গারো পাহাড়ের পাদদেশে উদ্ধার হল প্রাচ্যের তামাটে পেঁচা – এদেশে তৃতীয়বার

বাংলাদেশের পাখির তালিকায় যোগ হওয়া সর্বশেষ পেঁচা জাতীয় পাখি হচ্ছে প্রাচ্যের তামাটে পেঁচা, যেটা পাওয়া গেছিলো গত ২০২০ সালের আগস্ট মাসের তিন তারিখে বান্দরবন জেলার বগালেক এলাকা থেকে। খবরটি জেনে আনন্দিত হয়েছিলাম যে অবশেষে পাখিটি বাংলাদেশের তালিকায় যোগ হচ্ছে, কারন আমার জানামতে পাখিটিকে এদেশে আগেও দেখা গেছে। 

২০১৯ সালের কোন এক সময়ে রাঙামাটি জেলা থেকে একটি পাখির ছবি দেখেছিলাম সেখানের একজন স্থানীয় সাংবাদিক ভাই জনাব সমীর মল্লিকের মাধ্যমে, তবে সেটিও ছিলো বন্দী অবস্থায় এবং পরে ছেড়ে দেয়া হয়েছিলো, উদ্যোগের অভাবে সেবার পাখিটি আমাদের দেশের পাখির তালিকায় স্থান পায়নি। 

এছাড়া মনে পড়ছে যে AVIFAUNA OF PASHUKHALI AND GAJDHAR VILLAGE IN NETROKONA শীর্ষক একটি গবেষণাপত্রেও নেত্রকোনার এক গ্রামে এই পেঁচার উপস্থিতির কথা উল্লেখ ছিলো। গবেষণাটি লিখেছিলেন জনাব শওকত আলী খান সাহেব একবিংশ শতাব্দীর শুরুর দিকে। 

আজকে ফেসবুক ঘাটতে গিয়ে একটি পোস্টে চোখ আটকে গেলো। ভার্সিটির এক পাখিপ্রেমী বড়ভাই, যার বাড়ি নেত্রকোনায়, তিনি লক্ষী পেঁচা উদ্ধার শিরোনামে কিছু ছবি ও ভিডিও পোস্ট করেছেন। নেত্রকোনায় সবচেয়ে উত্তরের উপজেলা কলমাকান্দার গারো পাহাড়ের পাদদেশে টিলা মত যায়গায় একটি চায়ের দোকানের সামনে ঝুলানো খাঁচায় একটি পেঁচা দেখতে পান তিনি ও তার এলাকার এক ভাই। দোকানদার জানায় তারা আগেরদিন পেঁচাটিকে বন থেকে ধরেন এবং মজার ছলে এনে খাঁচায় আটকে রেখেছেন। দোকানদারকে বোঝানোর পরে তিনি পেঁচাটিকে ছেড়ে দিতে রাজি হন এবং নিজ হাতেই ছেড়ে দেন।

ছবিগুলো নেত্রকোনার কলমাকান্দার গারো পাহাড় এলাকা থেকে তুলেছেন জনাব আনিসুজ্জামান বাবলা, পাখিটি উদ্ধার ও অবমুক্তকরণের কৃতিত্ব পুরোটাই তার

পেঁচাটি লক্ষী পেঁচা (Common Barn Owl) নং বরং আমাদের দেশের অতি বিরল প্রাচ্যের তামাটে পেঁচা বা Oriental Bay Owl (Phodilus badius)। আকারে লক্ষ্মীপেঁচার চেয়ে সামান্য ছোট, সারাদেহ গাড় তামাটে রঙ এর, মাথা ত্রিকোনাকার এবং কালো চোখগুলো বেশ বড় বড়। স্বভাবে এরা অত্যন্ত লাজুক, আমাদের দেশের পাহাড়ি বনাঞ্চলে হয়তো খুব অল্প সংখ্যায় বাস করে।  ছবিসহ একে এদেশে এই তৃতীয়বার পাওয়া গেলো। যা অত্যন্ত আনন্দের খবর, কারন এই পেঁচা তাহলে আমাদের দেশে কমপক্ষে তিনটি জেলায় বাস করে। 

আর দুঃখের খবর হচ্ছে আমাদের দেশের প্রচুর মানুষ এখনও পর্যন্ত মজার ছলে!! বা ইচ্ছা করেই বন্য পাখি ধরে খাঁচায় আটক করার প্রবণতা লালন করে। যা ২০১২ সালের বাংলাদেশের বন্যপ্রাণী আইন অনুযায়ী দন্ডনীয় অপরাধ এবং পরিবেশ ও বিরল/বিপন্ন পাখি ও বন্যপ্রাণীদের জন্যও অত্যন্ত ক্ষতিকর। তাই আসুন আমরা সকলে চেষ্টা করি দেশের বন্যপ্রাণী ও বুনো পাখিদের প্রতি যত্নশীল হতে। 

 

1 thought on “গারো পাহাড়ের পাদদেশে উদ্ধার হল প্রাচ্যের তামাটে পেঁচা – এদেশে তৃতীয়বার”

  1. You really make it seem so easy with your presentation however I find this matter to be really one thing that I feel I’d by no means understand. It seems too complex and extremely vast for me. I am having a look ahead on your next publish, I¦ll try to get the hold of it!

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top