ফটো লাইফার

বাংলাদেশের মুনিয়া

বাংলাদেশে মোট ছয় প্রজাতির মুনিয়া পাওয়া যায় চাঁদি-ঠোট মুনিয়া Indian Silverbill Euodice malabarica আমাদের দেশের আবাসিক পাখি মুনিয়াদের মধ্যে এই সদস্যকে সারাদেশেই পাওয়া যায়। এর আরেক নাম হচ্ছে White-throated Munia। এর লেজের আগায় একটু চেরা থাকে। ঝোপঝাড় বিশিষ্ট খোলা প্রান্তর ও ঘাসবনে সারাদেশেই পাওয়া যায়। বাবুই এর বাসা থেকে প্রায়ই বাসা বানানোর উপকরন চুরি করে থাকে। এর প্রথম ছবি তুলি ঢাকার অদূরে কেরানীগঞ্জ থেকে। ঢাকার আশেপাশের হাউজিং প্রজেক্টগুলোতে এদের সংখ্যা বেশ। বিশ্বে ন্যুনতম বিপদগ্রস্থ এদেশে সহজে দেখা মেলে চাঁদি-ঠোট মুনিয়া, ঢাকা পাখিটির ডাক শুনুন তিলা মুনিয়া Scaly-breasted Munia Lonchura punctulata আমাদের দেশের আবাসিক পাখি এই মুনিয়াটিও সারাদেশে প্রচুর পাওয়া যায়, বন্য পাখি শিকারীদের অন্যতম বড় শিকার এই তিলা মুনিয়া। একে ধরে বিভিন্ন রঙ লাগিয়ে বিদেশী পাখি বলে বিক্রি করে দেয়ার প্রবনতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে তাই উদ্ধার হওয়া মুনিয়াদের মাঝে এর সংখ্যাই মনেহয় বেশী। এর বুক-পেটে তিলের মত অসংখ্য ছিটে রয়েছে বলে এর এমন নাম। এই মুনিয়ার আরেক নাম হচ্ছে Spotted Munia. ঢাকায় কেরানীগঞ্জে এর প্রথম ছবি তুলি। এক ঝাঁকে কয়েকশো মুনিয়া দেখেছিলাম সেবার। ওরকম বড় ঝাঁক কেরানিগঞ্জে আর দেখিনি। বিশ্বে ন্যুনতম বিপদগ্রস্থ এদেশে সহজে দেখা মেলে তিলা মুনিয়া, জামালপুর পাখিটির ডাক শুনুন সাদা-কোমর মুনিয়া White-rumped Munia Lonchura striata আমাদের দেশের আবাসিক পাখি এই প্রজাতির মুনিয়াটি একটু আলাদা প্রতিবেশে বাস করে। এদেরকে গ্রামীণ বন এবং দেশের বিভিন্ন বনাঞ্চলেও দেখা যায়। তবে অন্যান্য মুনিয়ার মতই এরা বনের ধারের ঘাসের বীজ ও শস্যের ক্ষেতে খাবারের সন্ধানে আসে। আমি এর প্রথম ছবি তুলি ঢাকায় জাবি ক্যাম্পাসে, তবে প্রথম দেখেছিলাম সম্ভবত সাতক্ষীরায়। সেখানে এটি খুবই সুলভ। ডানা একটু উচু করলেই এর সাদা কোমরটা দেখা যায়।  বিশ্বে ন্যুনতম বিপদগ্রস্থ এদেশে সহজে দেখা মেলে ধলা-কোমর মুনিয়া, ঢাকা পাখিটির ডাক শুনুন তিন-রঙা মুনিয়া Tricolored Munia Lonchura malacca আমাদের দেশের আবাসিক পাখি এই প্রজাতির মুনিয়াকে আগে কালো-মাথা মুনিয়া ডাকা হত। পরে আলাদা নাম হয়েছে তিনরঙা মুনিয়া। কারন এর দেহে মূলত তিনটি রঙ রয়েছে। চেস্টনাট মুনিয়ার ঝাঁকে বা আলাদা সাধারনত একে দেখা যায় তবে সংখ্যায় বেশি নয়। সারাদেশে এদের বিস্তৃতি রয়েছে কমবেশি তবে বড় নদীর ধারের ঘাসবনে বেশী দেখা মেলে। অপ্রাপ্তবয়স্ক পাখিগুলো চেস্টনাট মুনিয়ার মতই লাগে। আমি ঢাকার কেরানীগঞ্জে এর প্রথম ছবি তুলি। বিশ্বে ন্যুনতম বিপদগ্রস্থ এদেশে মাঝেমাঝে দেখা মেলে তিন-রঙা মুনিয়া, ঢাকা খয়েরী মুনিয়া Chestnut Munia Lonchura atricapilla আমাদের দেশের আবাসিক পাখি এরও পূর্বের নাম হচ্ছে কালো-মাথা মুনিয়া বা Black-headed Munia. পরে ভাগ হয়ে দুটি প্রজাতি হয়েছে। এই মুনিয়াটিকে দেশের সর্বত্রই ভালো সংখ্যায় দেখা যায়। সাধারনত তিলা মুনিয়ার সাথে এরা ঝাঁক বাঁধে। বাসা করে উচু সবুজ ঘাসের মধ্যে। বন্য পাখি যারা ধরে বিক্রি করে তারা এই মুনিয়া ধরে প্রায়ই ফলে এদের সংখ্যা কমছে, আমার ব্যক্তিগত অভিমত। কারন পাঁচ বছর আগে যেমন দেখতাম এখন তেমন দেখিনা  ঢাকারই কোথাও এর প্রথম ছবি তুলেছিলাম।  বিশ্বে ন্যুনতম বিপদগ্রস্থ এদেশে সহজে দেখা মেলে খয়েরী মুনিয়া, ঢাকা পাখিটির ডাক শুনুন লাল মুনিয়া Red Avadavat Amandava amandava আমাদের দেশের আবাসিক পাখি বাংলাদেশের মুনিয়াদের মধ্যে এটিই সম্ভবত সবচেয়ে কম পাওয়া যায়। ঢাকার আশেপাশের বিভিন্ন হাউজিং প্রজেক্টের ফাঁকা জমিতে গজিয়ে ওঠা লম্বা ঘাসের ঝোপে এরা বাসা করে। তবে মূল আবাস হচ্ছে বড় নদীর চর, পদ্মার অববাহিকা জুড়ে কয়েকটি স্থানে নিয়মিত দেখা যায়, এছাড়া মৌলভিবাজারে একটি সংখ্যা রয়েছে, এর বাইরে একে তেমন দেখা যায় না। বন্যপাখি শিকারী সিন্ডিকেটের অন্যতম ভিকটিম এই খুব সুন্দর পাখিটি। গায়ের রঙ টকটকে লাল ও তাতে সাদা সাদা ফোটা থাকায় দেখতে স্ট্রবেরী ফলের কথা মনে পড়ে। এজন্য এর আরেক নাম Strawberry Finch. প্রজনন মৌসুমে পুরুষ পাখিগুলো টসটসে লাল রঙ ধারন করে, শীতে রঙ এর গাড়ত্ব একটু হ্রাস পায়। স্ত্রী পাখি দেখতে আলাদা, খয়েরী রঙ এর হয়, ডানায় দুটো দাগ রয়েছে আর ঠোট কালচে। ঢাকার এক ঘাসবন থেকেই এর প্রথম ছবি তুলেছিলাম।  বিশ্বে ন্যুনতম বিপদগ্রস্থ এদেশে মাঝেমাঝে দেখা মেলে লাল মুনিয়া, ঢাকা পাখিটির ডাক শুনুন

বাংলাদেশের মুনিয়া Read More »

চটক বা বাঘেরি

বাংলাদেশে এপর্যন্ত নয় প্রজাতির বান্টিং পাওয়া গেছে। এর সবগুলোই পরিযায়ী, এবং সবগুলোই নদী/বিল/হাওড় অঞ্চলের সংলগ্ন ঘাস ও নল জাতীয় উদ্ভিদের ঝোপে পাওয়া যায়। এই ধরণের প্রতিবেশ আমাদের দেশে ও বিশ্বের বেশিরভাগ যায়গায় খুব দ্রুত ধ্বংস হচ্ছে ফলে বান্টিংদের অবস্থাও খুব ভালো নেই। নির্বিচারে শিকার করার দরুন হলদে-বুক চটক ইতোমধ্যেই মহাবিপন্নের তালিকায় নাম লিখিয়েছে। বাংলাদেশে পাওয়া যাওয়া বান্টিং গুলোর মধ্যে আমি দেখেছি সাত প্রজাতি ও ছবি তুলতে পেরেছি ছয় প্রজাতির। বার্ডারদের কাছে বান্টিং খুবই আকর্ষনীয় এক পাখি। ঝুটিয়াল চটক Crested Bunting Emberiza lathami আমাদের দেশের শীতের পরিযায়ী বাংলাদেশে পাওয়া যাওয়া বান্টিং গুলোর মধ্যে এটি খুব সুন্দর ও রঙচঙে। স্ত্রী ও পুরুষ পাখি দেখতে আলাদা, দুজনের মাথায়ই দৃশ্যমান ঝুটি রয়েছে বলেই এমন নাম। বাংলাদেশে পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁও, মৌলভিবাজার এ পাওয়া যায় এবং সম্প্রতি রাজশাহীতে পাওয়া গেছে বেশ কয়েকদিন ধরে। আমিও সেখান থেকে ছবি তুলেছি এর। বিশ্বে ন্যুনতম বিপদগ্রস্থ এদেশে কমই দেখা মেলে ঝুটিয়াল চটক, রাজশাহী কালো-মাথা চটক Black-headed Bunting Emberiza melanocephala আমাদের দেশের শীতের পরিযায়ী ২০১৩ সালের দিকে সুন্দরবন থেকে এটি প্রথম বাংলাদেশের পাখির তালিকায় যোগ হয় এবং এরপর  কবছর খুব বেশি সাইটিং ছিলোনা এর। সুন্দরবন, বরিশাল, মৌলভিবাজার, ঢাকা, ফরীদপুর, রাজশাহী, কুষ্টিয়া, শেরপুর সহ সাম্প্রতিককালে কয়েক বছরে একে দেশের অনেক যায়গাতেই দেখা যাচ্ছে। পুরুষ ও স্ত্রী পাখি দেখতে আলাদা, প্রজননঋতুতে পুরুষ পাখিটি দেখতে বড়ই সুন্দর হয়। আমি এর ছবি তুলেছি কুষ্টিয়া ও পাবনা জেলার মাঝামাঝি এক পদ্মার চর থেকে ২০২১ সালের শেষে। বিশ্বে ন্যুনতম বিপদগ্রস্থ এদেশে কমই দেখা মেলে কালো-মাথা চটক, কুষ্টিয়া লাল-মাথা চটক Red-headed Bunting Emberiza bruniceps আমাদের দেশের শীতের পরিযায়ী এই প্রজাতির চটক বাংলাদেশের পাখির তালিকায় ২০২১ সালের মৌসুমে যুক্ত হয়েছে। পাওয়া যায় পাবনা সংলগ্ন কুষ্টিয়া জেলার পদ্মার এক চরে। পরের বছর আবার এসেছে শুনে আমি ছুটে সেখানে যাই এবং এর ছবি তুলি। পরে অভিজ্ঞ বার্ডারগন এটা রেড-হেডেড হবার পক্ষে মত দেন। বিশ্বে ন্যুনতম বিপদগ্রস্থ এদেশে খুব কম দেখা মেলে লাল-মাথা চটক, কুষ্টিয়া ধুসর-ঘাড় চটক Grey-necked Bunting Emberiza buchanani আমাদের দেশের শীতের পরিযায়ী বাংলাদেশের অন্যতম বিরল চটক এই ধুসর-ঘাড় চটক। একে সর্বপ্রথম হবিগঞ্জ জেলায় পাওয়া গেছিলো। এরপরে মৌলভিবাজারে আর সুন্দরবনের কটকায় পাওয়া গেছে। দেশে তাই এর সাইটিং হাতেগোনা, খুব বেশি বার্ডারের ঝুলিতে এই চটকটি নেই। আমিও এটিকে এখনো দেখিনি। বিশ্বে ন্যুনতম বিপদগ্রস্থ এদেশে খুব কম দেখা মেলে এখনো দেখা পাইনি লাল-কান চটক Chestnut-eared Bunting Emberiza fucata আমাদের দেশের শীতের পরিযায়ী  সারা বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি পাওয়া যাওয়া বান্টিং সম্ভবত এটি। একে মৌলভিবাজার, মুন্সিগঞ্জ, রাজশাহী, শেরপুর, বরিশাল এ নিয়মিত পাওয়া যায়। এই পাখিটি সংখ্যায়ও বেশি থাকে সাধারনত। কানের কাছে একটুকরো লাল ছোপ এর কারনে এর এমন নাম। উড়লে লেজের সাদা পালক দৃশ্যমান হয় যা দেখে সহজেই দূর থেকেও একে চেনা যায়। আমি মৌলভিবাজার এর এক ঘাসবন এ প্রথম এর ছবি তুলি, এরপরে সেখানে বেশ কয়েকবার তুলি, এবং ২০২২ মৌসুমে শেরপুর ও রাজশাহী থেকেও এর ছবি পেয়েছি। বিশ্বে ন্যুনতম বিপদগ্রস্থ এদেশে কমই দেখা মেলে লাল-কান চটক, মৌলভিবাজার হলদে-বুক চটক Yellow-breasted Bunting Emberiza aureola আমাদের দেশের শীতের পরিযায়ী আগে সংখ্যায় বেশ অনেক থাকলেও পূর্ব এশিয়ায় ব্যপকহারে শিকার হওয়ায় গত শতাব্দিতে এই হলদে-বুক চটক মহাবিপন্ন এর তালিকায় নাম লিখিয়েছে। পুরুষ ও স্ত্রী দুই পাখিরই বুক হলুদ হয় এবং প্রজননঋতুতে যেন টসটস করে। পুরুষ পাখিগুলো তখন দেখতে সুন্দর লাগে। আমি প্রথম এর দেখা পাই ২০১৯ সালে ঢাকার অদূরে কেরানিগঞ্জের এক ধানক্ষেতের ধারে, মুনিয়া ও বাবুই এর ঝাঁকে মিশে ছিল। পরবর্তীতে শেরপুর ও রাজশাহীতেও এর দেখা ও ছবি তোলার সুযোগ হয়েছে। সম্প্রতি এটিকে মুন্সিগঞ্জ এর পদ্মার চরেও পাওয়া গেছে।  বিশ্বে মহাবিপন্ন এদেশে খুব কম দেখা মেলে হলদে-বুক চটক, ঢাকা ছোট চটক Little Bunting Emberiza pusilla আমাদের দেশের শীতের পরিযায়ী নামেই বুঝতে পারছেন এর আকার ছোট। খুব সুন্দর দেখতে এই চটকটি আমাকে বেশ কয়েকবার ঘুরিয়েছে। নিয়মিত পাওয়া যায় এমন কয়েকটি যায়গায় গিয়েও এর দেখা পাইনি, সম্প্রতি শেরপুরে দেখতে পেয়েছিলাম কিন্তু ছবি তুলতে পারিনি। প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষ পাখিগুলো খুব সুন্দর দেখতে হয়। বাংলাদেশে মৌলভিবাজারের বাইরে শেরপুর, রাজশাহী, ঠাকুরগাঁও, টাঙ্গাইল, মুন্সিগঞ্জ, মেহেরপুর ও রাঙামাটিতে একে দেখা পাওয়া গেছে গত কয়েক বছরে। বিশ্বে ন্যুনতম বিপদগ্রস্থ এদেশে কমই দেখা মেলে দেখেছি, ছবি তুলতে পারিনি কালো-মুখ চটক Black-faced Bunting Emberiza spodocephala আমাদের দেশের শীতের পরিযায়ী দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের হাওড় এলাকায় এই পাখিটিকে নিয়মিত দেখা যায়। প্রজননকালে পুরুষ পাখিগুলোর মাথা কালচে আকার ধারন করে। পুরুষ ও স্ত্রী পাখির পেট সবুজাভ হলুদ। মৌলভিবাজারে আমি একবারই একে দেখেছিলাম, একটি স্ত্রী পাখির, খুব ভালো ছবি পাইনি। এছাড়া দেশের কিছু স্থানে এর দেখা মিলেছে।  বিশ্বে ন্যুনতম বিপদগ্রস্থ এদেশে মাঝেমাঝে দেখা মেলে কালো-মুখ চটক, মৌলভিবাজার ত্রিস্ত্রামের চটক Tristram’s Bunting Emberiza tristrami আমাদের দেশের শীতের পরিযায়ী বাংলাদেশে পাওয়া যাওয়া বিরলতম চটক হচ্ছে এটি। হবিগঞ্জে সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানের পাশে মরহুমা তানিয়া খান একবারই এর ছবি পেয়েছিলেন। সেটাই বাংলাদেশে এর একমাত্র সাইটিং। বিশ্বে ন্যুনতম বিপদগ্রস্থ এদেশে খুব কম দেখা মেলে এখনো দেখা পাইনি

চটক বা বাঘেরি Read More »

বাংলাদেশের ফিঞ্চ

বাংলাদেশে একটিমাত্র প্রজাতির তুতি/ফিঞ্চ পাওয়া যায় পাতি তুতি Common Rosefinch Carpodacus erythrinus আমাদের দেশের শীতের পরিযায়ী বাংলাদেশে একমাত্র পাওয়া যাওয়া ফিঞ্চ হচ্ছে Common Rosefinch. এর বাংলা নামগুলোর মধ্যে আছে  / গুলাবি তুতি / লাল গিরি / লাল বাঘেরি। এরা পরিযায়ী, ইউরোপ থেকে এশিয়ার বিস্তীর্ন অঞ্চল জুড়ে পাওয়া যায়। বাংলাদেশে সাধারনত এদের দেখা মেলে উত্তর-পুর্ব ও দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের পাহাড়ি বন ও সমতল/পাহাড়ি ঘাসবন এলাকায়। একলা জোড়ায় জোড়ায় বা দলবদ্ধ অবস্থায় পাওয়া যেতে পারে, বাবুই বাঁ বান্টিং/চটকদের সাথেও ঝাঁক বাধতে দেখা যায়। শীতের সময় বাঁ আগে-পরে এদেরকে দেশের অন্যান্য অঞ্চলেও কালে-ভদ্রে দেখা যায়। বাংলাদেশে সাম্প্রতিক সময়ে চট্বগ্রাম ও সিলেট বিভাগের বাইরে বরিশাল, রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, বগুড়া, ঢাকা ও মানিকগঞ্জে দেখা গেছে। পুরুষ পাখিগুলো প্রজনন ঋতুতে টকটকে লাল রঙ ধারন করে, খুব সুন্দর দেখতে হয় তখন। আর স্ত্রী পাখিগুলো সাধারনত সবুজাভ বাদামী রঙের হয়। এই পাখিটিকে আমি দুবার দেখেছি। প্রথমবার একটি স্ত্রী পাখির দেখা পাই মানিকগঞ্জের হরিরামপুরের একটি বিলে বাবুই পাখির ঝাঁকে। আরেকবার মৌলভিবাজারের এক চা-বাগান সংলগ্ন ঘাসবনে একজোড়া পাখি দেখি তবে ছবি তুলতে পারিনি। বিশ্বে ন্যুনতম বিপদগ্রস্থ এদেশে কমই দেখা মেলে গোলাপী তুতি (স্ত্রী), মানিকগঞ্জ

বাংলাদেশের ফিঞ্চ Read More »

বাংলাদেশের খঞ্জনা ও তুলিকা

বাংলাদেশে মোট ৭ প্রজাতির খঞ্জনা পাওয়া যায় বন খঞ্জনা Forest Wagtail Dendronanthus indicus আমাদের দেশের শীতের পরিযায়ী সাধারনত গাছপালা ঢাকা ঝোপঝাড় এলাকা পছন্দ করে। একসাথে একদুটো থাকে সাধারনত। গাছের ডালেও চড়ে বসে প্রায়ই। সবুজাভ দেহে ও গলায় ডোরাকাটা দাগ রয়েছে। অন্যান্য খঞ্জনাদের মতই ডাকতে ডাকতে উড়ে যায়। প্রথম দেখা পেয়েছিলাম সুন্দরবনে।  বিশ্বে ন্যুনতম বিপদগ্রস্থ এদেশে মাঝেমাঝে দেখা মেলে বন খঞ্জনা, সুন্দরবন মেটে খঞ্জনা Grey Wagtail Motacilla cinerea আমাদের দেশের শীতের পরিযায়ী এরা সাধারনত প্রবাহমান পানির ধারার আশেপাশে বেড়াতে পছন্দ করে। আর বসার জন্য পাথর বা সিমেন্টের ব্লক পছন্দ করে। এর লম্বা লেজ ও হলুদ তলা দেখে সহজেই একে চেনা যায়। আমি ঢাকার গুলশান লেকের ধারে একে প্রথম দেখি ও ছবি তুলি, এরপরে একে আশুলিয়াতে ও শেরপুর ঝিনাইগাতিতে দেখেছি। বিশ্বে ন্যুনতম বিপদগ্রস্থ এদেশে মাঝেমাঝে দেখা মেলে মেটে খঞ্জনা, শেরপুর পাখিটির ডাক শুনুন পশ্চিমের হলুদ খঞ্জনা Western Yellow Wagtail Motacilla flava আমাদের দেশের শীতের পরিযায়ী দুরকম হলুদ খঞ্জনার মধ্যে একেই কম দেখা যায়। শীতের শুরুতে একে ইস্টার্ন গুলোর থেকে আলাদা করা খুব মুশকিল। থাকে ঝাঁক বেঁধে আর দেখতেও হয় একই রকম। সবচেয়ে ভালো বুদ্ধি হল ডাক রেকর্ড করে সনোগ্রাফ চেক করা। আমি ওয়েস্টার্ন ভেবে এপর্যন্ত যা তুলেছি সবই ইস্টার্ন আইডি হয়েছে, তাই এর এখনো ছবি নেই আমার কাছে। এর বেশ কিছু উপপ্রজাতি আছে, বাংলাদেশে কয়েকটি আসে পরিযায়ন করে। বিশ্বে ন্যুনতম বিপদগ্রস্থ এদেশে কমই দেখা মেলে দেখা পেয়েছি কিনা নিশ্চিত নই পাখিটির ডাক শুনুন পূবের হলুদ খঞ্জনা Eastern Yellow Wagtail Motacilla tschutschensis আমাদের দেশের শীতের পরিযায়ী খঞ্জনদের মধ্যে এটিই মনেহয় বাংলাদেশের বিল-মাঠ জাতীয় এলাকায় সবচেয়ে বেশী পরিমানে দেখা যায়। বেশ কিছু উপপ্রজাতি রয়েছে, বাংলাদেশে প্রচুর পরিমানে আসে পরিযায়ন করে প্রতি শীতে। দেশের অনেক যায়গায় আমি একে দেখেছি। বিশ্বে ন্যুনতম বিপদগ্রস্থ এদেশে সহজে দেখা মেলে পূবের হলুদ খঞ্জনা, ঢাকা পাখিটির ডাক শুনুন হলদে-মাথা খঞ্জনা Citrine Wagtail Motacilla citreola আমাদের দেশের শীতের পরিযায়ী বাংলাদেশের খঞ্জনাদের মধ্যে প্রজননকালে সবচেয়ে সুন্দর মনেহয় এই খঞ্জনাটি। এর সারা মাথা টকটকে হলুদ হয়ে যায়। দেশের সর্বত্র মাঠ ও ভেজা বিল এলাকায় একে অন্য খঞ্জনাদের সাথে মিশে বেড়াতে দেখা যায়। শীতের শুরুতে অবশ্য এর সৌন্দর্য অতটা থাকেনা, মার্চ এপ্রিলে দেখা যায় আসল রূপ। এরা শীতের বেশ আগেই আগস্ট এর দিকেই এদেশে চলে আসে আর যেতে যেতে প্রায় এপ্রিল করে। বিশ্বে ন্যুনতম বিপদগ্রস্থ এদেশে সহজে দেখা মেলে হলদে-মাথা খঞ্জনা, ঢাকা পাখিটির ডাক শুনুন সাদা-ভ্রু খঞ্জনা White-browed Wagtail Motacilla maderaspatensis আমাদের দেশের আবাসিক পাখি এটি হচ্ছে দেশের একমাত্র আবাসিক খঞ্জনা। এদের সাধারনত জোড়ায় জোড়ায় দেখা যায় নদীর ধারে বা মাঠের প্রান্তে। এদের অত বড় সংখ্যায় দেখা যায় না। একে আমি দেশের বেশ কিছু যায়গা থেকেই তুলেছি। বিশ্বে ন্যুনতম বিপদগ্রস্থ এদেশে মাঝেমাঝে দেখা মেলে সাদা-ভ্রু খঞ্জনা, শেরপুর পাখিটির ডাক শুনুন সাদা খঞ্জনা White Wagtail Motacilla alba আমাদের দেশের শীতের পরিযায়ী বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশী দেখা যায় সম্ভবত এই খঞ্জনাটিকে। কারন এর চরে বেড়ানোর যায়গা মাঠ-ঘাট বিল সহ লোকালয় ও বাসাবাড়ির ছাদেও। আর বাংলাদেশে আসেও হাজারে হাজারে। পরিযায়নের সময় একসাথে কয়েক হাজার পর্যন্ত দেখা গেছে কুষ্টিয়া, রাজশাহী ও ঢাকায়। এর প্রায় ৬-৭টি উপপ্রজাতি বাংলাদেশে এপর্যন্ত দেখা গেছে। এই পাখিটিকে ছোটবেলা থেকেই আমি বাসার ছাদে জমা পানির আশেপাশে লেজ দুলিয়ে হাটতে দেখে আসছি, আর ছবি তুলেছি সারাদেশের বিভিন্ন যায়গা থেকেই। বিশ্বে ন্যুনতম বিপদগ্রস্থ এদেশে সহজে দেখা মেলে সাদা খঞ্জনা, কক্সবাজার পাখিটির ডাক শুনুন বাংলাদেশে দশ প্রজাতির তুলিকা দেখা গেছে দেখা গেছে বলছি এই কারনে যে সবগুলো এখন আর পাওয়া যায়না, একটি সম্প্রতি যোগ হয়েছে। এদের সাথে সংক্ষেপে আপনাদের পরিচয় করিয়ে দিচ্ছি। রিচার্ডের তুলিকা Richard’s Pipit Anthus richardi আমাদের দেশের শীতের পরিযায়ী বড় আকৃতির পরিযায়ী তুলিকা। এর পেছনের নখ বেশ লম্বা এবং দেহও বেশ শক্তিশালী গড়নের হয়ে থাকে, চলেও সোজা হয়ে। সারাদেশেই পাওয়া যায়, খোলা প্রান্তর ও শুকনো ক্ষেত পছন্দ করে। এর ডাক শুনে সহজেই একে ফীল্ডে শনাক্ত করা যায়। বিশ্বে ন্যুনতম বিপদগ্রস্থ এদেশে মাঝেমাঝে দেখা মেলে রিচার্ডের তুলিকা, সাতক্ষীরা পাখিটির ডাক শুনুন ধানি তুলিকা Paddyfield Pipit Anthus rufulus আমাদের দেশের আবাসিক পাখি শীতের পরিযায়ী গ্রীষ্মের পরিযায়ী অনিয়মিত পাখি সাধারনত ধানক্ষেত এলাকায় পাওয়া যায় বলেই হয়তো এর নাম এমন হয়েছে। বাংলাদেশের একটি আবাসিক পাখি এটি। দেহের আকৃতি একটু দুর্বল হয়, আর চলেও গুড়ি মেরে মেরে। প্রায়ই জোড়ায় জোড়ায় দেখা যায় আমার অভিজ্ঞতা মতে। এর ঠোট ও চোখের মাঝের যায়গা সাধারনত কালচে হয়। সারাদেশে অনেক যায়গায় আমি এর ছবি তুলেছি। বিশ্বে ন্যুনতম বিপদগ্রস্থ এদেশে সহজে দেখা মেলে ধানি তুলিকা, ঢাকা পাখিটির ডাক শুনুন তামাটে তুলিকা Tawny Pipit Anthus campestris আমাদের দেশের শীতের পরিযায়ী বাংলাদেশে একে খুব বেশিবার পাওয়া গেছে বলে মনে হয়না। বেশিরভাগ সিনিয়র বার্ডারদেরও এই পাখিটি দেখার সুযোগ হয়নি আমার জানামতে। বলাই বাহুল্য আমিও এর দেখা পাইনি এখনো। বিশ্বে ন্যুনতম বিপদগ্রস্থ এদেশে খুব কম দেখা মেলে এখনো দেখা পাইনি লম্বা-ঠোট তুলিকা Long-billed Pipit Anthus similis আমাদের দেশের শীতের পরিযায়ী শক্ত ও লম্বা ঠোট বিশিষ্ঠ এই তুলিকা পাখিটিও পরিযায়ী। দেশে বহু আগে পাওয়া গেছিলো, এরপরে ২০২২ সিজনে রাজশাহীর প্রেমতলীতে পদ্মার চরে পাওয়া যায় এবং দেশের অনেকেই এর ছবি তুলতে সক্ষম হন। আমিও এর খোঁজে একদিন গেছিলাম কিন্তু দেখা পাইনি। এর ছবি এখনো তাই আমার সংগ্রহে নেই। বিশ্বে ন্যুনতম বিপদগ্রস্থ এদেশে খুব কম দেখা মেলে এখনো দেখা পাইনি ব্লাইদের তুলিকা Blyth’s Pipit Anthus godlewskii আমাদের দেশের শীতের পরিযায়ী আগে বিরল ভাবা এই ব্লাইদের তুলিকা আসলে বেশ সুলভ। দেশের প্রায় সর্বত্রই খোলা প্রান্তরে এই পরিযায়ী পাখিটিকে দেখা যায়। রিচার্ডের তুলিকা ভাবা হত আগে, পরে দেখা গেল আলাদা প্রজাতি। এরও আকার একটু বড়, ঠোট ও চোখের মাঝে সাদাটে, পিঠজুড়ে দাগ ভর্তি আর ডাক রিচার্ডের তুলিকার চাইতে একটু বেশী তীক্ষ্ণ। ঢাকার কেরানীগঞ্জে একে প্রথমে পেয়েছিলাম, এরপরে অনেক যায়গায়ই নিয়মিত এর দেখা পাচ্ছি। বিশ্বে ন্যুনতম বিপদগ্রস্থ এদেশে মাঝেমাঝে দেখা মেলে ব্লাইদের তুলিকা, ঢাকা পাখিটির ডাক শুনুন গোলাপী তুলিকা Rosy Pipit Anthus roseatus আমাদের দেশের শীতের পরিযায়ী আমার অভিজ্ঞতায় একে একটু ভেজা বিল ও হাওড় এলাকায় বেশী পাওয়া যায়। প্রজনন ঋতুতে গলা ও বুকের কাছটা গোলাপী রঙ ধারন করে তাই এর এমন নাম। আর পিঠের দিকটা সবুজাভ ও দাগে ভর্তি। আমি এর ছবি প্রথমে তুলি মুন্সিগঞ্জের এক বিলে, পরবর্তীতে মানিকগঞ্জে ও শেরপুরে এর ছবি পেয়েছি। বিশ্বে ন্যুনতম বিপদগ্রস্থ এদেশে মাঝেমাঝে দেখা মেলে গোলাপী তুলিকা, মুন্সিগঞ্জ গাছ তুলিকা Tree Pipit Anthus trivialis আমাদের দেশের শীতের পরিযায়ী অন্য মাঠের পিপিটদের মতই এই খোলা প্রান্তরে চরে তবে সেখানে ছোট গাছপালা থাকা চাই কারন এই তুলিকাটি একটু পরপর সেসব গাছে যেয়ে বসতে পছন্দ করে। আমার অভিজ্ঞতা অন্তত তাই বলে। এর কোমরের নিচের দিকে অত্যন্ত ক্ষীন ছিটে দাগ রয়েছে। অনেকেই ভাবে এ বুঝি জলপাইপিঠ তুলিকার কাছাকাছি দেখতে, আমার কাছে

বাংলাদেশের খঞ্জনা ও তুলিকা Read More »

বাংলাদেশের চড়ুই

বাংলাদেশে মোট ০৩ প্রজাতির চড়ুই এর দেখা মিলেছে চড়ুই এমন একটি পাখি যাকে আমরা প্রতিদিন দেখি আমাদের ঘরের আশেপাশে। সারাদেশেই পাওয়া যায়, তবে আমাদের দেশে সচরাচর যে চড়ুই দেখা যায় এটা হচ্ছে পাতি চড়ুই। এছাড়া কিন্তু দেশের কিছু অঞ্চলে গাছ চড়ুই পাওয়া যায়। আর কিছুদিন আগে পঞ্চগড় থেকে আরেকটি নতুন প্রজাতির চড়ুই পাওয়া গেছে সেটি হচ্ছে দারুচিনি চড়ুই। পাতি চড়ুই House Sparrow Passer domesticus আমাদের দেশের আবাসিক পাখি বাংলাদেশের সর্বত্র পাওয়া যায় এমন চড়ুই হচ্ছে এটি। সাধারনত বাসা-বাড়ির সানশেড/বারান্দা ও দেয়ালের ফুটোয় বাসা করে থাকে। মানুষের আশেপাশেই বিচরন করে এবং মানুষের ফেলে দেয়া খাবার থেকে বড় অংশ সংগ্রহ করে। এছাড়া এরা শস্য ও দানা জাতীয় খাবার খায়। ছোটবেলা থেকেই এদেরকে সর্বত্র দেখে আসছি। পুরুষ ও স্ত্রী পাখি দেখতে আলাদা।  বিশ্বে ন্যুনতম বিপদগ্রস্থ এদেশে সহজে দেখা মেলে পাতি চড়ুই, ঢাকা পাখিটির ডাক শুনুন দারুচিনি চড়ুই Russet Sparrow Passer cinnamomeus আমাদের দেশের অনিয়মিত পাখি বাংলাদেশের এই চড়ুই প্রজাতিটি এদেশে পাওয়া যায় আমি বেশ জোরেশোরেই বিশ্বাস করতাম। আমার ধারনা ছিলো একে পাওয়া গেলে সিলেট, নেত্রকোনা বা উত্তরের কোন জেলা থেকে পাওয়া যাবে। পরে বিখ্যাত প্রাণীবিদ ও গবেষক ডক্টর আ ন ম আমিনুর রহমান স্যার পঞ্চগড়ের সীমান্তবর্তি এক যায়গা থেকে এই চড়ুই এর ছবি তোলেন। প্রথমে একে সাধারন কিছু ভাবলেও বেশ কিছুদিন পরে ছবি চেক করে আলাদা মনে হলে অন্যদের দেখান ও অভিজ্ঞরা মত দেন এটি দেশের তৃতীয় চড়ুই প্রজাতি। এদের পিঠ এর রঙ প্রজনন ঋতুতে টকটকে মরচে-রঙা হয় বলেই এমন নাম। বিশ্বে ন্যুনতম বিপদগ্রস্থ এদেশে খুব কম দেখা মেলে দেশে এখনো দেখা পাইনি ইউরেশীয় গাছ চড়ুই Eurasian Tree Sparrow Passer montanus আমাদের দেশের আবাসিক পাখি বাংলাদেশে পাওয়া যাওয়া আরেক চড়ুই হচ্ছে এই ইউরেশীয় গাছ চড়ুই। রংপুর, ময়মনসিংহ, সিলেট ও চট্বগ্রাম বিভাগের সীমান্তবর্তী জেলাগুলোতে এই চড়ুই পাওয়া যায়। পাতি চড়ুই এর ঝাকেই মিশে থাকে, তবে একে সহজে চেনার উপায় হল এর মাথা খয়েরি রঙ এর এবং কানের কাছে সাদার মধ্যে কালো একটি দাগ রয়েছে। আকারে পাতি চড়ুই এর চেয়ে সামান্য ছোট এবং পুরুষ-স্ত্রী পাখি দেখতে একই রকম। আমি জামালপুর জেলা থেকে প্রথমে এর দেখা পাই ও ছবি তুলি, সেখানে এটি বেশ সুলভ। এছাড়া শেরপুরেও এর দেখা পেয়েছি। বিশ্বে ন্যুনতম বিপদগ্রস্থ এদেশে মাঝেমাঝে দেখা মেলে গাছ চড়ুই, জামালপুর পাখিটির ডাক শুনুন

বাংলাদেশের চড়ুই Read More »

বাংলাদেশের বাবুই

বাংলাদেশে মোট ০৩ প্রজাতির বাবুই পাখির দেখা মেলে “বাবুই পাখিরে ডাকি বলিছে চড়াই, কুড়ে ঘরে থাকি, করো শিল্পের বড়াই”, এই ছড়া আমরা প্রায় সকলেই ছোটবেলায় পড়েছি। তালগাছে বাবুই পাখি বাসা করে এমনটি গ্রামে বাস করা লোকদের কাছে এক সাধারন দৃশ্য। বাংলাদেশের সর্বত্রই এই সুলভ পাখিটিকে পাওয়া যায়, যার নাম দেশী বাবুই। এটি সহ বাংলাদেশে মোট তিন প্রজাতির বাবুই পাখি পাওয়া যায়। যাদের সবগুলোর ছবিই আমি তুলেছি। বর্তমানে তাল-নারিকেল জাতীয় গাছ কমে যাওয়ায় ও নদী চরের ঘাসবন কেটে ফেলায় এদের বাস্তুসংস্থান এর সংকট দেখা দিচ্ছে। তাছাড়া ধান খায় বলে জাল পেতে শিকারও করা হয় প্রচুর। দেশী বাবুই Baya Weaver Ploceus philippinus আমাদের দেশের আবাসিক পাখি এই প্রজাতির বাবুই পাখি সারাদেশে পাওয়া যায় এবং বেশ সুলভ। যেকোন সুবিধাজনক গাছেই এরা বাসা করে। বাবুই পাখি তালগাছে বেশি বাসা বানায় তবে আমি এপর্যন্ত ১৪-১৫ ধরণের গাছে একে বাসা বানাতে দেখেছি। পুরুষ ও স্ত্রী পাখি শীতে দেখতে প্রায় একই রকম, তবে প্রজনন ঋতুতে পুরুষ পাখিগুলোর মাথায় ও গলায় গাড় হলুদ রঙ আসে। শীতে এরা বিভিন্ন লম্বা ঘাসের বনে রাত কাটায় তখন একেক ঝাঁকে শত থেকে হাজার পর্যন্ত পাখি থাকতে পারে। বিশ্বে ন্যুনতম বিপদগ্রস্থ এদেশে সহজে দেখা মেলে দেশী বাবুই, ঢাকা পাখিটির ডাক শুনুন কালো-বুক বাবুই Black-breasted Weaver Ploceus benghalensis আমাদের দেশের আবাসিক পাখি/গ্রীষ্মের পরিযায়ী এই প্রজাতির বাবুই সাধারনত বড় নদীর ধারে বাস করে। বিশেষ করে পদ্মার অববাহিকায় একে ভালো পাওয়া যায়। এর আরেক নাম হচ্ছে Bengal Weaver বা বাংলা বাবুই। সকল বয়সের পাখির বুকেই কালো রঙ কমবেশী দেখা যায়। প্রজনন ঋতুতে পুরুষ পাখিগুলোর বুকের উপরিভাগ কালো হয়ে যায় আর মাথার চুড়া হয় হলুদ। তখন এদের দেখতে বেশ লাগে। এরা দেশী বাবুই থেকে সামান্য মোটা, আর বাসা করে সাধারনত লম্বা সবুজ ঘাসের মধ্যে। আমি এর প্রথম ছবি তুলি ঢাকার কেরানীগঞ্জে ধলেশ্বরী নদীর ধারে। এছাড়া রাজশাহী ও কুষ্টিয়ার পদ্মার চরে একে দেখেছি। সারাবছর এক যায়গায় পাওয়া যায়না। বিশ্বে ন্যুনতম বিপদগ্রস্থ এদেশে মাঝেমাঝে দেখা মেলে বাংলা বাবুই, ঢাকা ডোরা বাবুই Streaked Weaver Ploceus manyar আমাদের দেশের আবাসিক পাখি/গ্রীষ্মের পরিযায়ী বাংলাদেশের সবচেয়ে দুর্লভ হচ্ছে এই প্রজাতির বাবুই। ঢাকা ও মুন্সীগঞ্জের পদ্মার চরে সহজে একে দেখতে পাওয়া যায়। এছাড়া চট্বগ্রাম ও রাঙ্গামাটিতে একে দেখা যায়। সম্প্রতি রাজশাহী ও পূর্ব-সুন্দরবনেও দেখা গেছে। এর আরেক নাম দাগী বাবুই, কারন এর বুকে কালো ডোরা দাগ রয়েছে। প্রজনন ঋতুতে এর মুখের দুপাশে কালো হয়ে যায়, বুকের দাগগুলো গাড় হয় আর মাথায় হলুদ টুপি দেখা যায়। এরাও নদীর চরের লম্বা ঘাসবনে বাসা করে। সারাবছর এক যায়গায় পাওয়া যায়না। আমি প্রথম এর ছবি তুলি মুন্সিগঞ্জের পদ্মার এক চরে, ঢাকার কাছাকাছি ধলেশ্বরী নদীর পাড়েও একে দেখেছি ও ছবি তুলেছি। বিশ্বে ন্যুনতম বিপদগ্রস্থ এদেশে কমই দেখা মেলে ডোরা বাবুই, মুন্সিগঞ্জ

বাংলাদেশের বাবুই Read More »

বাংলাদেশের হরবোলা/পাতাবুলবুলি

Blue-winged Leafbird (Chloropsis cochinchinensis) নীল-ডানা হরবোলাঃ এই অনিন্দ্য সুন্দর পাখিটিকে বাংলাদেশের সিলেট ও চট্বগ্রাম অঞ্চলের বনাঞ্চলে পাওয়া যায়। সিলেট বিভাগের রাজকান্দি বনে সুলভ, চট্বগ্রাম বিভাগের সকল বনে আছে। এর গায়ের সবুজ রংটি খুব গাড় না বলে আমার মনে হয়েছে। আর ডানায় নীল ছোপ রয়েছে যা থেকেই এর এমন নাম। অন্যান্য হরবোলাদের মতই এর খাদ্যতালিকায় মূলত রয়েছে ফুল ও ফল। এর প্রথম ছবি তুলি চট্বগ্রামের হাজারিখিল বনে, এছাড়া মৌলভিবাজারেও এর সাথে দেখা হয়েছে। গারো পাহাড়েও একে দেখা পাওয়া যাবার দাবী শুনেছি তবে আমি ছবি দেখিনি। নীল-ডানা হরবোলা, চট্বগ্রাম এখনো দেখা পাইনি Jerdon’s Leafbird (Chloropsis jerdoni) জার্ডনের হরবোলাঃ বাংলাদেশের হরবোলার তালিকায় এটি নতুন সংযোজন। মেহেরপুর সদরের এক কলেজ ক্যাম্পাসে পলাশ ফুলে একে প্রথম পাওয়া যায়। সেখানে বেশ কয়েক বছর একটানা ফুলের মৌসুমে এর দেখা পাওয়া গিয়েছিল। গত কয়েকবছর এর খবর আমার কাছে নেই। মেহেরপুরের বাইরে চুয়াডাঙায়ও খেজুরের রস খেতে আসা অবস্থায় একজন এর ছবি তোলেন। আমার ধারনা খুলনা বিভাগের পশ্চিম ভাগে এই পাখিটি বসন্তে ফুলের লোভে মাঝেমধ্যে এসে পড়ে, ভারতে এর বিস্তৃতি এই এলাকার কাছ দিয়েই শেষ হয়েছে, আরও খোজখবর নেয়া দরকার। Golden-fronted Leafbird (Chloropsis aurifrons) সোনা-কপালি হরবোলাঃ হরবোলাদের মধ্যে এই পাখিটিই সবচেয়ে সুলভ। সুন্দরবনসহ দেশের সকল ধরনের বনেই এর দেখা পাওয়া যায়। এর প্রথম ছবি আমি তুলেছিলাম গারো পাহাড় থেকে, এছাড়া সুন্দরবনে, সিলেট ও চট্বগ্রাম বিভাগের কয়েক যায়গায় এর সাথে আমার দেখা হয়েছে। এর গানের গলা বেশ সুন্দর। Orange-bellied Leafbird (Chloropsis hardwickii) কমলা-পেট হরবোলাঃ এখনো দেখা পাইনি।  এই প্রজাতির হরবোলা পাখিটিকে বাংলাদেশের চট্বগ্রাম বিভাগের পাহাড়ি বনাঞ্চলে মূলত পাওয়া যায়। এছাড়া সুন্দরবনে কদাচিৎ পাওয়া যায়, সিলেট বিভাগের বনেও কয়েকবার দেখা গেছে। পুরুষ ও স্ত্রী পাখির সারাবছর পেটের কাছটায় কমলা রঙ থাকে, প্রজনন ঋতুতে বেশি করে প্রকাশিত হয় এবং এই থেকেই এর এমন নাম। এর ছবি আমি এখনো তুলতে পারিনি।

বাংলাদেশের হরবোলা/পাতাবুলবুলি Read More »

বাংলাদেশের নীলপরী

এই পরিবারে আমাদের দেশে একটিই পাখি রয়েছে এশীয় নীলপরী Asian Fairy-bluebird Irena puella আমাদের দেশের আবাসিক পাখি বাংলাদেশে এই পরিবারে একটিই পাখি পাওয়া যায়। দেখা পাওয়া যায় সাধারনত সিলেট ও চট্বগ্রাম বিভাগের মিশ্র চিরসবুজ বনাঞ্চলে। এরা মূলত ফলভোজী, তাই ফলের মৌসুমে সেসব বনে ফল ও ফুলের গাছে একে প্রায়শই দেখা মেলে। পুরুষ ও স্ত্রী পাখি দুজনেরই মূল রঙ নীল, তবে পুরুষটির ডানা অত্যন্ত চমৎকার নীল রঙ এর হয়, সাথে মাথা, বুক ও ডানার কালো অংশ একে পরীর মতই সুন্দর করে তোলে, চোখগুলো গাড় লাল। স্ত্রী পাখির নীল রঙ একটু কম উজ্জ্বল হয়। এদের গানের গলাও অসাধারন, অত্যন্ত শ্রুতিমধুর। আমি এর দেখা পেয়েছিলাম মৌলভিবাজারের এক সংরক্ষিত বনে। ভালো ছবি পাইনি।  বিশ্বে ন্যুনতম বিপদগ্রস্থ এদেশে মাঝেমাঝে দেখা মেলে এশীয় নীলপরি, স্ত্রী, মৌলভিবাজার পাখিটির ডাক শুনুন

বাংলাদেশের নীলপরী Read More »

বাংলাদেশের মাকড়মার ও মৌটুসী

Ruby-cheeked Sunbird (Chalcoparia singalensis) চুনি-গাল মৌটুসীঃ বাংলাদেশের সুলভ এই মৌটুসীটিকে মূলত বনাঞ্চলে পাওয়া যায়, তবে বরিশাল, ঢাকা ও বৃহত্তর কুমিল্লার কিছু জেলায় এর নিয়মিত দেখা মেলে। পাতার নিচে ঝুলে ঝুলে এর বিচরন বেশ দেখার মত। এর প্রথম ছবি তুলেছিলাম গারো পাহাড়ে। Purple-rumped Sunbird (Leptocoma zeylonica) বেগুনী-কোমর মৌটুসীঃ বাংলাদেশের অন্যতম সুলভ মৌটুসী এটি। পুরুষ পাখির কোমরের কাছটা বেগুনী বলে এর এমন নাম। পুরুষ ও স্ত্রী পাখি দেখতে আলাদা। সারাদেশেই ঘরবাড়ির আশেপাশে পাওয়া যায়। শিম, ভাট, দাতরাঙা, আম, সজনেসহ ছোট ফুলের বিভিন্ন গাছে একে মধু খেতে দেখা যায়। সাধারনত পুরুষ ও স্ত্রী পাখি কাছাকাছি থাকে। Van Hasselt’s (Purple-throated) Sunbird (Leptocoma brasiliana) বেগুনী-গলা মৌটুসীঃ এই প্রজাতির মৌটুসীটিকে বাংলাদেশের সিলেট ও চট্বগ্রাম বিভাগের বনাঞ্চলে পাওয়া যায়, খুব সুলভ নয় তবে যে বনে এর দেখা মেলে সেখানে নির্দিষ্ট কিছু ফুলের মৌসুমে চোখ রাখলে এর দেখা পাওয়া যায়। এর গায়ের রঙ এমন যে ঠিকমত আলো না পড়লে এর গায়ের অসাধারন রঙের ছটা বোঝা যায়না। সকল মৌটুসীর মতই এদেরও পুরুষ ও স্ত্রী পাখি দেখতে আলাদা রকম। প্রথম দেখা পাই সাতছড়ি বন থেকে। Purple Sunbird (Cinnyris asiaticus) বেগুনী মৌটুসীঃ দেশের সর্বত্র পাওয়া যাওয়া এই মৌটুসীকে আপনি হয়তো শহরাঞ্চলে আপনার ছাদ-বাগানেও দেখতে পাবেন। প্রচুর ডাকাডাকি করে, সাধারনত পুরুষ ও স্ত্রী পাখি কাছাকাছি থাকে। এখনো দেখিনি। Olive-backed Sunbird (Cinnyris jugularis) জলপাই-পিঠ মৌটুসীঃ  বাংলাদেশে কয়েক দশক আগে এর দেখা পাওয়া গিয়েছিলো বলে পাখিবিশারদগন লিখেছেন। এখনো দেখা পাইনি। Fire‑tailed Sunbird (Aethopyga ignicauda) আগুন-লেজ মৌটুসীঃ বাংলাদেশের বিরল এই মৌটুসীটির বাস মূলত বাংলাদেশের উত্তরে ভারতের উচু পাহাড়ি এলাকার বনে। তবে মাঝেমধ্যে শীতের শেষে নেমে আসে খাবারের খোজে। সেরকমই একবার কুড়িগ্রামের শহুরে অঞ্চলে বড়ই গাছের ফুলে একটু পুরুষ পাখিকে দেখা গেছিলো। সেটাই ছিল এর একমাত্র সাইটিং আমাদের দেশে। প্রজননকালে পুরুষ পাখিগুলোর লেজ আগুনরঙ ধারন করে আর বেশ লম্বা হয়ে ওঠে। Green‑tailed Sunbird (Aethopyga nipalensis) সবুজ-লেজ মৌটুসীঃ বাংলাদেশের পাখির তালিকায় এই বিরল মৌটুসীটিও রয়েছে। গত কয়েক দশকে এর দেখা পাওয়া যাবার খবর নেই আমার কাছে। দেশে এখনো দেখা পাইনি। Mrs. Gould’s Sunbird (Aethopyga gouldiae) বেগম গুল্ডের মৌটুসীঃ অনিন্দ্য সুন্দর এই মৌটুসীটিও আমাদের দেশে বেশ বিরল। তবে প্রতিবছর শীতে এক-দুবার করে দেখা দেয়। সাধারনত সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানের মান্দার ফুলে মার্চ মাসে এর দেখা মেলে। যারা একে দেখেছেন তারা ভাগ্যবান, কারন আমার মত লোকজন এর বেশ কয়েকবার চেষ্টা করেও এর দেখা পাইনি এখনো। এদেশে এর প্রথম দেখা পাওয়া গেছিলো যদিও কয়েক দশক আগে রাজধানী ঢাকার রমনা পার্কের এক ফুলগাছে। এখনো দেখা পাইনি। Crimson Sunbird (Aethopyga siparaja) সিঁদুরে মৌটুসীঃ খুব সুন্দর এই মৌটুসীটির পুরুষ পাখিটির মাথা ও পিঠ সিঁদুরের মত গাড় লালচে হয়। প্রজনন মৌসুমে খুব সুন্দর লাগে। একে দেশের দক্ষিণ ও উত্তরের বেশ কিছু জেলায় বসতবাড়ির আশেপাশে এবং দেশের সকল বনে পাওয়া যায়। মাকড়মার Little Spiderhunter (Arachnothera longirostra) ছোট মাকড়মারঃ মৌটুসীর চেয়ে সামান্য বড় ও লম্বা ঠোটের অধিকারী এই পাখিটি খুব সুন্দর। জলপাই সবুজ রঙ আর হলদেটে পেটের এই পাখির আরেক নাম মোচাটুনি। একে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন জেলায় এবং সারাদেশের পত্রঝরা বন বাদে সকল বনে পাওয়া যায়। এরা বেশ ডাকাডাকি করতে ওস্তাদ, সহজেই এদের উপস্থিতি বুঝতে পারা যায়। ভোর বেলায় কলা গাছের মোচায় এর দেখা পাওয়া ও ছবি তোলা সহজ। হবিগঞ্জের সাতছড়ি বনে এর প্রথম ছবি তুলেছিলাম। Streaked Spiderhunter (Arachnothera magna) ডোরা মাকড়মারঃ আকৃতিতে সামান্য বড় গাড় সবুজ রঙ এর এই পাখিটির সারাগায়ে দাগ-দাগ তাই এর এমন নাম। একে মূলত চট্বগ্রাম বিভাগের বনাঞ্চলে পাওয়া যায়, সিলেট বিভাগের কিছু বনেও মাঝেমধ্যে এর দেখা মেলে। চট্বগ্রামের হাজারিখিল বনে একে একবারই দেখেছিলাম।

বাংলাদেশের মাকড়মার ও মৌটুসী Read More »

বাংলাদেশের ফুলঝুরী

বাংলাদেশে মোট ০৮ প্রজাতির ফুলঝুরির দেখা মিলেছে মোটা-ঠোট ফুলঝুরী Thick-billed Flowerpecker Dicaeum agile আমাদের দেশের শীতের পরিযায়ী এই প্রজাতির ফুলঝুরিটি বেশ দুর্লভ। সিলেট ও চট্রগ্রামের বনে গরমকালে ও শীতের শুরুতে সাধারনত এর দেখা মেলে। এর ঠোট মোটা এবং চোখ লালচে। এখনো এর দেখা পাইনি। বিশ্বে ন্যুনতম বিপদগ্রস্থ এদেশে কমই দেখা মেলে এখনো দেখা পাইনি হলদে-তলা ফুলঝুরী Yellow-vented Flowerpecker Dicaeum chrysorrheum আমাদের দেশের আবাসিক পাখি হলুদ রঙের এই ফুলঝুরি পাখিটি কেও বাংলাদেশের পুর্বাঞ্চলের বনগুলোতে পাওয়া যায়। এর দেহের উপরিভাগ ও তলা এলাকা গাড় হলুদ হয় এবং সাদা বুকে লম্বা ডোরা দাগ থাকে। এছাড়া এর চোখগুলো গাড় লাল। মৌলভিবাজারের এক বনে একে পরিস্কারভাবে দেখেছি তবে ভালো ছবি নিতে পারিনি।  বিশ্বে ন্যুনতম বিপদগ্রস্থ এদেশে মাঝেমাঝে দেখা মেলে এখনো দেখা পাইনি হলদে-পেট ফুলঝুরী Yellow-bellied Flowerpecker Dicaeum melanozanthum আমাদের দেশের শীতের পরিযায়ী বাংলাদেশে এই প্রজাতির ফুলঝুরিটি বেশ বিরল, সম্ভবত পরিযায়ী। দেশে কয়েকবার দেখা পাওয়া গেছে চট্বগ্রাম বিভাগের গহীন বনে, সাম্প্রতিক সময়ে কোন খবর নেই। প্রথম পাওয়া গেছিলো সম্ভবত বান্দরবনের সাঙ্গু-মাতামুহুরী বন থেকে এক দশকেরও বেশি আগে। বিশ্বে ন্যুনতম বিপদগ্রস্থ এদেশে খুব কম দেখা মেলে এখনো দেখা পাইনি কমলা-পেট ফুলঝুরী Orange-bellied Flowerpecker Dicaeum trigonostigma আমাদের দেশের আবাসিক পাখি গাড় কমলা রঙ এর পেটবিশিষ্ঠ এই পাখিটিকে বাংলাদেশে সুন্দরবনে সবচেয়ে সহজে দেখা মেলে। এছাড়া চট্বগ্রাম বিভাগের বনাঞ্চলে মাঝেমধ্যে দেখা যায়। এর দেখা পেয়েছিলাম সুন্দরবন থেকে প্রথম।  বিশ্বে ন্যুনতম বিপদগ্রস্থ এদেশে মাঝেমাঝে দেখা মেলে কমলা-পেট ফুলঝুরি, সুন্দরবন মেটে-ঠোট ফুলঝুরী Pale-billed Flowerpecker Dicaeum erythrorhynchos আমাদের দেশের আবাসিক পাখি বাংলাদেশের সর্বত্র পাওয়া যাওয়া এই পাখিটির খ্যাতি বাংলাদেশের সবচেয়ে ছোট পাখি হিসেবে। এর প্রথম ছবি তুলি ঢাকার সাভার থেকে। বিশ্বে ন্যুনতম বিপদগ্রস্থ এদেশে সহজে দেখা মেলে মেটে-ঠোট ফুলঝুরি, সাতক্ষীরা পাখিটির ডাক শুনুন নিরল ফুলঝুরী Plain Flowerpecker Dicaeum minullum আমাদের দেশের আবাসিক পাখি কালচে ঠোটবিশিষ্ঠ এই পাখিটিকে মূলত চট্বগ্রামের পাহাড়ি বনাঞ্চলে দেখা যায় এবং সাম্প্রতিক সময়ে শেরপুরের গারো পাহাড়ে বেশ কয়েকবার দেখা গেছে। এছাড়া পঞ্চগড় জেলার সীমান্ত এলাকায় দাতরাঙা গাছেও কয়েকবার দেখা গেছে। এখনো দেখা পাইনি। বিশ্বে ন্যুনতম বিপদগ্রস্থ এদেশে মাঝেমাঝে দেখা মেলে এখনো দেখা পাইনি সিঁদুরে-পিঠ ফুলঝুরী Scarlet-backed Flowerpecker Dicaeum cruentatum আমাদের দেশের আবাসিক পাখি অত্যন্ত সুন্দর এই পাখিটির প্রথম ছবি তুলি সাতক্ষীরা জেলার কাছে সুন্দরবন থেকে। কালো ডানার পাখিটির পুরো পিঠ ও মাথার উপরিভাগ গাড় লাল রঙ এর হয় সেখান থেকেই এর এমন নাম। স্ত্রী পাখি দেখতে আলাদা। একে সারাদেশের বনাঞ্চল ও ঘন গাছপালা সমৃদ্ধ এলাকায় বেশ সহজেই পাওয়া যায়। বিশ্বে ন্যুনতম বিপদগ্রস্থ এদেশে সহজে দেখা মেলে সিঁদুরে-পিঠ ফুলঝুরী, খুলনা পাখিটির ডাক শুনুন আগুন-বুক ফুলঝুরী Fire-breasted Flowerpecker Dicaeum ignipectus আমাদের দেশের শীতের পরিযায়ী এই বিরল ফুলঝুরিটিকে আমাদের দেশে মাত্র হাতেগোনা কয়েকবার দেখা গেছে। সিলেট বিভাগের বন থেকে এর প্রয়াত তানিয়া খান ছবি তুলেছিলেন এর, এছাড়া চট্বগ্রামের উচু পাহাড়ি বনে দেখা পাওয়া গেছে এর। বিশ্বে ন্যুনতম বিপদগ্রস্থ এদেশে খুব কম দেখা মেলে এখনো দেখা পাইনি

বাংলাদেশের ফুলঝুরী Read More »

Scroll to Top