September 10, 2023

নদী ও ঘাসবনের পাখির খোঁজে রাজশাহীতে দুদিন – ডিসেম্বর ২০২৩

ডিসেম্বর মাসের ১৫ ও ১৬ তারীখে আমরা ট্রেনযোগে ঢাকা থেকে কয়েকজন ফটোগ্রাফার রওনা দেই রাজশাহীর উদ্দেশ্যে। পদ্মা এক্সপ্রেস ট্রেন, বেশ আধুনিক  ও দ্রুত গতির ট্রেন। তবে আসতে লেট করলো এবং আমাদের প্রায় আলো ফোটার পরে রাজশাহী পৌছে দিলো। আমরা স্টেশানের পাশেই সকালের নাস্তা সেরে অটো যোগে রওনা হয়ে গেলাম ঘাটের উদ্দেশ্যে এবং মাঝিদের সাথে দেখা করে দুইটি ছোট ও মাঝারি বোটে চড়ে বসে যাত্রা শুরু করলাম। রোদ ঝলমল সুন্দর দিন ছিলো।  বেশ কিছুদূর এগিয়ে প্রথম একটি ফাঁকা চরে পেয়ে গেলাম বেশ কিছু খয়েরী চখাচখি, একটি মাটিতে বসা পেরেগ্রীন শাহীন এবং কিছু বড় পানকৌড়ির ও ধুপনি বকের। এছাড়া চরে ইতস্থত ঘুরে বেড়াচ্ছিলো ছোট নথজিরিয়া ও ছোট চাপাখির মত পাখিরা।  বেশ কিছুক্ষন ছবি তুলে আমরা আবারও আগাতে থাকলাম এবং একটি বেশ কর্দমাক্ত চরে আবিস্কার করলাম বিরাট ছোট বাবুবাটানের ঝাঁক, সাথে ছিল প্রচুর ছোট ও টেমিংকের চাপাখি, বাটান ও বেশ কয়েকটি পাকড়া উল্টোঠুটি। সবাই কাছ থেকে খুব ভালো ছবি পেলেন। কয়েকজন সাহস করে কাদায় নেমে আগাতে থাকলাম যাতে বাবুবাটানের ভালো ছবি পাওয়া যায় তবে কাদা খুবই নরম ছিলো এবং কয়েকজন হাটু অব্দি ডুবে গিয়ে আটকে গেলো। রিস্ক হয়ে যায় ভেবে আর না এগিয়ে আমরা সবাই থলথলে নরম কাঁদা মাড়িয়ে আবার বোটে এসে চড়লাম। এই পরিশ্রমেই হাঁপিয়ে গেছিলাম যারা কাঁদায় ডুবেছিলো বেশি। প্যান্ট ও পা ধুয়ে বোট আবারও যাত্রা শুরু করলো। এরমধ্যে পাওয়া গেলো বড় খোঁপা ডুবুরীর দেখা , সবাই ছবি পেলেন, এরা মস্ত চালাক, এক ডুব দিয়ে এরপরে বেশ কয়েকশো ফুট দুরত্বে গিয়ে আবার মাথা তোলে, অনেকসময় চোখের আড়ালে চলে যায়।   এগোতে এগোতে আমরা আবারও পেয়ে যাই বিশাল একটি খয়েরী চখাচখির ঝাঁক, সাথে ছিলো বেশ কিছু পিয়াং হাঁস। সবাই বেশ ভালো ছবি তুললেন, সূর্যের বিপরিতে ছিলো তারা। রোদ বেশ চড়ে গেছে ততক্ষণে তাই আমরা বেশি না দাঁড়িয়ে একটানা আমাদের গন্তব্যে আগাতে থাকলাম এবং পৌছে গেলাম। পথে এক যায়গায় নদীর ধারেই চাপাখি ও বাটানদের মধ্যে দেখা মিললো ছোট গুলিন্দা বাটানের, এই পাখিটি কমই পাওয়া যায় এবং গ্রুপের প্রায় সবার জন্যই নতুন পাখি ছিলো।  আমাদের গন্তব্যে পৌছে আমরা বোট থেকে নেমে আগে হাল্কা নাস্তা করে নিলাম এবং সবার কাছে নাস্তা দিয়ে দিলাম যাতে ক্ষুধা পেলে খাওয়া যায়। এই চরে কোনো দোকানপাট নেই, অল্প কিছু গরু-মহিষের বাথান রয়েছে শুধুমাত্র। ডিসেম্বর মাস হওয়ায় মাটি বেশ সবুজ ছিলো, গতবছর মার্চ মাসে এসে খটখটে রুক্ষ দেখেছিলাম। কিছুদূর এগিয়েই আমরা পেয়ে গেলাম বাংলাদেশের বিরল আবাসিক পাখি তামাটে-পিঠ লাটোরার। সবাই সময় নিলে বেশ ভালো ছবি পেলেন। এছাড়া দেখা মিললো এই চরে বাস করা কয়েকটি সাদা-চোখ তিশাবাজ এর। যাদের সাথে আকাশে পাল্লা দিচ্ছিলো পরিযায়ী পাতি কেস্ট্রেল/বাজ। আরও পেলাম দেশী নীলকন্ঠ। হঠাত হঠাত দূর থেকে ডেকে উঠছিলো ধূসর তিতিরের দল। যাদের দেখার জন্যই আমরা এসেছি। উচু নিচু এবড়ো খেবড়ো শক্ত মাটির চরের মধ্যে জন্মানো কাঁটাঝোপে এদের বাস আর মানুষ দেখলেও দৌড়ে পালায়, বেশি কাছে চলে গেলে খুব জোরে উড়ে দূরে চলে যায়। আমরা একটি ঝাঁকে বেশ কিছু তিতিরের দেখা পেলাম, সবাই দূর থেকে ছবি তুলতে পারলেন। ওরা গিয়ে পালালো ভারতের সীমানার ভেতরে, আমাদের মাঝিরা আমাদের সতর্ক করলো যে আর যাতে আমরা না আগাই, কারন এই চরের অর্ধেক পড়েছে ভারতের সীমানার মধ্যে। আমরা দূর থেকে সীমানা পিলারও দেখতে পেলাম। মাঝিদের দেখানো পথে আমরা হাটতে থাকলাম এবং মাঝে গাছের নিচে বসে বিশ্রাম নিলাম, ব্যাগে থাকা শুকনো খাবার খেলাম।  বেশ কিছুক্ষন বিশ্রাম নেয়ার পরে আবারও পাখির খোঁজ শুরু, পাওয়া গেল এক ঝাঁক লাল-লতিকা হটিটির, এছাড়া দেখা মিললো দুইটি দেশী মোটাহাটুর, তবে ছবির সুযোগ পাওয়া যায়নি। বাবলা কাটা জাতীয় গাছের মধ্যে ছোট পাখির নড়াচড়া লক্ষ্য করে আমরা পেয়ে গেলাম পাতি চিফচ্যাফ এর। যেটা গ্রুপের অনেকের জন্যই ছিলো নতুন। আমরা খুজছিলাম এই চরে গত কয়েকদিন ধরে পাওয়া যাওয়া বাংলাদেশের বিরল পাখি পাতি ছাতারেদেরকে কিন্তু পাচ্ছিলাম না। ততক্ষনে বিকেল শুরু হয়ে গেছে, সুর্যাস্তের ঘন্টাখানেক আগে আমাদেরকে অবশ্যই রওনা দিতে হবে, অন্ধকারে নদীতে নানা রকম বিপদ আপদের সম্ভাবনা। আকাশে চক্কর মেরে গেলো একটি বুটপা ঈগল আর একটি লম্বা-পা তিশাবাজ। নুরু মাঝির দিকনির্দেশনা মত আমরা গরুর বাথানগুলোর চারপাশে ঘুরে ঘুরে খুজতে থাকলাম এবং পেলাম কালো গির্দি, মোহনচূড়া ইত্যাদি পাখিদের। ইতি উতি ঘুরে বেড়াচ্ছিলো তিন প্রজাতির তুলিকা ও ঝাড়ভরতেরা। নুরু মাঝি হঠাত ডেকে বললো ভাই অইযে পাতি ছাতারে, আশেপাশে খেয়াল করে দেখেন আরও আছে। মনটা আনন্দে ভরে উঠলো কারন গতবছর এর আশায় এসে ব্যর্থ হয়ে ফিরেছিলাম, এবার পেলাম। সবাইকে ফোন করে আমার লোকেশানে আসতে বললাম এবং বেশ কিছুক্ষন ঘুরে ঘুরে আমরা সবাই এই পাতি ছাতারের একটি ছোট দলের ছবি নিলাম, ডাক রেকর্ড করলাম। এবার ফিরতি যাত্রার পালা, হঠাত একটি ধূসর তিতিরের বড় ঝাঁকের দেখা মিললো, প্রায় ১০-১২ টি পাখি দৌড়ে ও উড়ে যাচ্ছে দূর দিয়ে। সবাই হামাগুড়ি দিয়ে ও গুড়ি মেরে এগিয়ে কিছুটা কাছে এগিয়ে গিয়ে ছবি নিলেন, সারাদিনের মধ্যে এই ছবিগুলোই ছিলো মানসম্মত। তবে খুব কাছ থেকে নেয়া পোরট্রেট সেদিন হয়নি। ফিরতি পথে চরের পাশ দিয়ে একটি খাড়ির মত তৈরী হয়েছে সেখান এদেখা মিললো নানা ধরণের সৈকতের পাখির। উল্লেখযোগ্য হচ্ছে কালো-মাথা কাস্তেচরা, তিলা লালপা, পাতি সবুজপা, ধূসর জিরিয়া, বিল বাটান, ছোট ও টেমিংকের চাপাখি সব বাবুবাটান, বাটানের ঝাঁক। আমরা নৌকার কাছে ফিরে হাত পা ধুয়ে অবশিষ্ট খাবার খেতে খেতে ফিরতি রওনা শুরু করলাম এবং একটানা চালিয়ে প্রায় দেড় ঘন্টা পরে অন্ধকারের মধ্যে নিরাপদে ঘাটে এসে পৌছলাম। ঘাটে নেমে চা খেয়ে চললাম হোটেলপানে। যার যার রূমে চেক ইন করে ফ্রেশ হয়ে ঘন্টাখানেক পরে বের হলাম রাজশাহী শহর ঘুরে দেখতে এবং ডিনার করতে। বিখ্যাত রহমানিয়া হোটেলে পছন্দমত খাবার দিয়ডীনার করলেন, এবং খেয়ে বেরিয়ে টং দোকান থেকে খেলাম চা। সবাই হোটেলে ফিরে গেলেন ঘুমানোর জন্য।   পরেরদিন সকালে উঠে আমরা হোটেল থেকে সোজা রওনা দিলাম রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের দিকে। বিজয় দিবস হওয়ায় প্রচুর র‍্যালি যাচ্ছিলো এবং বিকট শব্দে ভুভুজেলা বাজছিলো। ভয় হচ্ছিলো ক্যাম্পাসের টার্গেট পাখিগুলো পাবো তো? প্রথমেই আমরা পেয়ে গেলাম ক্যাম্পাসের প্রাইম টার্গেট ছোট বন পেঁচার। এই পাখিটিকে বাংলাদেশে এই একটি যায়গাতেই দেখা মেলে এবং এই একটি পাখিই রয়েছে। সবাই সময় নিয়ে বেশ ভালো ছবি তুললেন, এরপরে আমরা গেলাম স্টেডিয়ামের পাশে। সেখানে রেস্তোরা মত রয়েছে একটা, তার আশেপাশে শালিকের দল ভীড় জমায়। তার মধ্যে আমরা বেশ কয়েকটি বামুনি কাঠশালিকের দেখা পেয়ে গেলাম। সবাই বেশ ভালো ছবি পেলেন। এছাড়া পাশের পুকুরের উপরে তারে বসা পাওয়া গেল মেঘহও মাছরাঙা। এখানে আমরা সকালের নাশ্তাও সেরে নিলাম এবং রওনা দিলাম ক্যাম্পাসের পেছনের দিকে একটি যায়গায় যেখানে বেশ কিছু পুকুর রয়েছে, পানকৌড়ি, কুড়া ঈগল ইত্যাদি পাওয়া যায়। আমরা গিয়েই পেয়ে গেলাম ছট, দেশী ও বড় এই তিন জাতের পানকৌড়ির দেখা। দেশী পানকৌড়িটি বিরল, গ্রুপের অনেকের জন্যই সেটা নতুন পাখি হল। এছাড়া দেখা মিললো কুড়া ঈগল ও নিশিবকের। ফেরার

নদী ও ঘাসবনের পাখির খোঁজে রাজশাহীতে দুদিন – ডিসেম্বর ২০২৩ Read More »

শেরপুরে জলাভূমি ও গারো পাহাড়ের পাখির খোঁজে – ডিসেম্বর ০৮, ২০২৩

রাত এগারোটার পরপর আমাদের ট্রিপ শুরু হয়। শেষমুহুর্তে বৃষ্টি ও জলাবদ্ধতার কারনে একজন ট্রিপ মিস করলেন ফলে আমরা ৭ জনের টিম রওনা দিলাম। এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে চড়া হয়ে গেল অনেকের এই উপলক্ষ্যে। যাবার সময় আমরা গিয়েছিলাম টাংগাইল-মধুপুর-ধনবাড়ি র‍্যুট ধরে, বেশ কয়েকবার বিরতি দিয়ে এগোনোয় আমাদের পৌছতে পৌছতে সকাল হয়ে গেলো। শেরপুর শহর থেকে আমরা পরোটা-রুটি- ডিমভাজি-ডাল-মিষ্টি সহকারে নাস্তা সেরে রওনা দিলাম প্রথম গন্তব্যে। সেখানে পৌছে মাত্র মিনিট দশেকের মধ্যেই আমরা প্রথম ধলা-তলা শালিকের দেখা পেলাম তবে সবাই ছবি পেলেন না। আমরা আশেপাশের রাস্তা ধরে বিল ও মাঠগুলো খুজে দেখলাম, বিশেষ করে গবাদী পশুর আশেপাশে এই শালিক বেশি থাকে। বেশ কিছুক্ষন খোঁজার পরে পেয়ে গেলাম এবং এবার সবাই ছবি পেলেন। এরপরে প্রথম যায়গায় আবারও পাই এবং আরেক দফা ছবি হলো। এই বিলে আমরা আরও পেয়েছিলাম অম্বর চুটকি, খুড়ুলে পেঁচা, বড় পানকৌড়ি, মেটে-মাথা কূড়া ঈগল, কয়েক ঝাঁক উড়ন্ত তিলি হাঁস সব সাধারন বিভিন্ন ছোট পাখি।  এরপরে আমরা গিয়ে পৌছালাম আমাদের গারো পাহাড়ের স্পটে, সেখানে গাড়ি রেখে আমরা হেটে বনে প্রবেশ করলাম। প্রবেশের মুখের যায়গাটা বড্ড ভালো লাগে আমার। প্রথমেই পেলাম কালো-ঝুটি বুলবুল, কালো-ঘাড় রাজন ও তাইগা চুটকি। এছাড়া প্রচুর ধরণের প্রজাপতির দেখা মিলছিলো তবে পাখির ডাকাডাকি উপস্থিতি কমই মনে হলো। লাল মাটি ও শালবনের এই জঙ্গলে আমরা ঝোপঝাড় ও ছড়ার আশেপাশে বেশ কয়েক ঘন্টা ঘুরে বেড়ালাম। দেখা পেলাম মালাপেঙ্গার একটি মিশ্র ঝাঁক, এশীয় ডোরা পেঁচা, সবুজাভ ও সবুজ-চাদি ফুটকি, বড় কাঠঠোকরা, মধুবাজ সহ বিভিন্ন পাখির। ফেরার সিদ্ধান্ত নিলেন সবাই, আকাশ মেঘলা হওয়ায় বৃষ্টি হয় কিনা ভেবে। ফেরার পথে ক্ষুদে খাটোডানার গান শুনলাম সবাই বেশ কয়েকবার তবে বেটাকে স্পট করাই গেলোনা। সম্ভবত দুইটি ছিলো।  এছাড়া মেটে-পেট টেসিয়া আর কালো-গলা টূনটুনির ডাকও বোধহয় শুনেছি। তবে বেশিরভাগ পাখিই ভালোভাবে দেখা দেয়নি সেদিন। গাড়ির কাছে এসে নাস্তা করার সময় একটি তিশাবাজকে উড়তে দেখে মন ভালো হয়ে গেলো, সাদা-চোখ তিশাবাজ, যা গ্রুপের অনেকের জন্যই নতুন ছিলো। এছাড়া একজন এক ফাকে একটি শিকারী পাখি তুললেন যা পরে দেখা গেল ছিল একটা বসরা শিকরে, অইটা সবার জন্যই নতুন পাখি হত। কি বিশাল মিস।  এছাড়া ইন্দোচাইনিজ নীলকন্ঠও তুললেন কয়েকজন। শহরে একটানা চালিয়ে ফিরে এসে আমরা শেরপুর বার্ড কনজারভেশান সোসাইটির সভাপতি সুজয়দা ও কয়েকজন সদস্যের সাথে দেখা করলাম। তারা উপহার দিলেন তাদের প্রকাশিত কয়েক খন্ড করে ত্রৈমাসিক পত্রিকার কপি। দিনের আলো আরও ছিলো তাই আমরা শহরের পাশের একটি বিলে যাই, সেখানে গতবছর বেশ কিছু বান্টিং ও ঝাড়ফুটকি দেখা মিলেছিলো। তবে আগের দুদিন বৃষ্টি হওয়ায় সবকিছু কর্দমাক্ত থাকায় আমরা খুব ভালোভাবে ঘুরে দেখতে পেলাম না। পালাসি ফড়িং ফুটকি ডাকলো ও দেখা দিলো কিন্তু ছবির সুযোগ দেয়নি, কোন বান্টিং চোখে পড়েনি আমাদের। দূর দিয়ে একটি কাপাসি উড়ে বেড়াচ্ছিলো, সম্ভবত মুরগী কাপাসীর স্ত্রী পাখি। আমরা ফিরতি যাত্রা শুরু করলাম। আমরা শেরপুরের বিখ্যাত মান্নান হোটেল এ গিয়ে খাসির ভুনা খিচুড়ি, গরুর কালাভূনা সহকারে জম্পেশ খাওয়াদাওয়া করলাম। এবং একটানা চালিয়ে মাঝরাত নাগাদ ঢাকায় পৌছলাম, সকলকে তাদের বাসার কাছাকাছি নামিয়ে দিয়ে আমিও ফিরে গেলাম আমার বাসায়। দিনটা মন্দের ভালো ছিলো, প্রধান টার্গেট পাওয়া গেলেও ব্যক্তিগতভাবে আমি গারো পাহাড়ে আরও বেশি পাখি পাবো আশা করেছিলাম, যাইহোক।  টার্গেট পাখি (যা যা পাওয়া গেছে)ঃ Great Myna (সাদা-তলা শালিক)  Eurasian Tree Sparrow (ইউরেশীয় গাছ চড়ুই) Pale-blue Flycatcher (ধুসর নীল চুটকি) Little Pied Flycatcher (ছোট পাকড়া চুটকি) Siberian Blue Robin (সাইবেরীয় নীল দোয়েল) White-tailed Robin (সাদা-লেজ দোয়েল) Greater necklaced Laughingthrush (বড় মালাপেঙ্গা)  Lesser Necklaced Laughingthrush (ছোট মালাপেঙ্গা)  Rufous-necked Laughingthrush (লাল-ঘাড় মালাপেঙ্গা)  Common Green Magpie (সবুজ তাউরা)  Lesser Shortwing (ক্ষুদে খাটোডানা)  Asian Barred Owlet  Crested Goshawk (ঝুটিয়াল গোদাশিকরে) Black Baza (কালো বাজ)  White-eyed Buzzard (সাদা-চোখ তিশাবাজ) Besra Harrier Sp. 

শেরপুরে জলাভূমি ও গারো পাহাড়ের পাখির খোঁজে – ডিসেম্বর ০৮, ২০২৩ Read More »

অক্টোবর বিগ ডে ২০২৩ এ চট্বগ্রামে পাহাড়ি বন ও ঘাসবনের পাখির খোঁজে

ঢাকা থেকে আমরা বেশ কয়েকজন পাখিয়াল ১২ই অক্টোবর বৃহস্পতিবার রাতে চট্বগ্রামের পথে যাত্রা শুরু করি। মাঝে করেরহাট নামে একটা স্থানে বিরতি দিয়ে ছিলাম। ঘন কুয়াশায় আঁকাবাঁকা রাস্তা দিয়ে যেতে আমাদের বেশ এডভেঞ্চার লাগছিলো। হেয়কো বাজারে নাস্তা করার ইচ্ছা ছিলো কিন্তু কোনো হোটেল খোলা পাইনি। আমরা ভোর ৪ঃ১৫ তে হাজারিখিল পৌঁছে যাই, সেখানে গাড়িতে আমরা কয়েকজন রেস্ট নেই বাহিরে বেশ কুয়াশা ছিলো। তারপর কিছুটা আলো ফোটার পরে আমড়া বনের ভিতর ঢুকতে শুরু করি। প্রথমে আমরা চা বাগানে প্রবেশ করি ছড়া পাড় হয়ে কিছুটা আগাতেই বেশ কিছু পাখির ডাকাডাকি শুনতে থাকি, দুই জোড়া বড় হলদেপিঠ কাঠঠোকরা দেখা পাই কি সুন্দর ডিস্প্লে করছিলো তারপর একে একে বাংলা কাঠঠোকরা, নীলকন্ঠ, কালাঘাড় বেনেবউ, ছোট সোহেলি দেখি, কিছুটা আগাতেই আমরা দেখা পাই মথুরা, একটু দূর থেকে ছবি তুলে সামনে এগোতে থাকি আমাদের সামনে থেকে একটা পাখি লাফ দিয়ে চা গাছের ভিতরে ঢুকে গেলো আর সেটি ছিলো নীলঘাড় শুমচা যদিও কেউ ছবি তুলতে পারিনি।চা বাগান থেকে ফেরার পথে বন মোরগ, তুর্কি বাজ, বসরা শিকরে, তিলানাগ ঈগল এর দেখা পেলাম। এছাড়া পরে ছবি চেক করে দেখা গেল গ্রুপের একজন অতিবিরল কাক-ঠুটি ফিঙের ছবি তুলেছেন,  চা বাগান থেকে বের হয়ে একটা ছাউনিতে আমরা কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিয়ে অন্ধকার ট্রেইলে ঢুকলাম এই ট্রেইলের শেষে একটা পাড়া আছে। এই ট্রেইলে পেলাম ছোট মাকড়মার, সাদাগলা লেজনাচানি, সিন্দুরে মৌটুসি, ব্রোঞ্জ ফিঙে। এরপর ঝর্ণা ট্রেইলে দিয়ে হাঁটা শুরু করলাম । ছড়াতে নেমে সবাই খুব আনন্দ পেয়েছে সাথে এডভেঞ্চার ফিল তো আছেই। ট্রেইলে হেটে হেটে আমরা মথুরা, ঝুটিয়াল গোদাশিকরে, কালোপিঠ চেরালেজ, বেশকিছু ছোট পাখি দেখতে দেখতে ট্রেইল থেকে বের হলাম। হাতে সময় থাকায় আমরা সবাই মিলে সিদ্ধান্ত নিয়ে পাহাড়ের রাস্তা ধরে উপরে উঠতে শুরু করি , কিসুটা উঠার পর একটু বিশ্রাম নেই তখন বড় বনলাটোরা, সাদাগলা বুলবুলি, সাদা ভ্রু কুটিকুড়ালি পেয়ে যাই। আমাদের টার্গেট ছিলো লালমাথা কুচকুচি, সবুজতাউড়া দেখার, তোলার কিন্তু পেলাম না। এরপর আমরা পাহাড় বেয়ে নেমে আসি নিচে তারপর আমরা ঘাসবনের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হই। বিকেল বেলা সেখানে প্রচুর দর্শনার্থীর উপস্থিতি থাকায় হলদে-পেট প্রিনিয়ার দেখা পাওয়া যায়নি। তাই সন্ধ্যার পরপর সবাই মিলে চট্বগ্রামের একটি বিখ্যাত মেজবানি গোশতের রেস্টুরেন্টে যেইয়ে ভরপেট খাওয়াদাওয়া করে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দেই। সকলেই কমবেশি নতুন পাখির দেখা পেয়েছিলো সেদিন। তবে বিকেলের প্রিনিয়ার দেখা না পেয়ে সবার মন একটু খারাপই ছিলো। মাঝরাত নাগাদ সবাইকে গাড়ি তাদের বাসার কাছে নামিয়ে দেয়।  হাজারিখিলের ভেতরে পাহাড়ি ছড়ায় হাজারিখিল বনের শুরুতে চা বাগানে বার্ডিংরত অবস্থায় সবাই টার্গেট পাখির প্রজাতি (সবগুলোর দেখা পাওয়া নিশ্চিত নয়):  লাল বনমোরগ  মথুরা সবুজ তাউরা  কয়েক ধরনের পেঙ্গা/লাগিংথ্রাশ বিভিন্ন ধরনের বুলবুল, বিশেষ করে জলপাইরং বুলবুল ও ছাইরঙা বুলবুল বিভিন্ন জাতের হরিয়াল ও ঘুঘু কয়েক প্রজাতির দুর্লভ ছাতারে ও কাস্তে ছাতারে বিভিন্ন প্রজাতির দেশী ও পরিযায়ী চুটকি ও ফুটকি পাহাড়ি বনের বিভিন্ন প্রজাতির পাখি বিভিন্ন প্রজাতির মৌটুসী, মাকড়মার ও ফুলঝুরী বিভিন্ন প্রজাতির টিয়ে বিভিন্ন প্রজাতির ফিঙে ও হরবোলা ইত্যাদি দুই থেকে তিন প্রজাতির প্রিনিয়া, বিশেষ করে হলদে-পেট প্রিনিয়া এগুলো সহ আশা করা যায় সারাদিনে ৭৫-৮০ প্রজাতির পাখির দেখা পাওয়া যাবে।   

অক্টোবর বিগ ডে ২০২৩ এ চট্বগ্রামে পাহাড়ি বন ও ঘাসবনের পাখির খোঁজে Read More »

ট্রিপ রিপোর্ট – সুন্দরবন (হারবাড়িয়া ও করমজল) সেপ্টেম্বর ২০২৩

বৃহস্পতিবার রাতে আমরা ঢাকার বিভিন্ন পয়েন্ট থেকে অতিথীদেরকে তুলে নিয়ে রওনা দেই এবং পদ্মা সেতু হয়ে মংলা পৌছাই। মাঝে গোপালগঞ্জের একটি স্থানে বিরতি দিয়েছিলাম।  ঘাটে পৌছে আমাদের আগে থেকে ঠিক করে রাখা বোটে উঠে পড়লাম সবাই, তখন পুরো ভাটার সময়, মনটা আনন্দিত হয়ে উঠলো যে আমাদের হারবাড়িয়া যাওয়া সহজ হবে, তবে আকাশে ঘন কালো মেঘের আনাগোনা আর ঘনঘন বিদ্যুৎ চমকানো দেখে ভাবছিলাম এবারের সুন্দরবন ভ্রমণও কি বৃষ্টিতে ভেসে যেতে যাচ্ছে? এখান থেকে রাজশাহীর কয়েক ভাই আমাদের সাথে যোগ দিলেন। তারা আগেরদিন রাতে এসে পৌছেছিলেন। ফজর নামাজ পড়ে আমরা আমাদের সকালের নাশতা পার্সেল নিয়ে নিয়েছিলাম। বোট একটানা দক্ষিণে চলতে লাগলো নদীর এক ধার ঘেঁষে। বৃষ্টি কিছুটা কমায় আমরা বোটের ছাদে উঠে  এদিক ওদিক দেখতে থাকলাম। একটু দূর দিয়ে উড়ে যেতে দেখলাম কালো-মাথা কাস্তেচরা, নদীর ধারে মরা গাছের গুড়ির উপরে বসা দেখলাম কালো-টুপি মাছরাঙা, সবাই এক্সাইটেড হয়ে ছবি তোলা শুরু করলেন, তবে আলো না থাকায় ভালো ছবি হয়নি। এরপরে হারবাড়ীয়ার কাছে পৌছে আমরা বোটের ছাদে বসেই পরোটা-ডিমভাজি-ডাল-সবজি দিয়ে নাশতা সেরে নিলাম এবং খালে ঢুকে গেলাম। ভাটার কারনে খালের পানি কম ছিলো ফলে আমাদের সুবিধাই হল।  আমরা খাল ধরে প্রায় দুই কিলো ভেতরে গিয়েছিলাম এবং এরপরে ঘুরিয়ে ফেরত রওনা দেই। উল্লেখযোগ্য পাখির মধ্যে পাওয়া গেলো বাদামী-ডানা মাছারাঙা কয়েকটি, সাদা-গলা মাছরাঙা, সাদা-গলা নীল চুটকি, বন খঞ্জনা, ইউরেশীয় পাপিয়া, কালো-ঘাড় বেনেবৌ ইত্যাদি।  Ruddy Kingfisher Black-naped Oriole Speckled Piculet Brown-winged Kingfisher Plaintive Cuckoo Osprey Asian Dwarf Mudskipper Collared Kingfisher Forest Wagtail খালের অংশ শেষ করে আমরা চলে আসি হারবাড়ীয়া, এখানে এসে বন বিভাগের গার্ড নিয়ে ও বোট ফী দিয়ে আমরা ট্রেইলে প্রবেশ করলাম। পাখির উপস্থিতি বেশ কমই ছিলো। তবে ট্রেইলে উঠেই আমরা দেখা পেলাম লাল মাছরাঙার, ট্রেইলের রেলিং এর উপরেই বসা ছিলো। গার্ড ভাই পাশে একটা যায়গা দেখালেন যেখান দিয়ে দুদিন আগে বাঘমামা পার হয়েছে, পায়ের ছাপ রয়েছে এখনো। ট্রেইলে আমরা উল্লেখযোগ্য পাখির মধ্যে পেলাম আরও ইউরেশীয় পাপিয়া, করুন পাপিয়া কয়েকটি, আরও সাদা-গলা মাছরাঙা ইত্যাদি। এরপরে হারবাড়িয়ার পুকুরপাড়ে বসে ছোট মাছেদের ফুট-স্পা নিয়ে ও পুকুরের মাঝখানের কাঠের ঘরে কিছুক্ষন সময় কাটিয়ে আমরা বেরিয়ে পড়লাম। এবার আমরা জোয়ার পেলাম, তাহলে আমাদের করমজল যেতে সহজ হবে, আকাশে আলোর অবস্থাও বেশ ভালো ছিলো তখন। বোটের উপরে বসে ঝিমিয়ে নিতে থাকলাম। পথে নদীর ধারে গাছে বসা পেলাম বড় র‍্যাকেটফিঙে, মাছমুরাল ও তিলা নাগ ঈগল। করমজল পৌছে দেখি প্রচুর লোকের উপস্থিতি সেখানে।  আমরা দ্রুত টিকিট কেটে ট্রেইলে ঢুকে পড়লাম, শুরুতেই ভালো ছবি পাওয়া গেল তিলা নাগ ঈগলের। ট্রেইলে উল্লেখযোগ্য পাখির মধ্যে আছে বন খঞ্জনা, তিলা কুটিকুড়ালি, ডোরা-পাখ চুটকি লাটোরা ইত্যাদি। এরমধ্যে একও পশলা ঝুম বৃষ্টি নামলো, আমরা সবাই রেইনকোট পঞ্চো পরে বসে বসে তা উপভোগ করলাম। আর জোয়ারের সময় হওয়ায় ট্রেইলের নিচের বনতল পুরোটাই পানিতে নিমজ্জিত ছিলো। এই অবস্থা এর আগে আমি পাইনি।  Tiger Pugmark at Harbaria Birding at Karamjal Trail Harbaria Group Photo Group Photo in Canal near Harbaria যাহোক বৃষ্টি শেষে আমরা দুপুরের হালকা খাবার শেষ করে আবারও পাখি খুজতে লাগলাম। এরমধ্যে বর্ধিত ট্রেইলের এক যায়গায় এসে দেখা পাওয়া গেলো বিরল এশীয় বামন চিড়িং মাছ এর। যা প্রায় সবার জন্যই নতুন ছিলো আর এই প্রজাতির মাছ দারুন সুন্দর দেখতে আর এদেশে খুব বিরল। শেষ বিকেল পর্যন্ত আমরা ট্রেইলে ছিলাম, শেষ সময়ে পাওয়া গেলো ডোরা-বুক ও বড় কাঠঠোকরা। এছাড়া কালো-কপাল বনমালিও দেখা গেলো তবে সবাই তুলতে পারেননি। সন্ধ্যার আগে ফিরতি রওনা দেয়ার সময় সবাই যখন ব্যাগ গুছিয়ে প্রায় রেডি তখন হঠাত টিকিট কাউন্টারের পাশেই ঘাসের মধ্যে একটি বান্টিং এর দেখা পাওয়া গেলো, সে একমনে খাবার খেয়ে চলেছে। সবাই আবারও ক্যামেরা বের করে ছবি নিলেন এবং এরপর আমরা ফিরতি রওনা দেই। অভিজ্ঞদের দেখিয়ে জানা গেলো পাখিটি একটি বিরল কালো-মাথা চটক। খালের মুখে আবার দেখা পেলাম বাদামী-ডানা মাছরাঙার। ফেরার সময় পথই যেন আগায় না, মংলা ঘাটে পৌছতে বেশ অন্ধকার নেমে আসলো। আমরা এসেই দ্রুত গাড়িতে উঠে ফিরতি রওনা দিলাম। জ্যাম ও ভাঙা রাস্তা পেরিয়ে খুলনা জিরো পয়েন্ট পৌছতে বেশ সময় লেগে গেল। রাজশাহী ও কুষ্টিয়ার কয়েকজন এখান থেকে আলাদা হয়ে গেলেন, রইলাম আমরা ঢাকাবাসী কয়েকজন। কামরুলে খাবার শেষ হয়ে যাওয়ায় পাশের আরেক বিখ্যাত আল আরাফাত এ আমরা রাতের খাবার খেলাম। মেনুতে ছিলো সাদা ভাত, চুইঝাল দিয়ে গরুর গোশতের ভূনা, সবজি এবং ডাল। সবার শেষে সাতক্ষীরার দই এবং চা। খাওয়া শেষ করে আমরা একটানা না থেমে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দেই এবং সাড়ে বারোটা নাগাদ ঢাকায় ঢুকি। আগেরদিনের রুট অনুযায়ী গাড়ি সকলকে ঢাকার বিভিন্ন পয়েন্টে নামিয়ে দেয়। আমরা নিয়মিত দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে একদিন ও একাধিক দিনের ট্রিপ আয়োজন করছি। যাদের সপ্তাহে মাত্র একদিন ছুটি তারাও চাইলে আমাদের সাথে বার্ডিং এ যেতে পারেন। এছাড়া সামনে নভেম্বর মাসের ১০-১১-১২ তারিখে আমাদের তিনদিনের সুন্দরবন ট্রিপ রয়েছে। তাতেও যোগ দিতে পারেন। যোগাযোগ করতে পারেন নিচের নম্বরে বুকিং এর জন্য ফেসবুক বা হোয়াটস্যাপে যোগাযোগ করুন প্লীজ Facebook Whatsapp টার্গেট পাখির প্রজাতি যা যা ছিল (বোল্ড করাগুলো আমরা পেয়েছি):  ধলা-পেট সিন্ধু ঈগল ছোট মদনটাক  কালো-টুপি মাছরাঙা বাদামী-ডানা মাছরাঙা লালচে মাছরাঙা নীল-কান মাছরাঙা  তিলা কুটিকুড়ালি পাতি কাঠঠোকরা ডোরা-বুক কাঠঠোকরা কমলা-পেট ফুলঝুরি  বহুরুপী শিকরে ঈগল। পরিযায়ী বিভিন্ন পাখি নদীর ধারের কাদায় বিভিন্ন সৈকতের পাখি এগুলো সহ আশা করা যায় সারাদিনে ৬০-৭০ প্রজাতির পাখির দেখা পাওয়া যাবে।  দিনশেষে হয়েছিলো মোট ৬১ প্রজাতি।  টার্গেট বন্যপ্রানী (সবগুলো দেখা পাওয়া নিশ্চিত নয়):  নদীর ডলফিন/শুশুক   রামগদি গুইসাপ  চিত্রা হরিণ মায়া হরিণ  লাল বানর  বিভিন্ন বাহারী মাছ ও কাকড়া।  আমাদের যাত্রার ম্যাপ, সকাল থেকে দুপুর হারবাড়িয়া, এরপরে করমজল।

ট্রিপ রিপোর্ট – সুন্দরবন (হারবাড়িয়া ও করমজল) সেপ্টেম্বর ২০২৩ Read More »

Scroll to Top