবি তুলেছিলাম।