পাখি সংরক্ষণ

গারো পাহাড়ের পাদদেশে উদ্ধার হল প্রাচ্যের তামাটে পেঁচা – এদেশে তৃতীয়বার

নেত্রকোনা জেলার কলমাকান্দা উপজেলায় গারো পাহাড়ের পাদদেশে উদ্ধার হলো অতিবিরল প্রাচ্যের তামাটে পেঁচা। এর আগে বাংলাদেশে নিশ্চিতভাবে একে মাত্র একদুইবার দেখা গেছে। পাখিটিকে উদ্ধারের পরে আবার প্রকৃতিতে ছেড়ে দেয়া হয়।

গারো পাহাড়ের পাদদেশে উদ্ধার হল প্রাচ্যের তামাটে পেঁচা – এদেশে তৃতীয়বার Read More »

শেরপুর বার্ড কনজারভেশন সোসাইটি

শেরপুর বার্ড কনজারভেশন সোসাইটি বাংলাদেশ বার্ড ক্লাবের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা শ্রদ্ধেয় ইনাম আল হকের অনুপ্রেরণায় শেরপুর জেলার একদল পাখিপ্রেমী ২০১৮ সালের ১৭ই ফেব্রুয়ারী শেরপুর বার্ড কনজারভেশন সোসাইটি গঠন করেন। সংগঠনটি প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে জেলার পাখি ও জীববৈচিত্র রক্ষায় নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছে। গারো পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদ বিধৌত শেরপুর জেলার আবাসিক, পরিয়ায়ী, পান্থপারিযায়ী, অনিয়মিত পাখির তালিকা তৈরী, পাখি ও বন্যপ্রাণীর আবাস্থল রক্ষা, পাখি ও বন্যপ্রাণী শিকার ও বিক্রয় বন্ধ, মানুষের মাঝে প্রকৃতি ও জীববৈচিত্র সংরক্ষণে সচেতনতা তৈরী, বাৎসরিক নিউজলেটার ‘আমাদের পাখি’ প্রকাশ, ‘পাখি দেখি গাছ চিনি’ কর্মসূচি ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ‘পাখিমেলা’র আয়োজন করে আসছে। ফলে সাধারণও মানুষও প্রকৃতিতে পাখি ও বন্যপ্রাণী থাকার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করছ সংগঠনের সদস্যরা পাখির আলোকচিত্র ধারণ করে বিভিন্ন মিডিয়ায় প্রকাশের কারণে আজ শেরপুর জেলা দেশের পাখিপর্যবেক্ষকদের নজরে এসেছে। জেলার পাহাড়ি বন, বিল ও নদের তীরে এমন অনেক পাখি ও বন্যপ্রণীর সন্ধান তারা পেয়েছে যা পূর্বে শেরপুর জেলাতে এ সকল প্রাণীর অস্থিত্ব সম্পর্কে কেউ অবহিত ছিলোনা। সংগঠনের সদস্যদের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ ও স্কুলের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, সরকারী বেসরকারী চাকুরিজীবী, ব্যবসায়ী যেমন রয়েছেন তেমনি কৃষক, রিকশাচালক, সিএনজিচালক, রাজমিস্ত্রী, জেলে পেশার মানুষও রয়েছেন। সকল পেশার মানুষ এগিয়ে আসলেই এই প্রকৃতি ও জীবজগৎ রক্ষা পাবে বলেই এ সংগঠনের সদস্যরা মনে করেন।  সংগঠনের এসকল কাজের স্বীকৃতি স্বরূপ ২০১৯ সালে প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে সম্মাননা ও ২০২৩ সালে জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রানীবিদ্যা বিভাগ কর্তৃক আয়োজিত ‘পাখিমেলা ২০২৩’ এ বিশেষ সম্মাননা স্মারক ও সনদপত্র লাভ করে।

শেরপুর বার্ড কনজারভেশন সোসাইটি Read More »

জলচর পাখির প্রজনন কলোনী সংরক্ষণ প্রজেক্ট

বাংলাদেশের উত্তরের চারটি বিভাগের ২৪টি জেলায় জলচর পাখির প্রজনন কলোনী খুজে বের করে সেগুলো থেকে তথ্য ও উপাত্ত সংগ্রহ করে, এলাকাবাসীদের সাথে কথা বলে এবং কলোনীগুলোর বর্তমান অবস্থা ও হূমকিসমূহ খুজে বের করার জন্য কাজ করছেন বাংলাদেশের একজন উদ্যোমী পক্ষিবিশারদ আল্লামা শিবলী সাদিক ও তার দল। এই প্রজেক্ট থেকে পাওয়া তথ্য ও উপাত্ত নিয়ে পরবর্তীতে বাংলাদেশের বন বিভাগ ও পরিবেশ অধিদপ্তরের মাধ্যমে সেই কলোনীগুলোর হুমকিসমূহকে কিভাবে কমিয়ে আনা যায়, পাখিগুলো কিভাবে নিরাপদে প্রজনন করতে পারে এ ব্যাপারে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহন করা যাবে। এই গবেষনাটি দুইবছর চলার পরে ইতোমধ্যে উক্ত জেলাসমূহে সাড়ে তিনশোর বেশী জলচর পাখির কলোনী শনাক্ত করতে সক্ষম হয়েছে এবং শীঘ্রই একটি রিপোর্ট ও বেশ কিছু গবেষনাপত্র প্রকাশিত হবে বলে আশা করা যাচ্ছে।  আমার সুযোগ হয়েছিলো এই গবেষনার আওতায় বেশ কয়েকটি জেলায় তথ্য সংগ্রহের কাজে অংশ নেয়ার।  একটি বক কলোনির গাছে দাঁড়িয়ে পুরুষ বড় বক তার বাহারী পালক প্রদর্শন করছে

জলচর পাখির প্রজনন কলোনী সংরক্ষণ প্রজেক্ট Read More »

বাংলাদেশের পাখিবৈচিত্র

বাংলাদেশের মত ছোট্ট একটি দেশে এপর্যন্ত প্রায় ৭২০+ প্রজাতির পাখি পাওয়া গেছে, এটা একটা প্রায় অবিশ্বাস্য ব্যাপার না ? ভৌগলিক ভাবে বাংলাদেশ ভারতীয় ও ইন্দো মালয়ী হটস্পটের মাঝামাঝি অবস্থিত হওয়ায় এমনটি সম্ভব হয়েছে। বাংলাদেশে পাখির মুল প্রতিবেশ হচ্ছে দেশের বনভূমিসমূহ। দেশের সিলেট ও চট্রগ্রাম বিভাগের পাহাড়ি বনাঞ্চলে, সুন্দরবনে মূলত বনের পাখিদের প্রধান অংশ পাওয়া যায়, এসব বন সাধারনত মিশ্র চিরসবুজ প্রকৃতির। এছাড়া ঢাকা, ময়মনসিংহ ও রংপুর বিভাগের ছড়ানো ছিটানো মিশ্র পত্রঝরা বনে ও সারাদেশের গ্রামীন বনাঞ্চলে প্রচুর শাখাচারী পাখির দেখা মেলে। এদের মাঝে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে বুলবুল, হরবোলা, পাতা ফুটকি, চুটকি, মৌটুসী, ফুলঝুরি ইত্যাদি পাখিরা। বাংলাদেশ একটি নদীমাতৃক দেশ হওয়ায় এবং এসব নদীর ভাটিতে প্রচুর পানি প্রবাহিত হয়, ফলে এদেশে নদীগুলোর পাশাপাশি প্রাকৃতিক ভাবেই প্রচুর বিল, হাওড়, বাওড় ও জলাশয়ের সৃষ্টি হয়েছে। এসব জলাশয়ে আমরা দেশের সিংহভাগ জলচর পাখিদের দেখে থাকি। এছাড়া উপকূলে সাগর ও নদীর মোহনায় চরাঞ্চলেও জলচর পাখিদের হটস্পট সৃষ্টি হয়েছে। এসব পাখিদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে রাজহাঁস, হাঁস, মানিকজোড়, গুড়গুড়ি, ঝিল্লি, বাটান, চ্যাগা, টিটি, গাংচিল, পানচিল ইত্যাদি পাখিরা। আরেকটি গুরুত্বপুর্ণ পাখির প্রতিবেশ হচ্ছে ঘাসবন। ঘাসবনের সাথে নদী/খাল এর সম্পর্ক রয়েছে বেশ। বহমান পানির সাথে প্রচুর পলি/বেলেমাটি/বালুর চর সৃষ্টি হয়েছে সারাদেশে ও উপকূল এলাকায়। এসব যায়গায় বিভিন্ন প্রজাতির ও আকৃতির ঘাস জন্মে। এসবের মধ্যে সৃষ্টি হয়েছে এক অনন্য প্রতিবেশ এবং তাতে বাস করে দেশের পাখি বৈচিত্রের এক বড় অংশ। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য পাখিরা হল তুলিকা, ভরত, চটক, নলফুটকি ও ঝাড়ফুটকি, প্রিনা, ফিদ্দা ইত্যাদি পাখিরা। এছাড়াও আমাদের দেশের সকল প্রতিবেশ এর পাখিদেরকে শিকার করে খায় এমন একদল পাখি রয়েছে যাদের আমরা বলি শিকারী পাখি। এরা বিভিন্ন প্রতিবেশে নিজেদের খাপ খাইয়ে নিয়েছে আর সেসব পরিবেশে বিভিন্ন প্রাণী-পাখিকে শিকার করে খায়। আমাদের দেশের দক্ষিণে অবস্থিত বঙ্গোপসাগর এর গভীরে কিছু সাগরের পাখি পাওয়া যায় যারা স্থলভাগে খুব কমই আসে। এরাও আমাদের দেশের পাখি বৈচিত্রের অংশ। আমাদের দেশে এরকম বিভিন্ন প্রতিবেশে এপর্যন্ত পাওয়া যাওয়া সকল পাখিকেই আমাদের দেশের পাখির তালিকায় স্থান দেয়া হয়েছে। বেশ কটি বিলুপ্ত হয়ে গেছে আবার প্রতিবছর নতুন নতুন পাখি আমাদের দেশের তালিকায় যুক্তও হচ্ছে। বাংলাদেশে পাখিচর্চা করেন মূলত প্রাণীবিদ্যা বিভাগের শিক্ষার্থীরা, সাথে পাখিকে ভালোবেসে অন্য ব্যাকগ্রাউন্ডের প্রচুর মানুষ পাখি দেখা ও ছবি তোলাকে শখ/নেশা হিসেবে গ্রহণ করে এদেশে পাখি গবেষনায়, হিসেব রাখায় ও পাখি সংরক্ষণে নিরন্তর কাজ করে চলেছেন। এই পৃথিবী ও পরিবেশ রক্ষায় পাখিদের ভূমিকা অগ্রগণ্য। তাই আসুন আমরা পাখি দেখি, তাদের ভালোবাসি এবং তাদের সংরক্ষণে যে যার স্থান থেকে চেষ্টা করি।

বাংলাদেশের পাখিবৈচিত্র Read More »

Scroll to Top