শেরপুর জেলায় ডে ট্রিপ – বিল ও পাহাড়ের পাখি (জানুয়ারী ২০২৩)

জানুয়ারী ২০২৩ সালে আমরা বেশ কয়েকজন মিলে শেরপুর জেলায় একটি ডে ট্রিপ এর সিদ্ধান্ত নেই। এটি ছিলো আমার আয়োজনে প্রথম কমার্শিয়াল বার্ডিং ট্রিপ, তাছাড়া আমরা যাবো আমাদের নিজেদের প্রাইভেট কারে চড়ে তাই ব্যাপারটাই আলাদা ছিলো। গেস্ট ছিলেন তিনজন, রাজন ভাই, আবির ভাই আর রিয়াদ।

রাত দশটার দিকে রওনা দিয়ে আমরা শাহবাগ থেকে প্রথমে রিয়াদ আর আবিরকে পিক করে নেই, এরপরে গাবতলীর আগে তেল ও গ্যাস ভর্তি করে নিয়ে রওনা দেই শেরপুরের উদ্দেশ্যে। নবীনগর থেকে রাজন ভাইকে উঠিয়ে নেই। চমৎকার ফাঁকা রাস্তায় গাড়ি খুব সুন্দরভাবে এগিয়ে যেতে থাকে। অল্প সময়েই আমরা এলেঙ্গা পউছাই এবং নাস্তা করে নেই। এরপরে আবার একটানা গাড়ি চলতে থাকে এবং জামালপুর পর্যন্ত চলে যাই। সেখানে গিয়ে আবার রিফুয়েল করে গাড়ি পার্ক করে গাড়িতেই কিছুক্ষণ ঘগুমিয়ে নেই কারন আলো ফুটতে তখনো দেরী আছে। ফজরের আজান দিলে আমরা আবার রওনা দেই এবং শেরপুরে পৌছই। সেখানে লোকাল গাইড আমাদের সাথে যোগ দেন, গাদাগাদি করে বসে আমরা কাছেই প্রথম বিলটিতে পৌছাই এবং বার্ডিং শুরু করি। এখানে দারুন কিছু জলা-বিলমত যায়গা রয়েছে, সহজেই আমরা সেখানে তিন রকম চটক দেখি, এছাড়া পাই লাল-বুক গুড়গুড়ি এবং পান্তা ঝিল্লির দেখা। ভালো সংখ্যায় ছিলো তারা। এছাড়া আমি পেয়ে যাই একটা কালো-ভ্রু নল ফুটকির দেখা, যা আমার জন্য নতুন পাখি। সাথে সবারই কমপক্ষে তিনটি করে নতুন পাখি হয় এই বিল থেকে। এছাড়া উল্লেখযোগ্য পাখি ছিলো পুবের পানকাপাসী, গোলাপি তুলিকা ইত্যাদি। এখানে শেষ করে আমরা রওনা দেই পরবর্তী নতুন লোকেশানে।

শহরে ফিরে নাশতা করে নেই সকালের, এরপরে চলে যাই সেখানে যেখানে কদিন আগে এসে বড় শালিক পেয়েছিলাম। কিন্তু সেদিন বেশ কিছুক্ষন খুজেও এর দেখা পেলাম না তবে মাছমুরাল, ধুপনী বক ইত্যাদি পেলাম শুধু।

এরপরে আমরা সোজা চলে যাই গারো পাহাড়ের একটা স্পটে, সেখানে বনের মধ্যে ও ছড়ায় বেশ কিছুক্ষন আমরা হেটে বেড়াই আর পাখির ছবি তুলি। সেদিন পাহাড়ে খুব পাখির এক্টিভিটি পেলাম না, তাও এশীয় ডোরা পেঁচা, সবুজ তাউরা, দুরকম পেঙ্গা, আঁশটে দামা, সিঁদুরে সাহেলি ইত্যাদি পাখির দেখা পাই। এখানে বেশি পাখি পাচ্ছিনা দেখে এরপরে পাশে আরেকটি যায়গায় আমরা যাই সেখানে ছড়া ও তারপাশে ঝোপঝাড় রয়েছে তাতে নাকি সন্ধ্যায় অনেক ছোটপাখি পানি খেতে নামে। সেখানে আমরা বেশ কিছুক্ষন অপেক্ষা করি এবং শ্যামা, তিনরকম বুলবুলি, ছোট র‍্যাকেটফিঙে ইত্যাদি পাখি পাই। পাশেই একযায়গায় খুব উচ্চস্বরে মাইক বাজিয়ে অনুষ্ঠান করছিলো কেউ।

সন্ধ্যার আগে নাগাদ আমরা ফিরতি রওনা দেই এবং মধুপুর বাজারে এসে দুপুর+রাতের খাবার খাই। এরপরে গাড়ি রিফুয়েল করে রওনা দেই ঢাকার উদ্দেশ্যে। রাত বারোটার আগেই আমরা যে যার বাসায় ঢুকে পড়েছিলাম। সারাদিনে আমরা প্রায় ৮০ প্রজাতির পাখির দেখা পেয়েছিলাম।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top